‘একজন নির্বাচন কমিশনারের বিরোধিতা কোনো ব্যাপার নয়’
১৬ অক্টোবর ২০১৮ ১৬:০৪
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের সভায় একজন নির্বাচন কমিশনারের ‘নোট অব ডিসেন্ট’ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘একজন নির্বাচন কমিশনারের বিরোধিতা কোনো ব্যাপার নয়। যে কেউ বিরোধিতা করতেই পারেন, এটি গণতন্ত্র। এটি অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র। একজনের বিরোধিতা করার অধিকার রয়েছে। এটি নিয়ে বেশি কিছু বলার অবকাশ নেই।’
এ জন্য নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন প্রয়োজন কি না জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ না যে একজন বিরোধিতা করলে মেজর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। নির্বাচন কমিশনে অধিকাংশরা একমত হলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। কোনো একজন বিরোধিতা করলে এর জন্য ইসি পুনর্গঠনের দরকার পড়বে না।’
মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) সকালে বনানীতে নির্মিত বিআরটিএ’র নতুন ভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ইসি মাহবুব তালুকদারের সভা বর্জন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সার্চ কমিটির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি যে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করেছিলেন; সেখানে মাহবুব তালুকদার বিএনপির মনোনীত ব্যক্তি হিসেবে নির্বাচন কমিশনে এসেছেন। এটি আমি শুধু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। তার সম্পর্কে কোনো বিরূপ মন্তব্য করতে চাই না।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যতদূর জানি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর যুক্তফ্রন্টকে সুকৌশলে বের করে দেওয়া হয়েছে। যুক্তফ্রন্ট এখানে থাকবে এটি বিএনপির জন্য অস্বস্তির বিষয় ছিল। কারণ বদুরুদ্দোজা চৌধুরী বিএনপির সময়ে রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তার সঙ্গে বিএনপির একটা অস্বস্তির বিষয় ছিল। কাজেই এটা তো রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে বাড়িতে আমন্ত্রণ করে ঘরের দরজা খোলা হয়নি। আবার যিনি আমন্ত্রণ করেছিলেন তিনিও বাসায় ছিলেন না। এরপরে বদরুদ্দোজা চৌধুরী ঐক্যের সঙ্গে কী করে থাকে?’
‘আমরা আগেও বলেছি, এ ধরনের ঐক্য সারভাইভাল সংকটে পড়বে। এটি একটি ভাঙনপ্রবণ ইউনিটি। এখানে তেলে আর পানিতে মেশানোর যে অপচেষ্টা সেটি অচিরেই ব্যর্থ হবে।’
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জোট-মহাজোট বা ঐক্য গঠন ও ঐক্য ভাঙনের খেলা চলছে। এক্ষেত্রে বিকল্পধারা যদি আপনাদের নির্বাচনী মহাজোটে আসতে চায় তাহলে আপনারা তাদেরকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা আমাদের ওয়ার্কিং কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। ওয়াকির্ং কমিটির বৈঠক হবে। জোট সমীকরণ, পোলারাইজেশন; এগুলো বিষয় নিয়ে শেষ পর্যন্ত পোলারাইজেশন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, বলা মুশকিল। তবে আমরা আমাদের ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনা করবো এবং এসব নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবো। এই মুহূর্তে আমি কোনো কমেন্ট করতে পারছি না। দলের সিদ্ধান্ত ছাড়া অ্যালায়েন্সের ব্যাপারে অগ্রসর হতে পারি না। ইলেকশন রিলেটেড বিষয়াদি ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনা হবে এবং সিদ্ধান্ত হবে।’
এ ব্যাপারে আপনি কোনো সম্ভাবনা দেখছেন কি না’ পাল্টা প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘আমি হাইপোথিটিক্যাল কথা এই মুহূর্তে বলতে চাই না। আমি বলিও না।’
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষমতাসীন সরকার কোন দুঃচিন্তা করছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এ নিয়ে চিন্তা করি না। আমাদের কোনো দুঃশ্চিন্তা কখনো ছিল না। এখনো নেই।’
একবার এম এ আজিজ যখন প্রধান নির্বাচন কমিশন তখন এক মিটিংয়ে ১১৮ দলকে ভোটার লিস্ট করার জন্য ডেকেছিলেন। নির্বাচন কমিশনের অফিসাররা এখন বেশিরভাগ দলের ঠিকানাই খুঁজে পায় না, কার্যালয় খুঁজে পায় না। কারো কারো হয়ত সিল আছে, প্যাড নাই।
তবে এসব দলের কাতারে বিএনপির তুলনা না করে কাদের বলেন, ‘বিএনপি অবশ্যই একটা বড় দল। তবে দিনে দিনে সংকুচিত হচ্ছে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত ও নেতিবাচক রাজনীতির কারণে।’
সারাবাংলা/এনআর/একে
আওয়ামী লীগ ইসিতে বিরোধিতা ওবায়দুল কাদের নির্বাচন কমিশন নোট অব ডিসেন্ট