Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাগুরা সদর হাসপাতালে অনিয়ম, অভিযোগের পাহাড় জেলা প্রশাসনে


১৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৬:০২

।। মো. আরাফাত হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

মাগুরা: সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারি করে, কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়ে, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেও বন্ধ করা যাচ্ছে না মাগুরার ২৫০ শয্যা হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়ম। রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসকদের অবহেলার চেয়েও অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দাপট।

নিরুপায় হয়ে সাধারণ মানুষ জেলা প্রশাসক বরারব লিখিত অভিযোগ দিচ্ছেন। সূত্র জানায়, সেই অভিযোগপত্র জমে জমে দিন দিন স্তূপের আকার নিচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, সেই সময় দায়িত্বে ছিলেন ডা. সেলিম। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে সমস্যার কথা জানালে ইনসেপটা, ল্যাব এইড, বেক্সিমকো ও এরিস্টোর্ফামা ওষুধ কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের আবদারে ওই কোম্পানিগুলোর ওষুধ লিখে দেন ডা. সেলিম। যদিও আদালত বলেছেন, চিকিৎসক কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধের নাম লিখবেন না। সারাবাংলাকে ওই রোগী আরও বলেন, হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করলেই এ ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যাবে।

এ অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসের আরএসএম মো. আইয়ুব আলী। তিনি দাবি করেন, তাদের প্রতিনিধি শিপন সেখানে ছিলেনই না। যদিও সেই শিপনের বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর রাতে শিপনকে একটি জুয়ার আসর থেকে আটক করে মাগুরা সদর থানা পুলিশ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. মুন্সি মো. ছাদুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি এমন ব্যক্তিকে নিয়োগ দিচ্ছে, যারা ‘প্রভাবশালী‘ হিসেবে পরিচিত। কোম্পানি তাদের তৈরি ওষুধ বেশি বিক্রি করার উদ্দেশ্যে এ রকম ব্যক্তিদের নিয়োগ দিচ্ছে, যেন তারা চিকিৎসকদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, এর আগে সাবেক জেলা প্রশাসক মো. আতিকুর রহমান সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন, ডা. মোমতাজ উদ্দীন জরুরি বিভাগের পাশের একটি ঘরে মাদক সেবন করছেন। আতিকুর রহমান তার মোবাইল ফোন ছবি তোলেন এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন।

সূত্র আরও জানায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একাধিকবার মাসিক সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা যখন-তখন হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারবে না। কিন্তু হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সুশান্ত কুমার বিশ্বাসের প্রশ্রয়ে কিছু দিন পর এই নিয়ম ভেঙে যায়।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ডা. সুশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাগুরা প্রেস ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক অলোক বোস সারাবাংলাকে বলেন, মাগুরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক মনোভাব নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, কিন্তু সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমেনি।

এ বিষয়ে মাগুরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলী আকবর জানান, এরই মধ্যে এসব বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। শিগগির আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সারাবাংলা/এটি

২৫০ শয্যা হাসপাতাল মাগুরা হাসপাতালে অনিয়ম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর