‘আমার উন্নয়ন করার কথা ছিল করেছি, মানুষ তাদের চাইলে আপত্তি নেই’
২২ অক্টোবর ২০১৮ ২০:১০
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: মানুষ যাকে চাইবে, তারাই ক্ষমতায় আসবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেক্ষেত্রে মানুষ নবগঠিত রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকেও ক্ষমতায় দেখতে চাইলে কোনো আপত্তি নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বিএনপি ও ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট ড. কামাল গং কার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এখানে আমার কিছু বলার নেই। মানুষই বিচার করবে। মানুষ যদি তাদের চায়, চাইবে; আমার আপত্তি নেই। আমার উন্নয়ন করার কথা ছিল, করেছি। এর বেশি কিছু নয়।
আরও পড়ুন- মন্ত্রিসভা ছোটো না করার ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চার দিনের সৌদি আরব সফর শেষে সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সৌদি আরব সফর ছাড়াও সমসাময়িক রাজনীতির বিভিন্ন ইস্যুও উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন নিয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করলে এই জোটকে সাধুবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্বাধীনতা আছে, কথা বলার স্বাধীনতা আছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে। ১৯৭৫-এর পর এই প্রথম এখন মানুষ সব ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ভোগ করছে। রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, সেটাকে সাধুবাদ জানাই।
তিনি বলেন, কারা ঐক্য করেছে তা খেয়াল রাখতে হবে। দেখতে হবে, কার কী অঙ্গভঙ্গি, কার কী বাচনভঙ্গি। এদের একজন মেয়েদের প্রতি কী ধরনের কটূক্তি করেছে, সেটাও দেখেছেন। ঐক্যফ্রন্টে এ গাছের ছাল, ও গাছের বাকল যোগ দিয়েছে। আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করছে না। বরং ভালোই হয়েছে, সব ধরনের লোক মিলেই একটা জোট হয়েছে। বাংলাদেশ মানুষ এটাকে কীভাবে দেখছে, সেটাই দেখার বিষয়। তারা রাজনৈতিকভাবে জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারলে করুন। এখানে অসুবিধার তো কিছু নেই।
আরও পড়ুন- ‘ঐক্যফ্রন্টে এ গাছের ছাল, ও গাছের বাকল যোগ হয়েছে’
সংবিধান নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ড. কামাল হোসেনের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড. কামাল হোসেন সংবিধানের প্রণেতা। তাকে জিজ্ঞেস করেন তো, ’৭২-এর সংবিধান নিয়ে তিনি আপত্তি করেন কি না? তিনি কাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন? ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, মানি লন্ডারিংয়ে আমেরিকার এফবিআই যাদের আসামি হিসেবে চিহ্নিত করে, এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করার মামলার আসামি যারা, তিনি তাদের সঙ্গে ঐক্য করেছেন। যারা যুদ্ধাপরাধী, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে, যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, তাদের সঙ্গে ড. কামাল হোসেন ঐক্য করেছেন। হত্যাকারীরা সব এক হয়েছে। খুনী, দুর্নীতিবাজ, মানি লন্ডারিংয়ের হোতা, আগুন সন্ত্রাসী— এরা যেখানে এক হয়েছে, সেখানে রাজনীতিটা কোথায়, বুঝতে পারছি না। আমি তো দেখি, কয়েকটা স্বার্থান্বেষী এক হয়েছে।
তিনি বলেন, এতকিছুর পরও যদি মানুষ তাদের চায়, আমার আপত্তি নাই। আমার দিনবদল করার কথা ছিল, করেছি। যেটুকু কাজ বাকি আছে, আরেকবার ক্ষমতায় আসতে পারলে সেটা শেষ করে বাংলাদেশকে একটা জায়গায় নিয়ে যেতে পারব, এটুকু বিশ্বাস আমার আছে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে পারব, এটুকু আমি বিশ্বাস করি।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে কিছু অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, নির্বাচনে আবারও আগুন সন্ত্রাস-নৈরাজ্য দেখা দিলে তা কিভাবে সামাল দেওয়া হবে— এমন এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, কেউ অগ্নিসন্ত্রাস-বোমাবাজি করতে চাইলে সরকারের পক্ষ থেকে করণীয় সবকিছুই করা হবে। তবে আমার বিশ্বাস, কেবল সরকার নয়, এমন কিছু করতে চাইলে জনগণও এবার রুখে দাঁড়াবে। আমি জনগণের কাছে আহ্বান জানাব, সবাই যেন রুখে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন- আমরা এখন সৌদি আরবকেও সহযোগিতা করছি: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, আমি জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি। জঙ্গিবাদ তৈরি হয়েছে, আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। এই যে পূজা হয়ে গেল, কোথাও একটা দুর্ঘটনাও হয়নি। গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাই তৎপর। এখন দেশে সুস্থ পরিবেশ আছে। বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হচ্ছে। তারপরও তো অনেক ঘটনাই ঘটে গেছে। আমি তো আমার পুরো পরিবারকেই হারিয়েছি। এমন ঘটনার অপচেষ্টা অনেকেই করতে পারে। কিন্তু আমি বলব, যতক্ষণ বেঁচে আছি, মানুষকে জ্বালিয়ে ছারখার করবে, মানুষকে পুড়িয়ে মারবে— এগুলো ঠেকানোর জন্য যা যা করা দরকার, সব সব। মানুষকে শান্তিতে রাখতে, নিরাপদে রাখতে যা দরকার, তার সবই করব।