Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জামিনযোগ্য মামলায় মইনুল কেন কারাগারে, প্রশ্ন ড. কামালের


২৫ অক্টোবর ২০১৮ ২৩:১৭

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: জামিনযোগ্য মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে কারাগারে পাঠানোয় আইনমন্ত্রীর প্রতি প্রশ্ন রেখেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।

গণহারে মামলা, গ্রেফতারের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। দ্রুত বোর্ড গঠন করে সাইকিয়াট্রিক পরীক্ষা করা দরকার।’

বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতিমিলনায়তনে জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘‘আমার বক্তব্য দেওয়ার আগেই আমি তীব্র নিন্দা জানাই ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতারের। আমি অবাক হয়েছি। একই ঘটনায় জামিন নেওয়ার পরও তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাকে অন্ত্যরীণ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকায় এসে দেখি এখনো সে মুক্তি হয়নি। এটা কী শুরু হয়েছে। একটা সভ্য দেশকে সুন্দরবন বানাতে চাচ্ছে নাকি। এতে সুন্দবরবনকেও অবমাননা করা হয়। দেশটাকে জঙ্গল বানানো হচ্ছে। যা করছে তা তো জানোয়াররাও করে না।’

তিনি বলেন, ‘বিনা কারণে কেন এ সরকার এসব করছে, মাথা খারাপ হয়ে গেছে এদের। আমি মনে করি সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সংবিধানে আছে দেশ শাসন করার সময় যাদের মাথা খারাপ হয়ে যায়, তাদের দ্রুত পরীক্ষা করাতে হয়। আমি বলি বোর্ড গঠন করে সাইকিয়াট্রিক পরীক্ষা করা হোক।’

তিনি বলেন, ‘কী আশ্চর্য, মইনুল হোসেন একজন আইনজীবী। এই সরবকার খুব ভালোভাবে তাকে চেনেন। ওনাকে জেলে নেওয়া হয়েছে। এখানে এসে দেখি উনি এখনো জেলে। তিনি কেন জেলে কেন? কেন কেন? এর উত্তর চাই।’

ড. কামাল বলেন, ‘এ সরকারের একজন আইনমন্ত্রী আছে। তোমার কাছে আমি উত্তর চাই। তুমি আমাদের একজন জুনিয়র ল’ইয়ার। তোমার বাবা আমার সহকর্মী ছিলেন। সিরাজুল হক বাচ্চু ভাই। উনি আইনজীবী ছিলেন। তুমি কী হয়ে গেছো? তুমি আইন সব ভুলে গেছ? এসো তোমাকে আমরা আইনের বই দেখাব। কোন গ্রাউন্ডে মইনুল হোসেনকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। কৈফত চাই। গণতন্ত্র যখন দাবি কর, জনগণকে কৈফত দিতে হবে। দায়িত্ব আছে তোমার।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে বলছি, কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী বলতে পারে না। সবাই মামলা কর। মামলা কর। আইনমন্ত্রী তুমি যার চাকরি করছ তাকে বোঝাও। এভাবে কথা বলা যায় না। তাকে বোঝানোর ক্ষমতা না থাকলে আমরা সাহায্য করব। বই খুলে চোখে আঙুল দিয়ে তোমাকে দেখাব। স্বাধীনতার ৪৭ বছরে এসে এ সব দেখতে হচ্ছে। আমি মনে করি এটা আমার জন্য বড় শাস্তি। এটা আমাকে দেখতে হচ্ছে, শুনতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী তুমি মনে হয় সব ভুলতে বসেছো। তুমি শপথ নিয়েছো সংবিধান অনুযায়ী দেশ পরিচালনার। তুমি যার চাকরি করছো তিনিও শপথ নিয়েছেন। তোমাদের শপথের প্রত্যেকটা শব্দের ব্যাখ্যা আমাকে বোঝাও।’

জামিনযোগ্য মানহানির মামলায় রাতে গ্রেফতার করতে হবে এমন নিয়ম কোথায় আছে। আইনমন্ত্রী অন্য কিছু না জানলেও তুমি তোমার বাবার সঙ্গে ক্রিমিনাল প্রাক্টিস তো করেছো। জামিনযোগ্য অপরাধ কি তুমি জানো।

‘কেন মইনুল হোসেনকে সন্ধ্যার পর গ্রেফতার করা হয়েছে। ম্যালাফাইডি শব্দের অর্থ বুঝ? এখানে তোমার ম্যালাফাইডি প্রমাণিত। শতভাগ ম্যালাফাইডি। আজকে না হয়, কালকে না হয়, ১০ বছর পরে হউক দ্রুত তোমার বিচার হবে। আমাদেরকে মেরে ফেলতে পারো। দ্রুত তোমার বিচার হবে। আমরা ভয়ে ভীত না। কি মনে কর এদেশের মানুষকে?’

এরপর জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেটজয়নুল আবেদীন আগামীতে মহাসমাবেশ করার কথা জানিয়ে সাত দফা ঘোষণা করেন।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সুব্রত চৌধুরী, নিতাই রায় চৌধুরী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এস এম কামাল উদ্দিন, শাহ আহমেদ বাদল, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গোলাম মোস্তাফা খানসহ অন্যরা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেডকে/একে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর