অবশেষে খাশোগি হত্যার দায় স্বীকার সৌদি আরবের
২০ অক্টোবর ২০১৮ ০৯:৩১
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
প্রায় তিন সপ্তাহের জল্পনা-কল্পনার পর সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার কথা স্বীকার করলো সৌদি আরব। শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) দেশটির প্রধান প্রসিকিউটর এক বিবৃতিতে জানান, ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসের অভ্যন্তরে কয়েকজনের সাথে লড়াইয়ে খাশোগির মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় দূতাবাসের দুজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে বহিষ্কার ও ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খবর রয়টার্স।
সৌদি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে বলা হয়, সৌদি বাদশাহর সরাসরি হস্তক্ষেপে যুবরাজ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ দুই সহযোগী, সৌদির রয়্যাল কোর্টের উপদেষ্টা সৌদ আল কাহতানি ও সহকারী গোয়েন্দা প্রধান আহমেদ আশিরিকে পদচ্যুত করা হয়।
নিখোঁজ থাকার পর এই প্রথম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক ও সাংবাদিক জামাল খাশোগির মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য প্রকাশ পেল। এর আগে তুরস্ক ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খাশোগি হত্যার ব্যাপারে ইঙ্গিত মিললেও সুস্পষ্ট কোন প্রমাণ জনসমক্ষে প্রকাশ পায়নি।
গত ২ অক্টোবর ব্যক্তিগত কাজে তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে প্রবেশ করেছিলেন খাশোগি। এরপর তিনি নিখোঁজ হন। খাশোগিকে আটক বা হত্যার কথা শুরু থেকেই অস্বীকার করেছে সৌদি আরব। যদিও তুরস্কের দাবি ছিলো, খাশোগিকে সৌদি দূতাবাসের অভ্যন্তরেই হত্যা ও পরে লাশ গুম করা হয়। এ সংক্রান্ত অডিও-ভিডিও প্রমাণও রয়েছে। সৌদি আরবের আনুমানিক ১৫ জন গোয়েন্দা সদস্য তুরস্কে এসে দূতাবাসের অভ্যন্তরে খাশোগিকে হত্যা করে। এটি একটি পরিকল্পিতভাবে ঘটনা।
খাশোগি সৌদি যুবরাজ সালমান ও রাজতন্ত্রের কঠোর সমালোচক ছিলেন। যুবরাজ সালমানের নির্দেশে খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে বলে পশ্চিমা গণমাধ্যমের দাবি। তবে খাশোগি হত্যায় সালমানের নির্দেশ বা জড়িত থাকার কথা আবারও অস্বীকার করেছেন সৌদি কর্মকর্তারা। তারা বলেন, খাশোগিকে হত্যা বা অপহরণ করার কোন নির্দেশ যুবরাজের ছিলো না। যুবরাজ এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।
আরও পড়ুন: খাশোগি ‘হত্যাকাণ্ড’ নিয়ে তুরস্কের দাবি মিথ্যা: সৌদি আরব
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, খাশোগিকে মেরে ফেলা হয়েছে হয়তো। সৌদি আরব এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকলে তাদের কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও ট্রাম্প জানান।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও রিয়াদ ও আঙ্কারা থেকে ফিরে খাশোগি নিখোঁজের বিষয়ে তদন্তের বিস্তারিত জানানোর পরই ট্রাম্পের এই মতামত ও সৌদি আরবের খাশোগি হত্যার স্বীকারোক্তি বলে ভাবা হচ্ছে।
খাশোগি হত্যায় সৌদি আরবের এই স্বীকারোক্তির জবাবে ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি এটি একটি ভালো পদক্ষেপ। অনেক লোক এ ঘটনায় জড়িত। সৌদি আমাদের অনেক বড় মিত্র। তবে যা ঘটেছে তা অগ্রহণযোগ্য।
আরও পড়ুন: খাশোগি দূতাবাস থেকে বেরিয়েছেন সৌদিকে প্রমাণ করতে হবে: এরদোয়ান
আরও পড়ুন: সৌদি দূতাবাসের ভেতরে সাংবাদিক খাশোগি হত্যা, দাবি তুরস্কের
জামাল খাশোগি প্রায় এক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে ছিলেন। সৌদি যুবরাজ সালমান যুক্তরাষ্ট্র থেকে খাশোগিকে সৌদিতে ধরে আনতে চেয়েছিলেন, মার্কিন গোয়েন্দারা এমন তথ্য পেয়েছে বলেও প্রতিবেদন প্রকাশ করে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।
সারাবাংলা/এনএইচ