Tuesday 15 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৭১’র গণহত্যার দায়ে কিসিঞ্জারের বিচার চায় নিউইয়র্কের শিক্ষার্থীরা


২৪ অক্টোবর ২০১৮ ১৬:৪৮ | আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:১৩

।। এম এ কে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: বাংলাদেশ, চিলি, ভিয়েতনামসহ একাধিক দেশে গণহত্যার মতো জঘন্য কর্মকাণ্ডে মদদ দেওয়ার অভিযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জরের বিচার দাবি করেছেন নিউ ইয়র্কের শিক্ষার্থীরা। হেনরি কিসিঞ্জারের বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিক অপরাধ আদালতে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচার করার দাবি তুলেছেন এই শিক্ষার্থীরা।

রাশিয়ার গণমাধ্যম আরটি এক প্রতিবেদনে বলেছে, নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টার্ন স্কুল অব বিজনেস গত ১৭ অক্টোবর বিকেলে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি শিক্ষণীয় বক্তৃতার আয়োজন করে। ওই বক্তৃতার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জরকে আমন্ত্রণ জানায়।

হুইল চেয়ার ব্যবহারকারী ৯৫ বছর বয়সী হেনরি কিসিঞ্জার বক্তৃতা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টার্ন স্কুল অব বিজনেস প্রাঙ্গণে আসলে, শিক্ষার্থীরা ‘অপরাধী’, ‘তোমার হাতে রক্তের দাগ’, ‘তুমি মানবতাবিরোধী অপরাধী’, ‘আন্তর্জাতিক আদালতে তোমার বিচার হওয়া উচিত’, এসব স্লোগান দিতে থাকে। এমন সময়ে হেনরি কিসিঞ্জারের সামনে হাত-কড়া নিয়ে এসে তাকে দাগি অপরাধী হিসেবে সম্বোধন করা হয়।

সাংবাদিক মিজানুর রহমানের ‘মুক্তিযুদ্ধ: ‘রক্তস্নান’ চেয়েছিলেন কিসিঞ্জার?’ শীর্ষক ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ  প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক মন্তব্য প্রতিবেদনে বলেন, ‘বাংলাদেশে গণহত্যার প্রতি হেনরি কিসিঞ্জার সুপরিকল্পিতভাবে ইয়াহিয়ার সম্ভাব্য রক্তস্নান নীতির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছিলেন। তিনি এমনকি বলেছিলেন, ‘আমাকে শয়তানের পক্ষে ওকালতি (ডেভিলস অ্যাডভোকেট) করতে দাও। ২০০১ সালে মার্কিন সাংবাদিক ক্রিস্টোফার হিচিন্স তার দ্য ট্রায়াল অব হেনরি কিসিঞ্জার বইয়ে একাত্তরের গণহত্যার জন্য কিসিঞ্জারের বিচার দাবি করেন।’

বিজ্ঞাপন

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক ‘বাংলাদেশের গণহত্যা ও হেনরি কিসিঞ্জারের বিচার’ শীর্ষক  গত ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর দৈনিক কালেরকণ্ঠে প্রকাশিত এক মতাতমত কলামে বলেন, ‘জেনোসাইড বা গণহত্যা ঘটে অনেক মানুষ মিলে, বিচার হতে হবে সবার। ১৯৪৮ সালে গৃহীত জোনোসাইড কনভেনশনে দৃঢ়ভাবে বলা হয়েছিল যে গণহত্যায় যারা সহযোগিতা করে, পরিকল্পনা প্রণয়নে অবদান রাখে, যোগসাজশ ও উসকানি দেয় তারাও সমভাবে দায়ী। সমভাবে কথাটিই বলা হয়েছে কনভেনশনে এবং পরবর্তী সময়ে সব আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে তা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার শুরুর পর ১৯৫ পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবি যে ক্রমে জোরদার হয়ে উঠছে সেটা সুলক্ষণ বটে, তবে জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজকে আরও বড়ভাবে দেখার রয়েছে। তেমনভাবে দেখলে এখানে নিশ্চিতভাবে উঠে আসে পিন্ডি-ইসলামাবাদে ক্ষমতাসীন তত্কালীন পাকিস্তানি সামরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের নাম, অর্থাত্ কেবল ১৯৫ জন যুদ্ধবন্দি যুদ্ধাপরাধী নয়, আরও নাম এখানে উঠে আসে। গণহত্যা সংঘটনে যোগসাজশ, অনুমোদন, সহযোগিতা ও সহায়তার জন্য আরও এক নাম অপরাধী তালিকাভুক্ত হতে হবে, সেই ব্যক্তি হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা, পরবর্তীকালের বিদেশমন্ত্রী, মহাশক্তিধর হেনরি কিসিঞ্জার।’

সারাবাংলা/জেআইএল/এমআই

৭১’র গণহত্যা কিসিঞ্জার