দুর্গা পূজা শুরু, মূলপর্ব মধ্যরাতে
১৫ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:২১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর আরাধনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয়ানুষ্ঠান শারদীয়া দুর্গাপূজা। সোমবার ভোরে ষষ্ঠী পূজা দিয়ে এ পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। রাজধানীর মণ্ডপগুলোয় পূজারীদের আনাগোনা যেমন শুরু হয়েছে তেমনি হিন্দু প্রধান এলাকাগুলোয় তৈরি হয়েছে পুজোর আবহ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ষষ্ঠীর মাধ্যমে পুজোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও সোমবার দিবাগত রাত থেকেই খুলে দেওয়া হবে প্রধান মণ্ডপগুলো।
সোমবার (১৫ অক্টোবর) সকাল থেকে রাজধানীর বৃহত্তর বাড্ডা এলাকার বেশ ক’টি মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, পূজার সব আয়োজন শেষ। এখন কেবল মূল আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষা। মণ্ডপ অভ্যন্তরে সেবায়েতদের ব্যস্ত সময় কাটছে। মন্দিরগুলোর প্রবেশদ্বারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি আশপাশের এলাকা সুসজ্জিত করা হয়েছে। প্রধান সড়কের পাশ ঘেঁষে বানানো হয়েছে তোরণ। সেখান থেকে মন্দির অবধি লাইটিং করা হয়েছে।
বাড্ডা এলাকার সবচেয়ে বড় মন্দির মেরুল নিমতলার শ্রী শ্রী মহাদেব আশ্রম ও কালী মন্দির। সেখানকার সেবায়েত বাবু নিত্যানন্দ গোস্বামী বলেন, ‘ষষ্ঠী পূজায় দেবীর আরাধনায় মন্দির ও মণ্ডপে যাচ্ছেন ভক্তরা। সন্ধ্যায় হবে দেবীর আমন্ত্রণ-অধিবাস।’
পূজা উদযাপন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দাস জানান, সোমবার সকালে ষষ্ঠী তিথিতে সারা দেশে মণ্ডপে মণ্ডপে বেলতলায় হয় বিহিতপূজা। উলুধ্বনি, শঙ্খনাদ, ঢাকের বোল, মাতৃবন্দনার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় সকালে। নানা উপচারে ডালা সাজিয়ে আসতে থাকেন ভক্তরা। অশুভ শক্তির বিনাশে ‘মঙ্গলময়ী’ দেবীর জাগরণে জগতে সুর শক্তি প্রতিষ্ঠার প্রার্থনা করেন ভক্তরা।
সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বীদের বিশ্বাস, দশভূজা দেবী দুর্গা অসুর বধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতি বছর শরতে, কৈলাস ধাম ছেড়ে কন্যারূপে আসেন মর্ত্যলোকে। ১৫ দিন কাটিয়ে আবার ফিরে যান কৈলাসে। দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার আগমনে উচ্ছ্বসিত ভক্তকুল।
এদিকে, যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কড়া নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে মন্দির ও মণ্ডপে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে থাকছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
আগামীকাল মঙ্গলবার মহাসপ্তমী, পরশু বুধবার মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা, বৃহস্পতিবার মহানবমী বিহিত পূজা এবং শুক্রবার বিজয়া দশমী ও দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পূজা যজ্ঞ।
এদিকে দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে নানা ধরণের সামাজিক সাংস্কৃতিক আয়োজনও হচ্ছে বেশ সাড়ম্বড়ে। প্রতিটি মণ্ডপে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা থেকে শুরু নানা রকম সৃষ্টিশীল অনুষ্ঠানের পাশাপাশি থাকছে ভক্তিমূলক গানের আয়োজন।
নিমতলা মণ্ডপ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দাস জানান, প্রতিবারের মতো এবারও তাদের মন্দিরে কীর্ত্তন গানের আয়োজন করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত মণ্ডপ প্রাঙ্গণের এ আয়োজনে ভারত থেকে আসা শিল্পীরা গান পরিবেশন করবেন বলে জানান তিনি।
সারাবাংলা/এমএস/এমও