‘শিক্ষক দ্বন্দ্বে’ ৪ মাসেও তৈরি হয়নি জাবি একাডেমিক ক্যালেন্ডার
২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৯:১৮
।। জাবি করেসপন্ডেন্ট ।।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গত শিক্ষাবর্ষের একাডেমিক ক্যালেন্ডারের মেয়াদ শেষ হয়েছে জুন মাসে। এরপর প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও বের হয়নি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ক্যালেন্ডার। এতে নানামুখী জটিলতায় পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আর নতুন ক্যালেন্ডার প্রকাশিত না হওয়ার কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যপন্থী ও উপাচার্যবিরোধী শিক্ষকদের চলমান দ্বন্দ্বকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জাবি শিক্ষক জানান, প্রতিবছর জুলাই মাসের আগেই একাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি ও বিতরণ করা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও তৈরি হয়নি নতুন ক্যালেন্ডার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, একাডেমিক ক্যালেন্ডারে স্থান পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কমিটির তালিকার দুইটি পদের নাম নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। গত মেয়াদে উপাচার্যবিরোধী হিসেবে পরিচিত দু’জন প্রভাবশালী ব্যক্তি রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন।
ওই কর্মকর্তা জানান, গত বছর সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে দুই ব্যক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে গত ৩০ ডিসেম্বরের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচনে তারা ফের সিনেট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু নতুন এই সিনেট থেকে এখনও সিন্ডিকেট সদস্য নির্বাচন হয়নি। ফলে পদ দু’টিতে কারা সদস্য হবেন, ক্যালেন্ডারে কার নাম থাকবে আর কার নাম থাকবে না— এ নিয়েই চলছে বিতর্ক। এ কারণেই আটকে আছে একাডেমিক ক্যালেন্ডার।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দায়িত্বশীল পদে থাকা এক অধ্যাপক সারাবাংলাকে বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচিত হয়েছেন। তবে যেহেতু সেই নির্বাচনের পরে এখনও সিনেট অধিবেশন হয়নি, তাই পুরনো সিনেট সদস্যরা সিনেট সদস্য হিসেবে বিবেচিত হবেন। আবার যেহেতু তারা সিনেট থেকে নির্বাচিত, তাই নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তারা সিন্ডিকেট সদস্য। তাই ক্যালেন্ডারে তাদের নাম থাকবে।
এদিকে, একাডেমিক ক্যালেন্ডার না হওয়ায় বিভিন্ন সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। তারা বলছেন, একাডেমিক ক্যালেন্ডারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটির দিনগুলো চিহ্নিত থাকে। তাই এটাকে ব্যবহার করে বিভাগের একাডেমিক রুটিন, পরীক্ষার সূচি, শিক্ষা সফর ইত্যাদির পরিকল্পনা করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অনেকেই ব্যক্তিগত বিভিন্ন কাজের সময় ঠিক করেন এই ক্যালেন্ডার দেখেই। তাই এখনও ক্যালেন্ডার বের না হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (স্টোর) তাজনাহার বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ক্যালেন্ডার তৈরির বিষয়ে কোনো অগ্রগতির কথা আমার জানা নেই। আমার চাকরির জীবনে ক্যালেন্ডার তৈরি হতে এত দেরি হতে কখনও দেখিনি।’ তিনি এ বিষয়ে জানার জন্য রেজিস্ট্রার ও উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
তবে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্তের জন্য ফাইল পাঠিয়েছি। দেখা যাক কী হয়।’
সারাবাংলা/জেডএফ/টিআর