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়কার মন্ত্রিসভা ছোট করা না-ও হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কাকে যে ছোট করব, সেটা তো খুঁজে পাচ্ছি না। বড় থাকলে অসুবিধা আছে? তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে কাটছাট করলে অনেক সমস্যা হতে পারে। আপনারা জানেন, অনেকগুলো প্রকল্প চলমান। দুই-তিন মাসের মধ্যে অনেকগুলো কাজ আমাদের করতে হবে। এর মধ্যেই কাজগুলো শেষ করতে চাই। মন্ত্রিসভা ছোটো করলে সে ক্ষেত্রে কোনো রকম বাধা হবে কি না, সে বিষয়টি রয়ে গেছে। আমি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথাও বলেছি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যেখানে সংসদীয় গণতন্ত্র রয়েছে তাদের দেশে তো নির্বাচনের সময় মন্ত্রিসভার পরিবর্তন করে না। আমি তাদের জিজ্ঞেস করেছি। তারা বলেছে, এর কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। তারপরও অপজিশন ডিমান্ড করলে করব, না করলে যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে শেখ হাসিনা বলেন, ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন সেই আমলে ব্যারিস্টারি পড়তে গেলেন, এটা কম কথা না। কিন্তু তিনি গিয়ে শিখলেন ইংরেজদের খাবার খাওয়ার কায়দা। ইংরেজ খাবার ছাড়া তিনি খেতে পারতেন না। তার অবস্থাটা কাকের ময়ূরপুচ্ছ পরে ময়ূর হওয়ার মতো। তিনি ইংরেজ খাওয়াটা শিখলেন; কিন্তু তাদের ভদ্রতাটা শিখেননি, অ্যাটিকেট শিখেননি, কথা বলা শিখেননি। এটাই হলো বাস্তবতা, এই হলো সেই লোক।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তা করা, সাংবাদিক তুলে নিতে সহায়তা করাসহ স্বাধীনতার বিরোধী শক্তির সঙ্গে মঈনুল হোসেনের রাজনৈতিক দল গঠনের তথ্যও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। পারিবারিক সম্পর্কের সূত্র ধরে তিনি বলেন, তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, উনাকে আমরা মানিক কাকা বলে ডাকতাম। তো কাকা তাকে ব্যারিস্টারি পড়তে পাঠালেন। তিনি ব্যারিস্টারি পাস করে সাহেব হয়ে ফিরলেন। তিনি আর বাংলাদেশি খাবার খেতে পারেন না, তার সাহেবি খাবার দরকার। মানিক কাকা মায়ের কাছে এসে আফসোস করেন। বলেন, ছেলে তো ইংরেজ খাবার ছাড়া কিছু খায় না। তো তার জন্য তখন আলাদা বাবুর্চি রাখতে হলো। সেই যুগে মানিক কাকা ছেলের জন্য ১০০ টাকা দিয়ে বাবুর্চি রাখলেন। ব্যারিস্টারি পড়তে গিয়ে মঈনুল হোসেন ইংরেজ খাওয়াটা শিখলেন; কিন্তু তাদের ভদ্রতাটা শিখেননি, অ্যাটিকেট শিখেননি, কথা বলা শিখেননি।
ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা হলেও তিনি আগাম জামিন নিয়েছেন। এ ইস্যুতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন তুললে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন মামলা হয়, ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ ক্ষেত্রে তৎপর ছিল। কিন্তু তিনি আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি আগাম জামিন চেয়েছেন, পাঁচ মাসের জামিন পেয়েছেন। তিনি প্রকাশ্যে এমনভাবে কথা বললেন, শুধু বাংলাদেশ নয় সারাবিশ্ব দেখেছে। সেখানে কোর্ট তাকে জামিন দিয়েছেন। কিন্তু আপনারা কী করছেন? একটি মামলায় জামিন নিয়েছেন, আরও তো মামলা হতে পারত। আপনারা প্রতিবাদ করুন, মামলা করুন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যা করার, করবে।
সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই আগামী নির্বাচন হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এখানে সরকার কোনো বিষয় নয়। ইসি স্বাধীন এবং তারা স্বাধীনভাবেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে ষড়যন্ত্র তো কম হয়নি। এর মধ্যেও এগিয়ে যেতে পারছি, তার কারণ একটাই— জনগণই শক্তি। আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। আমার ওপর জনগণের আস্থা, বিশ্বাস আছে বলে মনে করি। সেই বিশ্বাস থেকেই বলতে পারি, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।
আরও পড়ুন- ‘নির্বাচন হবেই, সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলার শক্তি আ.লীগের আছে’
