Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চোখ হারানো ১৭ জনকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ


২১ অক্টোবর ২০১৮ ১৮:১৬

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: চুয়াডাঙ্গা শহরের ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চক্ষু শিবিরে চিকিৎসা নিয়ে ‘চোখ হারানো’ ১৭ জনের প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারকে ৫ লাখ টাকা ও আইরিশ কোম্পানিকে ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

এ বিষয়ে জারি করা রুল নিস্পত্তি করে রোববার (২১ অক্টোবর) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

এ ছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা যেন না ঘটে তা তদারকি করতে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন আদালত।

আদালত রায়ে চোখ হারানো ঘটনায় হাসপাতাল ও ওষধ কোম্পানিকে দায়ী করে এ রায় দেন এবং চিকিৎসককে অব্যাহতি দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইজীবী অমিত দাসগুপ্ত। ওষধ কোম্পানির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তীর্থ সলিল পাল।

পরে আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত জানান, আদালত রায়ে চোখ হারানো ২০ জনের মধ্যে ১৭ জনকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।

ওষধ কোম্পানি আইরিশের পক্ষের আইনজীবী তীর্থ সলিল পাল জানান, হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল দায়ের করবেন।

চুয়াডাঙ্গায় চোখ হারানো ২০ জনকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ১৩ আগস্ট রায়ের জন্য দিন ঠিক করে দেন। আজ নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী রায় দেন আদালত।

চলতি বছরের ১ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গা শহরের ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়ালকমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চক্ষু শিবিরে চিকিৎসা নিয়ে ‘চোখ হারানো’ ২০ জনের প্রত্যেককে ১ কোটি করে টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চক্ষু শিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন! শীর্ষক শিরোনামে ২৯ মার্চ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়ালকমুনিটি হেল্থ সেন্টারে তিন দিনের চক্ষু শিবিরের দ্বিতীয় দিন ৫ মার্চ ২৪ জননারী-পুরুষের চোখের ছানি অপারেশন করা হয়।

অপারেশনের দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহীন। তবে বাসায় ফিরেই ২০ জন রোগীর চোখে ইনফেকশন দেখা দেয়। এসব রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫ মার্চ অপারেশনের পর ৬ মার্চ তাদের প্রত্যেককেই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বাড়ি ফিরে ওই দিনই কারও বিকেলে, কারও সন্ধ্যায়, কারও বা রাত থেকে চোখে জ্বালা-যন্ত্রণা ও পানি ঝরতে শুরু করে। পরদিনই তারা যোগাযোগ করেন ইম্প্যাক্ট হাসপাতালে। তাদের তখন গুরুত্ব না দিয়ে কোনো রকম চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু যন্ত্রণাঅসহনীয় হয়ে উঠলে ফের তারা ইম্প্যাক্টে যান। সেখান থেকে তখন কয়েকজন রোগীকে স্থানীয় এক চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। স্থানীয় ওই চক্ষু বিশেষজ্ঞ তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন।

এদের মধ্যে চারজন রোগী নিজেদের উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্বজনদের নিয়ে ঢাকায় আসেন। পরে ইম্প্যাক্ট থেকে ১২ মার্চ একসঙ্গে ১৬ জন রোগীকে ঢাকায় নেওয়া হয়। ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ৫ মার্চের ওই অপারেশনের ফলে এদের চোখের এত ভয়াবহ ক্ষতি হয়ে যায়।

সারাবাংলা/এজেডকে/এমআই

২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চোখ হারানো


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর