কক্সবাজারের সোলার পার্ক বিদ্যুৎ খাতে বড় অর্জন
১১ অক্টোবর ২০১৮ ১১:১৭
।। ওমর ফারুক হিরু, কক্সবাজার ।।
কক্সবাজারের টেকনাফে দেশের প্রথমবারের মত চালু হয়েছে সোলার পার্ক। এই সোলার পার্ক থেকে দৈনিক উৎপাদিত হচ্ছে ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। যা যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।
সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের নাফ নদীর পাড়ে হ্নীলার আলুখালীতে অবস্থিত দেশের প্রথম সোলার পার্কটি। সরেজমিনে দেখা গেল, ১১৬ একর জায়গাজুড়ে ৮৭ হাজার প্যানেল আর ৩৪১ টি সোলার টেবিলের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে সোলার পার্কটি। ওই সোলার পার্ক থেকে প্রতিদিন উৎপাদিত হচ্ছে ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
প্রায় তিনশো কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সোলার পার্কটি আঠারো মাস আগে থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে।
এই সোলার পার্ক থেকে চাহিদা অনুযায়ী উখিয়া টেকনাফের গ্রাহকদের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে বিদ্যুৎ।
কক্সবাজার সিভিল সোসাইটি ফোরামের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী জানান, ‘বিএনপি সরকারের আমলে বিদ্যুতের যে ঘাটতি ছিল তা এখন আর নেই বললেই চলে। সারা বিশ্ব এখন সৌর প্যানেলকে গুরুত্বে দিচ্ছে। আর বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছি। আর এই সৌর প্যানেলের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিনত হওয়ার আরো একটি অংশ পূর্ণ হতে যাচ্ছে।’
কক্সবাজারের সিনিয়র সাংবাদিক তোফায়েল আহম্মেদ জানান, সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পটি সবচেয়ে বেশি কাজে দেবে সীমান্তবর্তী এলাকা উখিয়া এবং টেকনাফে বাড়তি সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষন পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য একমাত্র পরিবেশ বান্ধব পক্রিয়া হচ্ছে সৌর তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প। টেকনাফে অবস্থিত এই সৌর তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশ উপকৃত হচ্ছে। এই প্রকল্প যদি দেশের অন্যান্যা স্থানেও তৈরি করা যায় তাহলে দেশের যেমন উন্নয়ন যেমন হবে তেমনি পরিবেশও সুরক্ষিত থাকবে।
দেশে এই প্রথম সোলার প্যানেল এর মাধ্যমে সরাসরি সূর্য থেকে নেওয়া শক্তির মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। আর এই বিদ্যুৎ যাচ্ছে গ্রাহকের ঘরে ঘরে। এভাবে আরো সোলার পার্ক নির্মিত হলে দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি থাকবেনা বলে জানান, সহকারী প্রকৌশলী রিয়াজুল হক।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন জানান, টেকনাফে যে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি উদাহরণ হয়ে থাকল। বর্তমান সরকার যেদিকে যেতে চাইছে সেদিকেই যাচ্ছে টেকনাফের এই সৌর বিদ্যুৎ পার্কটি।
তিনি আরো জানান, কক্সবাজারে যেসব অকৃষি জায়গা রয়েছে তা চিহ্নিত করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে আগ্রহী উদ্যোক্তাদের ব্যবহারে সহযোগিতাও দেওয়া হবে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টেকনাফ সোলার টেক এনার্জি লিমিটেডের নির্মিত এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই খাতটিতে একদিকে যেমন উদ্যোক্তা তৈরি হবে অন্যদিকে সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে দেশের বড় একটি বিদ্যুতের অংশ তৈরি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সারাবাংলা/এসএমএন