পাহাড়ধস ঠেকাতে সরকার সম্ভাব্য সবকিছু করছে: বনমন্ত্রী
২৩ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:৪২
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: পাহাড়ধস ঠেকাতে সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০)-এর আওতায় পাহাড় কাটাও নিষিদ্ধ করা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জাতীয় সংসদে এসব কথা বলেন। এর আগে, বিকেল সোয়া ৪টায় চলতি দশম জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশনের তৃতীয় কার্যদিবসের কার্যক্রম শুরু হয়।
সংসদে সংসদ সদস্য রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে কনমন্ত্রী বলেন, পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০)-এর সংশ্লিষ্ট ধারা মোবাইল কোর্ট অদ্যাদেশ ২০০৯-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সে অনুযায়ী পরিবেশ অধিদফতর পাহাড় কাটা ঠেকাতে নিয়মিতভাবে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ আদায় ও মামলা দাায়েরহস অন্যান্য আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে। পাশাপাশি পাহাড় সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচলনা করা হচ্ছে।
মন্ত্রী জানান, পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৫৮৬টি অভিযান পরিচালনা করে ক্ষতিপূরণ ও জরিমানা বাবদ পাঁচ কোটি ৪৮ লাখ টাকা আদায় করেছে।
পাহাড়ধসের কারণ তুলে ধরে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, পাহাড়ধসের কারণ হলো— দুর্বল মাটির গঠন, অতিবৃষ্টিপাত,পাহাড়ে চাষাবাদ, অবৈধ বসতি স্থাপন, অপরিকল্পিত অবকাঠামো, বৃক্ষনিধন, উন্নত প্রযুক্তি ও প্রকৌশল ব্যবহার করে পাহাড় শাসন না করা, অবৈধভাবে পাহাড় কর্তন, আইন বাস্তবায়নে সমস্যা, দুর্যোগকালীন বিভিন্ন কতৃপক্ষের কাজে সমন্বয়হীনতা, পাহাড়ের ওপর নির্ভরশীলতা, অসচেতনতা, সমন্বয়হীনতা, মালিকানা নির্ধারণ না হওয়া ও ভূমিকম্প।
মন্ত্রী বলেন, পাহাড়ধস ও প্রাণহানি রোধে বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রামকে আহ্বায়ক করে গঠিত পাহারা ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে পরিবেশ অধিদফতর নিবিড়ভাবে কাজ করছে। এছাড়া পহাড়ে বসবাসকারীদের পাহাড়ধস ও দুর্ঘটনা রোধে সচেতন করা হচ্ছে, বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে তাদের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অবৈধ জবরদখলকারীদের উচ্ছেদে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, পাবর্ত্য এলাকার উন্নয়ন কার্যক্রম সমন্বয়ের মাধ্যমে নির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বনমন্ত্রী সংসদে জানান, দেশে পরিবেশের ভারসম্য রক্ষায় সংবিধানের একটি পৃথক অনুচ্ছেদ ১৮ক সংযোজন করা হয়েছে। এই অনুচ্ছেদে পরিবেশ সংরক্ষণকে রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পরিবেশের ভারসম্য রক্ষা এবং উন্নয়নে বিধিমালা, নীতিমালা ইত্যাদি প্রণয়ন ও হালনাগাদ করা হয়েছে। যেমন— জীব নিরাপত্তা বিধিমালা ২০১২, জীবনিরাপত্তা গাইডলাইন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রB আইন ২০১৩, ওজনস্তর ক্ষয়কারী দ্রব্য (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৪ (সংশোধিত ২০১৪) প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১৬ প্রভৃতি।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ জাতীয় সংসদ অধিবেশন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী পাহাড়ধস বনমন্ত্রী