সেনাপ্রধানকে নিয়ে জাফরুল্লাহর বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: সেনাসদর
১২ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:৫৪
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভির টকশো’তে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বিষয়ে যে তথ্য দিয়েছেন তাকে ‘দায়িত্বহীন, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করেছে সেনাসদর।
২১ আগস্ট গ্রেনেড মামলার রায়ের পর ১০ অক্টোবর রাতে সময় টিভির আলোচনা অনুষ্ঠান ‘সম্পাদকীয়’তে উপস্থিত ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
ওই আলোচনা অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জেনারেল আজিজ আহমেদ যখন চট্টগ্রামের জিওসি ছিলেন, সেখান থেকে সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ চুরি যাওয়ার ঘটনায় তার কোর্ট মার্শাল হয়েছিল।
ওই টকশো প্রচারের পর সময় টেলিভিশন কর্তৃপক্ষের কাছে সেনাসদরের পক্ষ থেকে প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়।
সেনাসদর থেকে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ চাকরি জীবনে কখনোই চট্টগ্রামের জিওসি বা কমান্ড্যান্ট হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন না। তিনি সেপ্টেম্বর ২০১০ হতে জুন ২০১১ পর্যন্ত কুমিল্লায় ৩৩ আর্টিলারি ব্রিগেডের কমান্ডার ছিলেন। জুন ২০১১ হতে মে ২০১২ পর্যন্ত ঢাকার মিরপুরে ৬ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার এবং মে ২০১২ হতে ডিসেম্বর ২০১২ পর্যন্ত কুমিল্লায় ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
‘বর্ণিত সময়ে চট্টগ্রাম বা কুমিল্লা সেনানিবাসে কোনো সমরাস্ত্র বা গোলাবারুদ চুরি বা হারানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ তার দীর্ঘ বর্ণাঢ্য সামরিক চাকরি জীবনে কখনোই কোর্ট মার্শালের সম্মুখীন হননি।’
সেনাসদরের প্রতিবাদ লিপিতে জাফরুল্লাহর বক্তব্যকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ হিসেবে বর্ণনা করে বলা হয়, ওই বক্তব্য ‘সেনাবাহিনী প্রধানসহ সেনাবাহিনীর মতো রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে জনসম্মুখে হেয় করার হীন অপচেষ্টা মর্মে স্পষ্টত প্রতীয়মান হয়।’
ওই টকশোতে অতিথি হিসেবে সেদিন উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ উল আলম লেনিন ও দৈনিক আমাদের নতুন সময় সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান।
ডা. জাফরুল্লার বক্তব্যের বিষয়ে নূহ উল আলম লেনিন সময় টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য না জেনে এ ধরনের মন্তব্য করা গর্হিত অপরাধ বলে আমি মনে করি। এতে কেবল সেনাবাহিনীরই নয়, আমাদের জাতীয় ভাবমূর্তি নষ্ট হয় বলে আমি মনে করি।’
দৈনিক আমাদের নতুন সময়-এর সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, ‘উনি কোনো মন্তব্য না, উনি একটা তথ্য দিয়েছেন। ভুল তথ্যের উপরে করা যে কোনো বিশ্লেষণ ভুল হতে বাধ্য। এটা শুধু অনভিপ্রেত না, এটা একটা অফেন্স। না জেনে কোনো তথ্য দেওয়া এটা একটা ক্রিমিনাল অফেন্সের পর্যায়ে পড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দায়দায়িত্ব ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকেই নিতে হবে।’
সারাবাংলা/একে
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র টকশো ডা. জাফরুল্লাহ সময় টেলিভিশন সেনাপ্রধান