ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রথম মামলা প্রশ্নফাঁস চক্রের বিরুদ্ধে
১১ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:০৭
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা : সদ্য পাস হওয়া আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
মোল্যা নজরুল বলেন বলেন, এই প্রশ্ন ফাঁসকারী প্রতারণা চক্রের মাস্টারমাইন্ড কাউসার গাজীকে গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এসে তিনি জানান, প্রশ্ন ফাঁস করতে ব্যর্থ হয়ে নিজেদের মতো করে প্রশ্নপত্র তৈরি করতেন তারা। এরপর সেগুলো ফেসবুকে বিভিন্ন ফেইক আইডির মাধ্যমে শতভাগ কমনের নিশ্চয়তা দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করতেন।
কাউসার গাজীকে এ কাজে সহযোগিতা করতেন তার বন্ধু সোহেল মিয়া। তিনি অন্যের জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে ভুয়া বিকাশ একাউন্ট খোলার মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতেন।
দীর্ঘদিন ধরেই এই চক্রটি প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজ করে আসছিলেন বলেও জানান বিশেষ পুলিশ সুপার। কিন্তু এইবার প্রশাসনের তৎপরতার কারণে তারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে পারেনি। তাই ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরি করে ১০টি ফেইক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এর মাধ্যমে মেডিকেলের প্রশ্ন পাওয়া যাচ্ছে এমন প্রচারণা চালায়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, বিভিন্ন সাজেশন বই, বিগত বছরগুলোর প্রশ্নপত্র একত্রে করে তারা এই ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরি করত।
পুলিশ সুপার বলেন, বুধবার (১০ অক্টোবর) ৭ টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ি এলাকার কাজলা ও দনিয়ায় অভিযান চালিয়ে দুটি মোবাইল ও একটি বিকাশ রেজিস্টার খাতাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। একই দিন রাত ৯ টার দিকে বাড্ডা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে আলিফনগর এলাকা থেকে আরো তিনজনকে তিনটি মোবাইল ও দুটি ল্যাপটপসহ গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পিরোজপুর ভান্ডারিয়া এলাকার কাউসার গাজী (১৯), চাঁদপুর মতলবের সোহেল মিয়া (২১), মাদারীপুর কালকিনির তারিকুল ইসলাম শোভন (১৯), নওগাঁ পত্নীতলার রুবাইয়াত তানভির (আদিত্য), টাঙ্গাইল কালিহাতীর মাসুদুর রহমান ইমন।
এসময় এদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল, দুইটি ল্যাপটপ ও বিকাশের রেজিস্টার খাতা উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর বিভিন্ন ধারায় মামলা দেয়া হয়।
মোল্যা নজরুল বলেন, ‘এই মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। আমরা আশা করছি আরও বেশ কিছু প্রতারক চক্রের সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে পারব। আগামীকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা। সেখানেও যদি কোনো চক্র প্রশ্ন ফাঁস করতে চাই তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সারাবাংলা/এসএইচ/এসএমএন