সরকারের সমালোচনা কি রাষ্ট্রদ্রোহিতা: ডা. জাফরুল্লাহ
১৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:০৬
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: কেউ যদি সরকারের সমালোচনা করে, সে কি রাষ্ট্রদ্রোহী? সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আমি একটা কথা বলেছিলাম, কথাতে শব্দের ভুল ছিল। তাই বলে কি আমি রাষ্ট্রদ্রোহিতা করেছি? তারপরও আমি ভুল স্বীকার করেছি।
বুধবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে মুভমেন্ট ফর জাস্টিস-এর আত্মপ্রকাশ ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তার মানে রাষ্ট্র এখন মানসিক বিকারগ্রস্ত। আমরা মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। আমাদের চোখে ছানি পড়ে গেছে, আসল জিনিসটা দেখতে পাচ্ছি না। আমরা গণতন্ত্রের কথা বলছি, কিন্তু গণতন্ত্র এখন গণতন্ত্রহীন হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে শুধু সংখ্যা দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। জনগণের সামনে উপস্থিত হতে হবে। বিভিন্ন দলের জনগণের সামনে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। আজ সরকার পক্ষ জনগণের সামনে কথা বলছে কিন্তু বিরোধী দলকে কথা বলতে দিচ্ছে না। এটা গণতন্ত্র নয়।
গণতত্রের মানে হলো কথা বলার সুযোগ থাকা সমালোচনা করা এমনকি ভুল সমালোচনা করলেও তাকে করতে দিতে হবে। ভুল হলে সংশোধন করবে। যেমন আমি করেছি। এটাকে ইস্যু হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
জাফরউল্লাহ বলেন, দেশের এই ক্রান্তিকাল কাটিয়ে উঠতে হলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচনে সবাইকে সমঅধিকারে অংশগ্রহণ করতে দিতে হবে। নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করলাম, মিটিং-মিছিল করতে যাওয়ার আগে আমাকে আটক করা হলো। হামলা মামলা করা হলো। এতে তো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন তিনি দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করবেন। আগে কী হয়েছে ভুলে যান। এখন সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন চাই, ওনাকে আমি যথেষ্ট পরিমাণ বিশ্বাস করি কিন্তু উনার চারিপাশে যে চাটুকারিতা লোক আছে তারা হয় তো এদিক-সেদিক করছে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, হাসিনা দেশের যথেষ্ঠ উন্নয়ন করেছে। পদ্মা সেতু করছে যদিও আট হাজার কোটি টাকা যেখানে লাগবে সেখানে ৩৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে। আমি বলবো না তার কাছে এ টাকা গেছে কারণ তিনি অন্তন্ত ভালোমানুষ আমি বলবো তার চার পাশের চাটুকারী লোকদের কাছে গেছে।
হাসিনা নির্বাচনে হারলেও সে জেলে যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমি যদি এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে থাকি আর হাসিনা যদি নির্বাচনে হারে তাহলে সে জেলে যাবে না। তার যথাযথ বিচার হবে। তিনি জামিন পাবেন। খালেদা জিয়ার ওপরে যে অন্যায় অত্যাচার হচ্ছে তার ওপরে হবে না। একই জিনিস যদি পুনরাবৃত্তি হয়। তাহলে দেশে শান্তি আসবে কোথা থেকে।
এ সময় দেশের সকল সংগঠন ও জনগনণকে আহবান করে তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করব। আপনারা সবাই যদি যোগ দেন তাহলে এই কাজটা আরও সহজে করা যাবে।
সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক সানাউল হক নীরুর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুলসহ অনেকে।
সারাবাংলা/এমএমএইচ/এমআই