Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অচল নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি কি তাহলে ফিরেই যাবে?


২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৯:৫৯

।। প্রান্ত রনি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।

রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটির দুর্গম উপজেলা লংগদু। জেলা সদর থেকে দূরত্ব ৭৬ কিলোমিটার। যোগাযোগের জন্য খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা থেকে লংগদু উপজেলা পর্যন্ত রয়েছে ৪০ কিলোমিটার সড়ক পথ। তবে রাঙ্গামাটি জেলা সদরের সঙ্গে এই উপজেলার যোগাযোগের মূল মাধ্যম এখনও নৌপথ। এই উপজেলার মানুষের জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতেও তাই রাখা হয়েছিল একটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু দেড় বছর ধরে সেই নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় জরুরি চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দেড় বছর ধরেই অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে এর সব যন্ত্রাংশও। গত দেড় বছর ধরে উপজেলা পরিষদ ঘাটে পড়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্সটি সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র প্রভাবে অতিবৃষ্টিতে মেশিনসহ ডুবে গেছে। এতে করে অব্যবহৃত নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটিতে থাকা কয়েক লাখ টাকা দামের মেশিনটিও সংরক্ষণ করা হয়নি।

জানা গেছে, রাঙ্গামাটির লংগদুসহ নৌপথের চারটি উপজেলার মানুষের জরুরি চিকিৎসা সেবা ও দুর্ভোগের কথা ভেবে ২০১৫ সালে জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি) চারটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদকে উপহার দেয়। যাতায়াতের জন্য তেল খরচ এবং চালকদের বেতন-ভাতার বরাদ্দ সংস্থানেও সংস্থাটি সহযোগিতা করত। হ্রদবেষ্টিত এ উপজেলার মানুষের চিকিৎসা সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এ নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি। ২০১৫ সালের শেষের দিকে ইউএনডিপি’র প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ার পর আরও ছয় মাসের মতো অ্যাম্বুলেন্সগুলো চালিয়েছে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও লংগদু উপজেলা পরিষদ। কিন্তু, এর পর থেকেই অচল হয়ে পড়ে রয়েছে এটি।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: ঘুরতে যাই নয়নাভিরাম রাঙ্গামাটি

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে লংগদু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সচালক রত্ন বিকাশ চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার একার পক্ষে অনেক সময় সার্ভিস দেওয়া কষ্ট হয়ে যায়। মাঝে মধ্যে এমন হয়, একসঙ্গে তিন জন রোগীকে বহন করতে হয়। যদি নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি সচল থাকে, তাহলে একাধিক রোগীকে একসঙ্গে রাঙামাটি নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। এতে অনেক সুবিধা হবে এবং যাতায়াতে সময়ও অনেক কম লাগাবে।

উপজেলার মাইনীমূখ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মিজানুর রহমান বাবু বলেন, ‘নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি লংগদু উপজেলার মানুষের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় ছিল। এখান থেকে যেকোনো রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হলে সড়ক পথে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু নৌ-অ্যাম্বুলেন্সে রাঙ্গামাটি শহরে যেতে সময় লাগে মাত্র একঘণ্টা। আর রাঙ্গামাটি থেকে চট্টগ্রামে যাওয়া যায় দুই ঘণ্টাতেই। অর্থাৎ নৌ-অ্যাম্বুলেন্সে চট্টগ্রামে যেতে সময় লাগে সড়ক পথের সময়ের অর্ধেক। তাই একে সচল করে তোলা খুবই জরুরি।’

লংগদু উপজেলার দায়িত্বে থাকা রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য জানে আলম বলেন, ‘নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি উপজেলা পরিষদকে হস্তান্তর করেছে জেলা পরিষদ। এটা দেখার দায়িত্ব তাদেরই। কোনো সমস্য থাকলে জেলা পরিষদকে জানাতে হবে। তখন জেলা পরিষদ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

বিষয়টি জানতে কথা হয় লংগদু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, ‘নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটির সবকিছুই ঠিক আছে। কিন্তু ফুয়েল খরচ অনেক বেশি হওয়ায় ব্যবহার কম হয়। আমরা শিগগিরই এটা জেলা পরিষদকে ফেরত দিয়ে দেবো।’

সারাবাংলা/এমএস/টিআর

ইউএনডিপি জরুরি চিকিৎসাসেবা নৌ-অ্যাম্বুলেন্স নৌপথ রাঙ্গামাটি

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর