অবার্থার টেকনোলজিসকে ২১৮ কোটি টাকা দিচ্ছে ইসি
১০ অক্টোবর ২০১৮ ২২:৫৬
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: নির্ধারিত সময়ে স্মার্টকার্ড সরবরাহ করতে না পারায় ক্ষতিপূরণ বাবদ ফ্রান্সের অবার্থার টেকনোলজিসের কাছ থেকে ৩৫০ কোটি টাকা আদায় করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতবছর বিদেশি এই আইটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে উল্লেখিত টাকা আদায় করেছিল কমিশন। কিন্তু এবার অবার্থার টেকনোলজিসকে ২৬ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ২১৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা (১ ডলার সমান ৮৪ টাকা) পরিশোধ করবে ইসি। অবার্থার ইসির কাছে ব্যাংক কার্ডসহ বিভিন্ন উপকরণ বাবদ এই টাকা আদায় করছে।
বুধবার (১০ অক্টোবর) ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে সঙ্গে নিয়ে অবার্থার দিনভর ইসির সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে এক পর্যায়ে সমঝোতা হয় ইসি ফ্রান্সের কোম্পানিকে ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করবে। বৈঠকে অবার্থারের প্রতিনিধি দল ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাসহ উভয়পক্ষের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।
ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মুখলেসুর রহমান সারাবাংলাকে বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ফ্রান্সের এই আইটি কোম্পানিটি ইসির কাছে ৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দাবি করে। কিন্তু আমরা আলোচনা করে তা কমিয়ে ২৬ মিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। এই টাকাটা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করবো।’
ইসি সূত্র জানায়, আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংক সরে যাওয়ায় পুরো টাকাই এখন বাংলাদেশ সরকারকে পরিশোধ করতে হবে। নাগরিকদের মাঝে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড সবরবাহ করতে ২০১৫ সালে ফরাসি কোম্পানি অবার্থার টেকনোলজির সঙ্গে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার চুক্তি করে কমিশন। সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছরের জুনে।
নির্ধারিত সময়ে স্মার্টকার্ড তৈরির কাজ শেষ করতে না পারাসহ নানা অভিযোগের মধ্যে নির্বাচন কমিশন এ চুক্তি আর নবায়ন করেনি। সে অবস্থায় গত বছরের আগস্ট থেকে নিজ উদ্যোগে স্মার্টকার্ড উৎপাদনে যায় ইসি। তবে চুক্তির শর্তপূরণ করতে না পারায় অবার্থার পক্ষ থেকে দেওয়া ব্যাংক গ্যারান্টির ১৩৯ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, অবার্থর পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে পাওনা হিসেবে ৩২ মিলিয়ন ডলার দাবি করা হয়। এ সময় কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানটি চুক্তি অনুযায়ী যথাযথভাবে কাজ করতে পারেনি বলে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়। পাশাপাশি তাদের দেওয়া কার্ড নিয়েও বিভিন্ন অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। পরে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের মধ্যস্থতায় ২৬ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। কমিশনও বিষয়টি মেনে নিলে এর সম্মানজনক সমাধান মেলে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে এই অর্থ পরিশোধ করা হবে।
ইসি সূত্র জানায়, ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকেব ব্যাংক পেমেন্ট গ্যারান্টি রাখা হয়েছিল ৫৬ মিলিয়ন। সেই পেমেন্ট কোম্পানিটি ৪১ মিলিয়ন ডলার ক্লেইম করে। পরে তা কমে ৩২ মিলিয়ন ডলার দাবি করে। কিন্তু ইসির পক্ষ থেকে দর কষাকষি করে ও তাদের ব্যর্থতা দেখিয়ে তা ২৬ মিলিয়ন ডলারে সমঝোতায় হয়। এতে ১৩৩ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে ইসি’র দাবি। এছাড়াও অবার্থার কাছ থেকে আদায় করা ক্ষতিপূরণসহ ২৫৩ কোটি টাকা সরাসরি ইসির সাশ্রয় হয়েছে।
সারাবাংলা/জিএস/এমও