মানসিক অসুস্থতা প্রমাণে মিথ্যা সার্টিফিকেট দিলে জেল-জরিমানা
২৫ অক্টোবর ২০১৮ ২৩:২৭
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত পেশাজীবী কোনো ব্যক্তি মানসিক অসুস্থতা সম্পর্কিত বিষয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা সার্টিফিকেট দিলে অনধিক ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রেখে সংসদে পাস হয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য বিল-২০১৮।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদেও ২৩তম অধিবেশনে বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন। এর আগে বিলের ওপর আনীত সংশোধনী, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
বিলে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, মর্যাদা সুরক্ষা, সম্পত্তির অধিকার ও পুনর্বাসন এবং কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় বিধান রাখা হয়েছে। বিলে মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা বা অভিভাবক বা ব্যবস্থাপক নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তির সম্পত্তির তালিকা প্রণয়ন বা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে অবহেলা বা আদালতের কোনো নির্দেশনা অমান্য করলে পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা তিন বছরের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, আইন কার্যকরের ৯০ দিনের মধ্যে যে মানসিক হাসপাতালগুলো আছে সেগুলোকে লাইসেন্স নিতে হবে। এই আইন লঙ্ঘন করলে শাস্তি পেতে হবে। সরকারের লাইসেন্স নিয়ে বেসরকারিভাবে মানসিক হাসপাতাল স্থাপনের বিধানও রাখা হয়েছে বিলে। এছাড়া বিলে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম পরিচালনা, মানসিক স্বাস্থ্য রিভিউ ও মনিটরিং কমিটি গঠন, মানসিক অসুস্থ ব্যক্তির অধিকার, মানসিক রোগীর চিকিৎসার অধিকার, পুনর্বাসন, মানসিক অবস্থার বিচারিক অনুসন্ধান, মানসিক রোগীর অভিভাবকত্ব, তার সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধান রাখা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৯১২ সালের বিদ্যমান আইনটি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক একমাত্র আইন। শত বছরের পুরনো এ আইনটির প্রাসঙ্গিকতা ও সময়োপযোগিতা বহু আগেই হ্রাস পেয়েছে। সে প্রেক্ষাপটে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত নাগরিকগণের মর্যাদা সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, সম্পত্তির অধিকার, পুনর্বাসন ও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতকরণে একটি যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে