সপ্তমী ছড়িয়েছে পূজার আসল গন্ধ
১৬ অক্টোবর ২০১৮ ১২:৫৯
।।সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: সপ্তমীতে পূজার আসল রূপের দেখা মিললো। মণ্ডপে মণ্ডপে পূজারীদের ভক্তিপূর্ণ পদচারণা। এর মাধ্যমে অশুভ শক্তিকে শোধন। বিশুদ্ধ পঞ্জিকামতে মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৮ টা ৫৮ মিনিটে শুরু হয় সপ্তমী। শুরুতেই দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ।
রাম কৃঞ্চ মঠ ও রামকৃঞ্চ মিশনের পরিচালক স্বামী ধ্রুবেশুন্দ জানান, ঈশ্বর সব কিছুর মাঝে রয়েছেন। প্রকৃতির বিভিন্ন সৃষ্টির মধ্য নয়টি গাছের ফুল, ফল, পাতা দিয়ে সব অশুদ্ধকে শোধন করে শুদ্ধ করে মাকে পূজা করা হবে।
সপ্তমীর শুরুতেই দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ। সপ্তমী তিথিতে দেবী দুর্গাকে নিখিল বিশ্ব সৃষ্টির জ্ঞানের অধিকারী হিসেবে অর্থাৎ সরস্বতী হিসেবে পূজা করা হয়। সপ্তমী পূজার কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও সকল পূজার অনুরুপ খাদ্য উপকরণ,পূজা উপকরণ,খাদ্য উৎসর্গ ও পোশাক পরিচ্ছেদের প্রয়োজন হয়। পূজার উপকরণ
সাজিয়ে সপ্তমী পূজার নির্ধারিত মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে সপ্তমী পূজা করা হয়। দুর্গা দেবীর ধ্যান মন্ত্রে ধ্যান করা হয়। দেবী দুর্গাসহ প্রতিমা সমূহের প্রাণ প্রতিষ্ঠা,চক্ষু দান প্রভৃতি করা হয়। সপ্তমী পূজায় নবপত্রিকা প্রতিষ্ঠা অন্যতম। এই নব পত্রিকা দ্বারা নয় জন দেব দেবীকে বুঝায়। যেমন- ১.কলা গাছ-দেবী ব্রাম্মণী, ২. কালা কচু-দেবী কালি, ৩. হলুদ গাছ- দেবী দূর্গা, ৪. জয়ন্তী লতা-দেবতা কার্তিক, ৫. বেল গাছ-ভগবান শিব, ৬. ডালিম গাছ-দেবতা রক্তদন্তিকা, ৭. মানকচু-দেবী চামুণ্ডা, ৮. ধান গাছ-দেবী লক্ষ্মী, ৯. অশোক গাছ-দেবতা শোকরাহিতা।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সেবায়েত বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী বলেন, ঈশ্বর সব কিছুর মাঝে রয়েছেন। প্রকৃতির বিভিন্ন সৃষ্টির মধ্য নয়টি গাছের ফুল, ফল, পাতা দিয়ে সব অশুদ্ধকে শোধন করে শুদ্ধ করে মাকে পূজা করা হবে।
এরপর কল্পনার মধ্য দিয়ে মাকে (দেবী) মনের আসনে বসানো হয়। বিধান অনুসারে অনুষ্ঠিত হবে বিহিত পূজা।
মহাসপ্তমী দিনে দুপুরে দুঃস্থদের মাঝে কাপড় বিতরণ করবে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে আরতি প্রতিযোগিতা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটি পরিষদ সভাপতি কাজল দেবনাথ বলেন, সকল কুচক্রী এবং অশুভ শক্তি বিনাশ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে যেন গড়ে তুলতে পারি এটাই আমাদের প্রার্থনা।
সোমবার সায়াংকালে দেবী বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শারদীয় দুর্গোৎসব। মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে সায়াংকালে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ষষ্ঠী।
আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। শুক্রবার দর্পন বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয়া দুর্গোৎসব।
এদিকে সপ্তমীতে সকাল থেকেই পূজা মন্ডপগুলোতে উৎসবমূখর পরিবেশ বিরাজ করে। ঢাক বাদ্য ও ধুপের গন্ধে হালকা শিশিরের সকালটা হয়ে উঠে শুভ্র-পবিত্র।
সারাবাংলা/এমএস/জেএএম