ভারি বর্ষণ-ভূমিধসের শঙ্কা, পাহাড় থেকে সরানো হলো ৫০০০ পরিবার
১২ অক্টোবর ২০১৮ ১৬:০৯
।। সারাবাংলা ডেস্ক।।
ঢাকা: উড়িষ্যা ও এর আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সাত বিভাগে ভারি বর্ষণ হতে পারে বলছে আবহাওয়া অধিদফতর। খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি (৪৪ থেকে ৮৮ মি.মি.) থেকে অতিভারি (৮৯ মি.মি. এর বেশি) বর্ষণ হতে পারে।
শুক্রবার (১২ অক্টোবর) আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানান, ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণের প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন পাহাড় থেকে ৫ হাজার পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান জানিয়েছেন, এখনো যারা পাহাড়ে রয়েছেন তাদের বিকেলে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে কাজ শুরু হবে।
সনপটিক অবস্থায় দেখা যায়, আজ (শুক্রবার) সকাল ৬টায় ভারতের উড়িষ্যা এবং এর আশেপাশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছিল তিতলি। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে দুর্বল হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান খান জানান, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালণশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রালারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর ভূমি ধসের সতর্কতা বাণী দেওয়ার পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহাড় ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে মাইকিং করা হয়। জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামের জন্য ৪৭৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। অনেকে স্বেচ্ছায় আশ্রয় কেন্দ্রে গেছেন। আবার কেউ কেউ নিকট আত্মীয়দের বাসায় গিয়ে উঠেছেন।
শুক্রবার (১২ অক্টোবর) বেলা ১১টা থেকে দুপুরে নগরীর লালখানবাজার এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে কাজ শুরু হয়। নগরীর লালখান বাজার, মতি ঝর্না পাহাড়, পোড়া কালো বাজার পাহাড়, বাটালি পাহাড়, জিলাপি পাহাড়, একে খান পাহাড়ে মাইকিং করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রামের যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো রয়েছে, যেখানে বৃষ্টিপাত হলে পাহাড়ধসের আশঙ্কা থাকে, সেখানে ঝুঁকি এবং প্রাণহানি কমানোর উদ্দেশ্যে আমরা মূলত আজকের এই অভিযান পরিচালনা করছি। এখানে যারা অবৈধভাবে এবং ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে, তাদের নিয়ে আমরা এখানকার যে আশ্রয়কেন্দ্র আছে, সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
তাহমিলুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম জেলার জন্য ৪৭৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। সকাল থেকে ৫ হাজার পরিবারকে পাহাড় থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অনেকে স্বেচ্ছায় আশ্রয় কেন্দ্রে চলে গেছেন। আবার অনেকে নিকট আত্মীয়দের বাসায় গিয়ে উঠেছেন। বিকেল আবারও অভিযান চালানো হবে।
ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে ভারতে এখন পর্যন্ত আটজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
সারাবাংলা/আরডি/এসএইচ/এমএইচ
আরও পড়ুন
দুর্বল হয়ে পড়েছে তিতলি, শুরু হয়েছে নৌ চলাচল
তিতলিতে বিধ্বস্ত শাহপরীর দ্বীপের অর্ধশত বসতঘর
ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাব: সারাদেশের নৌ চলাচল বন্ধ
সাইক্লোনের তীব্রতায় ধেয়ে আসছে তিতলি
ভারতে তিতলির আঘাতে ৮ জনের মৃত্যু