চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার নিয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে
২৩ অক্টোবর ২০১৮ ২০:৪৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বাংলাদেশ-ভারত নৌসচিব পর্যায়ের বৈঠক আগামী ২৪ থেকে ২৬ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য পরিবহনে চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে বলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
দুই দেশের নৌসচিব পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে নৌপরিবহন সচিব মোঃ আবদুস সামাদের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নয়াদিল্লির উদ্দেশে মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকা ছেড়েছেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এক বার্তায় জানিয়েছে, নয়াদিল্লির বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের নৌখাত স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে যাত্রী ও পর্যটকবাহী ক্রুজ (জাহাজ) চলাচল সংক্রান্ত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি), নৌপথে পণ্য চলাচল সুবিধার জন্য প্রচলিত প্রটোকল ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট এন্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিটি)-তে প্রয়োজনীয় সংশোধন এবং চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য পরিবহন বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরের জন্য ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন বি ইউজড অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া বিটুইন দি পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ অ্যান্ড দি রিপাবলিক অব ইন্ডিয়া’ শীর্ষক চুক্তির খসড়া অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা কমিটি।
নৌপরিবহন সচিব মোঃ আবদুস সামাদে বলেন, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দক্ষিণ-পূর্ব ভারতের মালামাল পরিবহনের জন্য সক্ষম। প্রতিবছর মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর মিলে প্রায় ৪ হাজারের বেশি বিদেশি জাহাজ আসা-যাওয়া করে। যার মধ্যে মাত্র ৬০টি জাহাজ বাংলাদেশি। বাকি সব জাহাজই বিদেশি। কাজেই ভারত থেকে যেসব জাহাজ এসব বন্দরে আসবে তার সব জাহাজ পরিচালনা করার সক্ষমতা ঢাকার রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে সড়ক সংযোগের যে কাজ চলছে তার জন্য বিস্তারিত মাস্টারপ্ল্যান হাতে নেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বুয়েট নিয়মিতভাবে কাজ করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কাজ সেটি হলো ড্রেজিং এর কাজ। ২৫ কিলোমিটার ড্রেজিং হবে চ্যানেলের ভিতরে এবং আর ৪৫ কিলোমিটার ডেজিং হবে সমুদ্রের ভিতরে। সমুদ্রের ভিতরে ড্রেজারিং করার অভিজ্ঞতা আমাদের সেভাবে নেই। এজন্য আমরা ভারতের সঙ্গে সমন্বয় করেছি। এ কাজে আমাদের মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করছে। কমিটিকে সহযোগিতার জন্য আমরা রাহান নামে নেদারল্যান্ডের একটি কোম্পানির সঙ্গেও কাজ করছি। এ কোম্পানিটির সমুদ্র ড্রেজিং এর ক্ষেত্রে প্রায় ৯০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।’
জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নৌবাণিজ্য বাড়াতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ১৯৭২ সালের ১ নভেম্বর প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট এন্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিটি) স্বাক্ষরিত হয় এবং নৌবাণিজ্য নিরবচ্ছিন্নভাবে চলমান থাকে। উক্ত প্রটোকলের মেয়াদ গত ২০১৫ সালের ৩১ মার্চ উত্তীর্ণ হলে ২০১৫ সালের ৬ জুন পুনরায় পিআইডব্লিউটিটি স্বাক্ষরিত হয়।
বিগত ২০১৫ সালের ০৬ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে কোস্টাল শিপিং বিষয়ক চুক্তি, প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট এন্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিটি) এবং চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার সংক্রান্ত সমঝোতা হয়। পরবর্তী সময়ে ২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে বাংলাদেশ-ভারত প্রটোকল রুটের সিরাজগঞ্জ-দৈখাওয়া এবং আশুগঞ্জ-জকিগঞ্জ রুট উন্নয়ন, কোস্টাল এবং প্রটোকল রুটে যাত্রী ও পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল এবং দুদেশের মধ্যে নেভিগেশন সহায়ক সহযোগিতা সংক্রান্ত তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।
সারাবাংলা/জেআইএল/এনএইচ
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে ভারত