Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘যে যার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে, সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি’


১৫ অক্টোবর ২০১৮ ২৩:০৯

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: প্রত্যেকেই যেন তার নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে, সম্মানের সঙ্গে পালন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতেই সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের দেশের সব ধর্মের মানুষের সমস্যাগুলো সমাধান করতে চেষ্টা করেছি। যখনই সরকারে এসেছি তখনই চেষ্টা করেছি। কারা সংখ্যায় বেশি, কারা কম— সেটা বড় কথা না। যে যার ধর্ম স্বাধীনভাবে, সুষ্ঠুভাবে, উৎসবের সঙ্গে, সম্মানের সঙ্গে পালন করবে— এই চেতনা নিয়েই বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি, আপনারা যেন আপানদের উৎসবটা সুন্দরভাবে পালন করতে পারেন। আমি চাই, এই দেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সব মানুষ সমানভাবে তার ধর্ম সুন্দরভাবে পালন করবে এবং বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে উঠবে।

সোমবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর লালবাগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। এর আগে টিকাটুলী রামকৃষ্ণ মিশনে শারদীয় দুর্গোৎসবে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন  করেন তিনি।

১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর সংঘাতময় পরিস্থিতি দেখতে পেয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই সময় বিভিন্ন সময়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত হানতে দেখেছি। তখন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ও আমাদের দলীয় নেতাকর্মীরাও রেহাই পেত না। এই ধরনের একটা পরিবেশ ছিল। অথচ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি, বাংলাদেশকে গড়ে তুলব। কিন্তু বাংলাদেশে সেই মূল্যবোধটাই হারিয়ে  গিয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করে সবাই মিলে একসঙ্গে বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা সরকার পরিচালনা করে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য, এই দেশে কোনো মানুষ দরিদ্র থাকবে না, ক্ষুধার্ত থাকবে না। কোনো মানুষ গৃহহারা থাকবে না। প্রতিটি মানুষ চিকিৎসা পাবে, শিক্ষা পাবে, সুন্দরভাবে বাঁচবে।’

ধর্ম যার যার, উৎসব সবার; প্রতিটি উৎসব সবাই এক হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উদযাপন করি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাঙালি, বাঙালি হিসেবে এই দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা চেষ্টা করেছি, আমাদের দেশের সব ধর্মের মানুষের সমস্যাগুলো সমাধান করতে। সমগ্র বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ যেন তার ধর্ম পালন করতে পারে। প্রতিটি ধর্মের মানুষদের জন্য আলাদা করে কল্যাণ ট্রাস্ট করে দিয়েছি এবং সেখানে আমরা সহযোগিতা করেছি। আমাদের লক্ষ্য যেন একটা সুন্দর পরিবেশ থাকে, সেই পরিবেশটা যেন রক্ষা হয়।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু আমরা নিজের চোখে মন্দির-মূর্তি ভাঙা দেখেছি, হিন্দু-খ্রিস্ট্রন-বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার দেখেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আমরা এই সংঘাত-হানাহানি জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবসময় রুখে দাঁড়িয়েছি এবং জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি।

শারদীয় দুর্গোৎসবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা সবাই সুন্দরভাবে ধর্ম পালন করুন। আর আপনারাও আর্শীবাদ করবেন, বাংলাদেশের মানুষ যেন সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করে। আমরা যেন এই দেশকে সবার সম্মিলতি চেষ্টায় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শৈলেন মজুমদার। এছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমসহ অন্যরা।

আরও পড়ুন-

ঢাকেশ্বরী মন্দিরকে দেড় বিঘা জমি দিলেন প্রধানমন্ত্রী

দুর্গা পূজা: সব মানুষের শান্তি কামনা রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর