Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এসডিজি অর্জনে বছরে ডিম খেতে হবে ১০৪ টি


১২ অক্টোবর ২০১৮ ১৬:৪৯

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: ডিম খাওয়ার কোনো বয়স নেই। প্রতিটি মানুষকে গড়ে প্রতিদিন অন্তত একটি ডিম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিৎ। বাংলাদেশের মানুষ বছরে গড়ে মাত্র ৫৫ টি ডিম খায়। অথচ এসডিজি অর্জনে দরকার মাথাপিছু ১০৪ টি ডিম।

শুক্রবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশ্বডিম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) যৌথভাবে এ আলোচনার আয়োজন করে। এর আগে, দিবসটি উপলক্ষে সকালে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালিটি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে কদম ফোয়ারা ঘুরে পল্টন মোড় হয়ে সিরডাপ মিলনায়তনের সামনে এসে শেষ হয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা: হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বলেন, ডিম খাওয়ার কোনো বয়স নেই। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই ডিম খেতে পারেন। স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে বেশি করে ডিম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে দেশের অপুষ্টির চিত্রও আমূল পাল্টে যাবে। তবে, নকল ডিম নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। দেশে নকল ডিম নেই। বাণিজ্যিকভাবে নকল ডিম উৎপাদন সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।

হীরেশ বলেন, প্রান্তিক খামারিদের জন্য সিঙ্গেল ডিজিটে ক্ষুদ্র ঋণ এবং কৃষি রেটে বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা ভাবছে সরকার। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ডিম উৎপাদনে স্বয়ং সম্পুর্ণ হবে বলেও আশার কথা জানান ডাঃ হীরেশ।

বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাচ্চারা যেন সপ্তাহে অন্তত দু’টি ডিম খায় তা নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। ডিমের ইতিবাচক প্রচারণায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মসিউর আরও বলেন, গত কয়েক বছরে ডিমের দাম না পেয়ে অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া ‘এইচ৯এন১’ভাইরাসের সংক্রমণে ডিমের উৎপাদনও কমে গেছে। দেশে ডিমের উৎপাদন কমেছে অন্তত ৩০ শতাংশ। তবে উদ্যোক্তারা উৎপাদন বাড়াতে নিজেরা উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারকে তাদের পাশে থাকতে হবে।

ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, ডিমের চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। হাউসহোল্ড ইনকাম এন্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১০-২০১৬ মেয়াদে ডিমের মাথাপিছু ভোগ ৭.২ গ্রাম থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩.৫৮ গ্রাম। এই মেয়াদে গরুর মাংসের চাহিদা ১০ শতাংশ, মাছের ২৬ শতাংশ বাড়লেও ডিমের বেড়েছে ৮৮ শতাংশ।

কী-নোট স্পীকার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী এবং বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন নাহার নাহিদ বলেন, ডিম নিয়ে আমাদের সমাজে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, ডিম হার্টের জন্য উপকারি। ডিম খেয়ে ওজন কমানো যায়। ব্রেন ডেভেলপমেন্ট এবং হাড় মজবুত করতে ডিম অত্যন্ত কার্যকর। ডায়াবেটিসের রোগিরাও ডিম খেতে পারবেন। অনেকে ডিমের কুসুম না খেয়ে সাদা অংশ খান এতে তারা ডিমের পরিপূর্ণ পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

আলোচনায় বক্তারা আরও বলেন, খেটে খাওয়া ও মেহনতী মানুষেরা দিনে ২টি ডিম খেতে পারবে। তবে কায়িক পরিশ্রম করে না এমন সাধারণ মানুষের একটি করে ডিম খাওয়া উচিত। আর শিশু জন্মের ৫ বছর পর্যন্ত তার ব্রেন ডেভেলপ করে। এই সময়টিতে মা ও শিশু উভয়কে ডিম খেতে হবে। গর্ভবতী নারীদেরও বেশি হারে ডিম খাওয়া উচিত।

ডিম দিবস উপলক্ষে ঢাকায় প্রেসক্লাব, কারওয়ান বাজার, মিরপুর ও ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর এলাকায় শ্রমজীবি ও সাধারণ মানুষের মাঝে বিনামূল্যে ৩০ হাজার সিদ্ধ ডিম বিতরণ করা হয়েছে। এস.ও.এস শিশু পল্লী, স্যার সলিমুল্লাহ এতিমখানা, ঢাকা অরফানেজ সোসাইটি’র শিশুদের জন্য এবং প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সদস্যদের জন্য বিনামূল্যে ১৫ হাজার ডিম দেয়া হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে দেশের ৬৪ জেলায় এক লাখ পোষ্টার লাগানো হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন বাজারে ডিম বিক্রেতাদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে টি-শার্ট।

ডিম দিবসে গত বছর বিনামূল্যে কাঁচা ডিম বিতরণ করলেও আয়োজকরা এবার তা থেকে সরে এসে সিদ্ধ ডিম বিতরণ করছে। ২০১৭ সালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বিনামূল্যে ডিম বিরতরণ নিয়ে হুলস্থুল লেগে যায়। অনেকেই ফ্রি ডিম পেতে ভোর থেকেই লাইন ধরেছিল। মানুষের প্রচন্ড ভিড়ে কেআইবির সামনের রাস্তাটিও প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ঘোষিত সময়ে ডিম বিতরণ শুরুর আগেই প্রায় ভেস্তে যায় ওই আয়োজন। সমালোচনা উঠে ডিম দিবসের আলোচনা নিয়েও। তবে আয়োজকরা এবার ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বিতরণ করেছে সিদ্ধ ডিম। ফলে, এবার কোনো নেতিবাচক হুলস্থুলও দেখা যায়নি।

সারাবাংলা/ইএইচটি/জেএএম


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

এখনো সালমানকে মিস করেন মৌসুমী
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৩

সম্পর্কিত খবর