‘বরিশাল কলোনি’ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা, অস্ত্রসহ গ্রেফতার ৩
১৬ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:১০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর সবচেয়ে বড় মাদকের আখড়া ‘বরিশাল কলোনিতে’ ফের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছে তিনজন। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ অক্টোবর) গভীর রাতে নগরীর বরিশাল কলোনি, স্টেশন কলোনি ও মালি কলোনিতে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে সদরঘাট থানা পুলিশ।
গ্রেফতার হওয়া তিনজন হলেন- খায়রুল হক মোল্লা রনি (২৬), তানভির ইসলাম শুভ (২০) এবং মো.আরিফ (২২)। এর মধ্যে আরিফের এক পা নেই।
তাদের কাছ থেকে একটি এলজি ও দুই রাউন্ড কার্তুজ, এক হাজার ৭০ পিস ইয়াবা এবং ৩০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।
গত ২৩ মে বরিশাল কলোনির সব মাদকের আস্তানা গুঁড়িয়ে দেয় পুলিশ। এরপর থেকে কার্যত সেখানে মাদকের ব্যবসা বন্ধ ছিল।
সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.নেজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ী শুক্কুর দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল কলোনিতে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আস্তানা গড়ে তোলার চেষ্টা করছিল। পঙ্গু আরিফকে ভিক্ষুকের বেশে বরিশাল কলোনি ও স্টেশন কলোনির আশপাশে বসিয়ে দেওয়া হয়। ভিক্ষুকের বেশে থাকলেও তার কাছে থাকত ইয়াবা-ফেনসিডিল। মাদকসেবীরা ভিক্ষুককে টাকা দেওয়ার মতো করে ইয়াবা-ফেনসিডিল কিনে নিয়ে যেত।’
মাদক ব্যবসার বিষয়টি জানতে পেরে ভিক্ষুকের বেশে থাকা পঙ্গু আরিফকে গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্যমতে বাকি দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ওসি জানান।
সদরঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ রুহুল আমীন সারাবাংলাকে বলেন, আরিফ জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে- ১০ বছর আগে ট্রেনে কাটা পড়ে তার ডান পা বিচ্ছিন্ন হয়। এরপর থেকে সে বরিশাল কলোনিতে মাদক বিক্রির সঙ্গে যুক্ত হয়। বরিশাল কলোনি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টায় থাকা মাদক ব্যবসায়ী শুক্কুরের অধীনে একটি গ্রুপ আছে যার মধ্যে আরিফও আছে। গ্রেফতার হওয়া বাকি দুজনও শুক্কুরের গ্রুপের।
এর আগে গত ১৯ মে শুক্কুরের মাদক সিন্ডিকেটের আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছিল সদরঘাট থানা পুলিশ। এরা হলেন- মো.হানিফ প্রকাশ খোকন (৩৫), কাজী মো.আব্দুল্লাহ (২৮) এবং খোকন কুমার দাস (৩২)। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও ৪ রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন, তিনটি কিরিচ এবং ৬২৩ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছিল।
২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর ক্রসফায়ারে মারা যায় বরিশাল কলোনির নিয়ন্ত্রক মাদক সম্রাট ওরফে ফারুক ওরফে বাইট্যা ফারুক। ফারুকের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন ইউসুফ। তার সঙ্গে ছিলেন সালামত। খসরু ছিলেন ফারুকের ম্যানেজার। খসরুর ভাই শুক্কুরও ছিলেন এই সিন্ডিকেটে। মূলত তারাই ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বরিশাল কলোনির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রক ছিলেন।
ফারুকের মৃত্যুর পর বরিশাল কলোনির নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ইউসুফ-সালামত সিন্ডিকেটের কাছে। চলতি বছরের ১৭ মে রাতে বরিশাল কলোনিতে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এই সিন্ডিকেটের দুই ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান ওরফে মোটা হাবিব (৫২) এবং মো.মোশাররফ (৩২) নিহত হয়।
২৩ মে বরিশাল কলোনি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকে শুক্কুর আবারও মাদক বিক্রেতাদের সংঘটিত করে বরিশাল কলোনিতে বিক্রি শুরুর চেষ্টা করে আসছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/একে