মইনুলকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, সম্পাদকদের বিবৃতি
২০ অক্টোবর ২০১৮ ২৩:২৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বেসরকারি টিভি চ্যানেল ৭১ টেলিভিশনের টকশো একাত্তর জার্নালে দৈনিক আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৫৫ সম্পাদক ও বেশ কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক।
শনিবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সম্পাদক ও দেশের শীর্ষ পর্যায়ের সাংবাদিকরা বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিদানকারীরা হলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, দ্য ডেইলি অবজারভার’র সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাসস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, দৈনিক প্রথম আলো’র সম্পাদক মতিউর রহমান, দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, দৈনিক আমাদের নতুন সময়’র সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, ইটিভি’র এডিটর ইন চিফ অ্যান্ড সিইও মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, গাজী টিভি ও সারাবাংলা ডটনেট’র এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, দৈনিক ভোরের কাগজ’র সম্পাদক শ্যামল দত্ত, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন’র সম্পাদক নঈম নিজাম, ডিবিসি‘র প্রধান সম্পাদক ও সিইও মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী ও এডিটর ইন চিফ শামসুর রহমান, মানবকণ্ঠ’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আবু বকর চৌধুরী, বিডিনিউজ২৪.কম’র প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালেদী, দ্য ঢাকা ট্রিবিউন‘র সম্পাদক জাফর সোবহান, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার’র সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেন, এটিএন নিউজ‘র প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মুন্নী সাহা, এটিএন বাংলা’র প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি’র সম্পাদক নাসিমা খান মন্টি, বাংলা ট্রিবিউন‘র সম্পাদক জুলফিকার রাসেল, দৈনিক আমাদের নতুন সময়’র সংযুক্ত সম্পাদক কবি অসীম সাহা, প্রথম আলো’র সহযোগী সম্পাদক সোহরাব হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক আনিসুল হক ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ, দৈনিক সমকাল’র উপ-সম্পাদক আবু সাঈদ খান, দৈনিক আমাদের নতুন সময়’র গ্রুপ যুগ্ম সম্পাদক বিভুরঞ্জন সরকার, দৈনিক ইত্তেফাক’র সিনিয়র সাংবাদিক শাহীন রেজা নূর, সারাবাংলা ডটনেট’র নির্বাহী সম্পাদক মাহমুদ মেনন, দ্য ডেইলি স্টার’র সিনিয়র সাংবাদিক ইনাম আহমেদ, দৈনিক প্রথম আলো’র শওকত হোসেন মাসুম, বিএফইউজে‘র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, বিএফইউজে’র সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ, ভোরের কাগজ’র এডিটোরিয়াল ইনচার্জ সালেক নাসিরুদ্দীন, যুগান্তর’র সহকারী সম্পাদক মাহবুব কামাল, যুগান্তর’র সিনিয়র সাব এডিটর দীল রওশন সীমু, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক মো. আশরাফ আলী, ডিবিসি’র সম্পাদক প্রণব সাহা, এটিএন নিউজ’র হেড অব নিউজ প্রভাষ আমিন, ডিবিসি সম্পাদক জায়েদুল আহসান পিন্টু ও নবনীতা চৌধুরী, বাংলাভিশন’র সিনিয়র নিউজ এডিটর মাসুদ কামাল, সমকাল’র সহযোগী সম্পাদক অজয় দাশগুপ্ত।
বিবৃতিদানকারী অন্যরা হলেন সিনিয়র সাংবাদিক ও আরএসএফ‘র বাংলাদেশ প্রতিনিধি সালিম সামাদ, ইনডিপেনডেন্ট টিভি‘র স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স এডিটর জাহিদ হোসেন, দৈনিক জাগরণ’র নির্বাহী সম্পাদক দুলাল আহমেদ চৌধুরী, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি’র নির্বাহী সম্পাদক ইকবাল মোহাম্মদ খান ও উপ-সম্পাদক মাহবুবুল আলম, দৈনিক আমাদের নতুন সময়’র বিশেষ প্রতিনিধি আমান উদ দৌলা, এশিয়ান এজ’র শোয়েব চৌধুরী, ডেইলি স্টার’র চিফ নিউজ এডিটর সৈয়দ আশফাকুল হক, চ্যানেল নাইন’র হেড অব নিউজ আমিনুর রশিদ, দেশ টিভি’র নির্বাহী সম্পাদক সুকান্ত গুপ্ত অলক, সিনিয়র সাংবাদিক হারুন হাবীব, পিআইবি’র মহাপরিচালক শাহ আলমগীর, সিনিয়র সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু।
গত ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে একাত্তর টেলিভিশনের টকশোতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে উদ্দেশ করে ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের এক মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ওই মন্তব্যের প্রতিবাদে নারীদের পক্ষ থেকে বুধবার (১৭ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
আরও বলা হয়, ওই রাতে একাত্তর টেলিভিশনের নিয়মিত আয়োজন একাত্তর জার্নালে রাজনৈতিক সংবাদের বিশ্লেষণে অতিথি ছিলেন দৈনিক আমাদের অর্থনীতির নির্বাহী সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি ও সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন একাত্তর টেলিভিশনের মিথিলা ফারজানা।
আলোচনায় স্টুডিওর বাইরে থেকে যুক্ত হয়েছিলেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। আলোচনার ফাঁকে মাসুদা ভাট্টির প্রশ্ন ছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি আলোচনা চলছে, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ঐক্যফ্রন্টে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
এর জবাবে ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই।’
এর আগে গত ১৭ অক্টোবর ২০১ এক নারী সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী ও বিভিন্নস্তরের পেশাজীবীরা এক বিবৃতিতে তীব্র প্রতিবাদ জানান।
ওই বিবৃতিতে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান তারা।
এ ছাড়া গত ১৮ অক্টোবর এ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবে। সে সময় নারীদের দুটি দাবি দ্রুত না মানলে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন নারী সাংবাদিকরা। দাবি দুটি হলো ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে তার অপরাধ স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে তিনি এ রকম ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে বিরত থাকবেন।
শনিবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ওই ঘটনার প্রতিবাদে ও ব্যরিস্টার মঈনুলকে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন করে গৌরব ৭১।
সারাবাংলা/জেডএফ/এটি/একে