দুর্যোগের ঝুঁকি কমানোকে অগ্রাধিকার দিয়েছে সরকার: ত্রাণমন্ত্রী
১৩ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:৪৮
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: গত ১০ বছরে সরকার দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের পরিবর্তে দুর্যোগের ঝুঁকি কমানোকে অগ্রাধিকার দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
তিনি বলেন, আজকের বিশ্ব দুর্যোগে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার কথা ভাবছে। অথচ বাংলাদেশ ১০ বছর আগে থেকেই দুর্যোগে মানুষের জীবন ও সহায় সম্পদের ক্ষতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করে আসছে। এর ফলে দুর্যোগে মানুষের জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমানভাবে কমেছে।
শনিবার (১৩ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০১৮’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দুর্যোগের ঝুঁকি কমানোর ওপরই সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার সাফল্য নির্ভর করে। এ উপলব্ধি থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে প্রথম দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচি গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং সাড়াদানে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে। এর ফলে মানুষের মৃত্যুহার ও সহায় সম্পদের ক্ষতি অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
এ সময় তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ১০ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। একই মাত্রার ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’য় মাত্র ছয় জন মারা যায়। সরকারের পরিকল্পণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার যেকোনো দুর্যোগে মানুষের মৃত্যুর হার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে চায়।
দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস প্রসঙ্গে মায়া বলেন, প্রত্যেকটি দুর্যোগ মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ, অবকাঠামো নির্মাণ, প্রয়োজনীয় উদ্ধার সরঞ্জামাদি সংগ্রহ, স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে বাংলাদেশ একটি সক্ষম ও সহনশীল জাতিতে পরিণত হয়েছে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ বড় বড় ছয়টি দুর্যোগ অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বিবেচনা করে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে দুর্যোগ মোকাবিলায় রোল মডেল বলা হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এসময় উপস্থিত সবাইকে যেকোনো দুর্যোগে বিনা পয়সায় ১০৯০ নম্বরে ডায়াল করে দুর্যোগের পূর্বাভাস আবহাওয়া বার্তা জানার অনুরোধ জানান মন্ত্রী।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ সম্ভু, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক সৈয়দ এম এ হাশিম, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ খান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এজাজুল বার চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. মাহবুবা নাসরীনসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশ প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে— ‘কমাতে হলে সম্পদের ক্ষতি, বাড়াতে হবে দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি’। দিবসটি উপলক্ষ্যে দেশব্যাপী আলোচনা সভা, র্যালি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পোস্টার প্রদর্শন ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন দুর্যোগে সাহসিকতার সঙ্গে মানুষের জানমাল রক্ষায় ভূমিকা রাখায় এ বছর সিপিপির ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককে জাতীয়ভাবে পুরস্কৃত করা হয়।
সারাবাংলা/এইচএ/টিআর
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া