নির্বাচন ঘিরে ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রস্তুত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আশা করি, সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই নির্বাচন করতে সক্ষম হব। ইসি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা নির্বাচনের ঘোষণা দেবে এবং সেই ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচন হবে এবং অবশ্যই হবে। এটাই আমি বিশ্বাস করি। আমি জানি না আপনাদের কী মত। কিন্তু যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার শক্তি আওয়ামী লীগের আছে এবং সরকারও সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলার শক্তি রাখে।
নিরাপদ সড়কের জন্য সাধারণ মানুষের সচেতনতা জরুরি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্ররা আন্দোলন করল। কিন্তু এই আন্দোলন হওয়ার পরও তো মানুষ সচেতন হয়নি। এখনও গাড়ি চললে ফাঁক-ফোকড় দিয়ে লোকজন বের হচ্ছে। দেখা গেল ফুটপাত আছে, আন্ডারপাস আছে, ফুটওভার ব্রিজ আছে। কিন্তু স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে মায়েরা গাড়ির সামনে দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ করব, সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো আমরা খুঁজে বের করুন। ঢাকায় দুই স্কুলছাত্র নিহতের ঘটনায় বাসচালকের দোষ ছিল, সেটা স্বীকার করি। বাস তাদের ওপর উঠে যায়। কিন্তু অন্যান্য যে সব দুর্ঘটনা হচ্ছে তারা ফুটপাতে ছিল কি না? রাস্তায় ছিল কি না এগুলো দেখতে হবে। অনেকে ড্রাইভারদের দোষ দেন। নেতাদের পিটুনি দিলেই কি চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে লোক দৌড় মারা বন্ধ হয়ে যাবে? সড়ক আইন পাস করেছি। সবকিছু করেছি। চাইলেই তো হঠাৎ করে যানবাহন বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। যান্ত্রিক ব্যাপার, থামাতে গেলেও তো সময় লাগে। যারা রাস্তা পার হচ্ছেন তাড়াহুড়ো না করে আমাদের উচিৎ হাতে একটু সময় নিয়ে বের হওয়া। আপনারা এ বিষয়টি তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন- ‘ব্যারিস্টার মঈনুল ইংরেজি খাওয়াটা শিখেছেন, ভদ্রতাটা শিখেননি’
বাংলাদেশ এখন সৌদি আরবকেও বিভিন্ন খাতে সহায়তা করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগে তো শুধু সৌদি আরবে আমাদের কর্মী নেওয়ার আবেদন করতাম। আমরা বলতাম, আরও লোক নেন। কিন্তু আমরা এখন তাদের বলছি, আপনারা আসেন, এখানে বিনিয়োগ করেন। নিজেদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো, সাংস্কৃতিক বিনিময়— এসব নিয়ে এখন কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, এখন দেখবেন একটা গুণগত পরিবর্তন এসেছে। এখন আমরা স্বাধীন দেশ হিসেবে তাদের কাছে যাই, তাদের কাছে বিনিয়োগ-সহযোগিতা চাই। আমাদের দুই দেশের মধ্যে যেন পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে, আমরা সেভাবে এখন কথা বলছি এবং সেটিই তাদের কাছে তুলে ধরছি। আমাদের কথার অর্থ হলো, কেবল কর্মী হিসেবে নয়, এখন বিনিয়োগ-ব্যবসা-বাণিজ্য— এসব নিয়েও আমরা কথা বলছি।
আরও পড়ুন- ‘পরিবহন নেতাদের পিটুনি দিলে কি সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ হবে’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে কিন্তু বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। এরই মধ্যে আমরাও সৌদি আরবকে সহায়তা করছি। তাদের সীমান্ত এলাকাগুলোতে প্রচুর মাইন আছে। এসব মাইন অপসারণে তারা আমাদের সহায়তা চেয়েছে। আমরা তো এসব কাজে পারদর্শী। সেক্ষেত্রে আমরা মাইন অপসারণের কাজ দিয়েই সহযোগিতা শুরু করেছি। তাদের প্রতিরক্ষা খাতে কিছু নির্মাণ কাজ রয়েছে, সেগুলোতেও আমরা সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, সৌদি বাদশাহ ও দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে সৌদি আরবে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) দিবাগত রাতে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে সৌদি রাজপ্রাসাদে সৌদি বাদশাহ’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তার সম্মানে বাদশাহর দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন তিনি। এছাড়া সৌদি যুবরাজ, উপপ্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন শেখ হাসিনা।
সফরে প্রধানমন্ত্রী কাউন্সিল অব সৌদি চেম্বার ও রিয়াদ চেম্বার অব কমার্স নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বৈঠকের পর ঢাকা ও রিয়াদের মধ্যে প্রতিরক্ষা এবং শিল্প ও বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। শেখ হাসিনা সৌদি রাজধানী রিয়াদের কূটনৈতিক এলাকায় বাংলাদেশ চ্যান্সারি ভবন উদ্বোধন এবং জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। পরে তিনি মদিনায় মসজিদে নববীতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা জিয়ারত করেন এবং মক্কায় পবিত্র ওমরাহ পালন করেন।
আরও পড়ুন-
‘সংবিধান প্রণেতা কামাল হোসেনেরই ৭২-এর সংবিধান নিয়ে আপত্তি’
সারাবাংলা/টিআর