‘ভবিষ্যতে আগুন সন্ত্রাসের মতো কাজ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে’
২৪ অক্টোবর ২০১৮ ২২:২১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের নৃশংসতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনা আর ঘটুক, আমি চাই না। ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ যারা করবে সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং এ ব্যাপারে যা যা করণীয় আমরা করবো।
বুধবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশে ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট-এর উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
২০১৩ ও ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের সহিংসতার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একদিকে গড়ে তুলি আর ওরা ধ্বংস করে। বিএনপি-জামায়াতের কাজ হচ্ছে ধ্বংস করা। সেই সময় এই পোড়া মানুষগুলোর চিকিৎসা দিতে হয়েছে। অনেককে আমরা বিদেশে পাঠিয়েও চিকিৎসা করে নিয়ে এসেছি।
এরপর আবার ২০১৫ সালে। সরকার উৎখাত করবে। খালেদা জিয়ার বাসা গুলশানে তার অফিসেও গুলশানে। অফিসে এসে বসে পড়লো ঘরে ফিরবে না, আমাদের সরকারকে উৎখাত না করে। এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে বসে পড়ল। তার আন্দোলন কী? মানুষ পুড়িয়ে মারা। এইভাবে আগুন দিয়ে দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে তারা পুড়িয়েছে। প্রায় ৪ হাজারের কাছাকাছি মানুষকে তারা পুড়িয়েছে। তার থেকে প্রায় পাঁচশ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। প্রায় ৩ হাজার আটশ গাড়ি পুড়িয়েছে। আমি আমার সাধ্যমতো সবাইকে সাহায্য করেছি এবং যারা আহত তাদেরও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।
ওই সময় আগুনে পোড়া রোগীদেও চিকিৎসায় এগিয়ে এসে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে সেবা দেওয়ার জন্য বার্ন ইউনিটের সকলকে ধন্যবাদও জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, মানুষের জন্য রাজনীতি করি। মানুষকে পুড়িয়ে মারার আন্দোলন? এটা কোন ধরনের আন্দোলন? সেটা আমার কাছে বোধগম্য না। কিন্তু বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনা আর ঘটুক, আমি চাই না। তবে বাংলার জনগণ এটা প্রতিরোধ করেছে, আমাদের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী সংস্থা গোয়েন্দা সংস্থা সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-জঙ্গি কর্মকাণ্ড আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি। ভবিষ্যতে যেন আবার কেউ এই ধরনের জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারতে না পারে তার জন্য দেশবাসীকে আমি আহ্বান জানাই। এ ধরনের কাজ যারা করবে সাথে সাথে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং আমরা এ ব্যাপারে যা যা করণীয়, আমরা করবো।
আমরা দেশের মানুষের শান্তি চাই। কারণ শান্তিপূর্ণ অবস্থা থাকলেই দেশের উন্নয়নটা করা সম্ভব। এতো প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ। আজকে বিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বলা হয়।
কারণ এতো অল্প সময়ের মধ্যে একটি দেশ এতো দ্রুত উঠে যেতে পারে এটা অনেকে দেশের কাছে এটা দৃষ্টান্তস্বরূপ।
আমি যখনি যেখানে যাই অনেকে প্রশ্ন করে, কেনো কীভাবে করতে পারলেন। আমার একটাই কথা, আমার তো কিছু করতে হয়নি, প্রতিটি ক্ষেত্রে আমি পেয়েছি আমার বাবা তার ভিত্তিটা তৈরি করে দিয়ে গেছেন। আমি শুধু সেই কাজগুলো সম্পন্ন করে যাচ্ছি। এবং দিনরাত এদেশের মানুষের জন্যই পরিশ্রম করি। আমার আর কোনো কাজ নাই। একটাই কাজ দেশের উন্নয়ন করে মানুষকে একটা সুন্দও জীবন দেবো, উন্নত জীবন দেবো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল এই ইনস্টিটিউটটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং মূল ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, সেনাবাহিনী প্রধান আজিজ আহমেদ, ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। আর স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব সিরাজুল হক খান।
সারাবাংলা/এনআর/এমআই