ইভিএম কিনতে ২ হাজার কোটি টাকা চেয়েছে ইসি
২১ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:৩৫
।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: আবারও আলোচনায় এসেছে বহুল আলোচিত সেই ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। চলতি অর্থবছরের প্রথম ধাপেই ইভিএম কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য ১ হাজার ৯৯৮ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ চেয়েছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। চলতি ২০১৮-’১৯ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) এ বরাদ্দ চেয়ে পরিকল্পনা কমিশনকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনে সচিবালয়ের সহকারি প্রধান মো. মাহফুজুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিটি পাঠানো হয় গত ১৭ অক্টোবর। ১৮ অক্টোবর সেটি গ্রহণ করে পরিকল্পনা বিভাগ। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সেখান থেকে গতকাল রোববার পরিকল্পননা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হবে কিনা সেটি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তবে থোক থেকে হয়তো এ বরাদ্দ দেয়া হতে পারে। তারা জানান, পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন মেয়াদে মোট ১ লাখ ৫০ হাজার ইভিএম কেনার কথা। কিন্তু প্রথম ধাপেই মোট ব্যয়ের প্রায় অর্ধেক টাকা বরাদ্দ চাওয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের দেয়া চাহিদা অনুযায়ী, ইভিএম মেশিন কেনার জন্য চাওয়া হয়েছে ১ হাজার ৯২১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এছাড়া বৈদেশিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ খাতে ১ কোটি টাকা, সেমিনার ও কনফারেন্স খাতে ৪০ লাখ টাকা, মোটর যান রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা হিসেবে ১২ লাখ টাকা, পেট্রোল-ওযেল-লুব্রিকেন্ট খাতে ১৮ লাখ টাকা, ব্যক্তি পারামর্শক সেবা খাতে চাওয়া হয়েছে ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, নিবন্ধন ফি বাবদ সাড়ে ১২ লাখ টাকা, অডিও ভিডিও বা চলচ্চিত্র নির্মাণ খাতে ১ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ খাতে ১ কোটি ৭৬ লাখ ৪১ হাজার টাকা, প্রচার ও বিজ্ঞাপনে ১ কোটি টাকা, হায়ারিং চার্জ ৪৫ লাখ টাকা, অফিস সরঞ্জামাদি ক্রয় বাবদ ৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, কম্পিউটার সফটওয়্যার খাতে ৫০ কোটি ৯০ লাখ টাকা, আসবাবপত্র ও র্যাক কেনা বাবদ ১১ কোটি ৬১ লাখ টাকা, পরিবহন ব্যয় ১ কোটি ৩৮ লাখ ৯২ হাজার টাকা, অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ ব্যয় ১০ লাখ টাকা, ব্যবস্থাপনা ব্যয় ৫ লাখ টাকা। আপ্যায়ন খরচ ৩ লাখ টাকা এবং কর্মকর্তাদের বেতন, বিভিন্ন ভাতা যেমন পোশাক ভাতা, সম্মানী, ক্ষতিপূরণ ভাতা এবং নববর্ষ ভাতাসহ নানা ভাতার খরচ বাবদ টাকা চাওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, ‘নির্বাচন ব্যবস্থায় তথ্য প্রযুক্তি প্রয়োগের লক্ষ্যে ইভিএম ব্যবহার’ নামের প্রকল্পটি গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন হয়। প্রকল্পটির মোট খরচ ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। একনেকে অনুমোদনের এক মাসের মাথায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য চলতি অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বহুল আলোচিত ইভিএম ক্রয়, সংরক্ষণ ও ব্যবহার প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, দেশব্যাপী বিভিন্ন নির্বাচন ইভিএম এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানের লক্ষে যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অর্থাৎ দেড় লাখ ইভিএম মেশিন ক্রয়, সংরক্ষণ ও ব্যবহার করা হবে। এছাড়া নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল জনবলের জন্য ইভিএম ব্যবহার সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ আয়োজন এবং ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট দানের জন্য ভোটারদের সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে।
সারাবাংলা/জেজে/এমএইচ