Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএনপি নেতারা স্বাধীনতার ঘোষকের নাম নিতে সাহস পায়নি: বি চৌধুরী


২৬ অক্টোবর ২০১৮ ২৩:০০

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, সিলেটে গত ২৪ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রথম সমাবেশে বিএনপি নেতারা শহীদ জিয়াউর রহমানের নাম না নিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। তারা স্বাধীনতার ঘোষকের নামটি নিতে সাহস পায়নি।

আজ শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাড্ডায় বিকল্প যুব ধারার বিশেষ কাউন্সিলে অধ্যাপক বি. চৌধুরী এসব কথা বলেন।

এর আগে অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, ছাত্রদলের প্রথম নির্বাচিত সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলন ও বিশিষ্ট শিল্পপতি প্রকৌশলী শফিকুর রহমান বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক বি. চৌধুরীর হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিকল্পধারায় যোগ দেন।

বি চৌধুরী বলেন, সিলেটের জনসভায় ৯৮ ভাগ মানুষ ছিল বিএনপির, বাকি দুইভাগ ছিলো অন্যদের। সেই সমাবেশে স্বাভাবিক কারণেই শ্রদ্ধার সঙ্গে অন্য দলের নেতারা বঙ্গবন্ধুর নাম স্মরণ করেছেন সত্তর থেকে আশিভাগ। ধন্যবাদ, যিনি এই দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন তাকে স্মরণ করেছেন নেতারা, এটা স্বাভাবিক।

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, বিএনপির নেতারা শহীদ জিয়ার নামটি নেননি কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা যিনি দিলেন তার নামটি কেউ বলতে সাহস পাননি। কী মনে হয়? তারা কী আত্সমর্পণ করেছেন। কার কাছে, কেন? এ দুটি প্রশ্ন জনগণের মনে থেকে যাবে।

বি চৌধুরী বলেন, বিএনপির নেতারা ‘উচ্চারণ করেননি ভাসানীর নাম। কেউ উচ্চারণ করেনি শের-ই-বাংলার নাম। কেউ না, কেউ না। উচ্চারণ করেনি কৃষকের মুক্তির সাধক শের-ই বাংলার নাম। স্বাধীনতার বীর সিপাহসালার ওসমানীর নাম উচ্চারণ কেউ করলো না। তাদের কথা বলা উচিৎ ছিল না?

বিজ্ঞাপন

সে সময় চিৎকার করে বি চৌধুরী বলেন, কেনো বলেন নাই আপনারা? জবাব দিতে হবে, কেনো বলেন নাই, কেন বলেন নাই। আপনারা সত্যই যদি মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করে থাকেন, আপনাদের যদি সত্যিই স্বপ্ন ছিল এই রঙিন পতাকাকে সম্মান দেখানো। কিন্তু দেখান নাই।

‘আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নও বাস্তবায়ন চাই। মওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোরওয়ার্দী, শেরে বাংলা ফজলুল হকের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। আমরা উন্নয়ন চাই, গণতন্ত্রের পূর্ণ বিকাশ চাই, বলেন যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান।

বি চৌধুরী বলেন, ড. কামাল হোসেন চুক্তি ভঙ্গ করেছেন। আমরা ১৩ অক্টোবর তার দাওয়াতে বাসায় গিয়েছিলাম, কিন্ত তিনি বাসায় ছিলেন না। এমনকি তার কোনো লোকও বাসায় ছিল না, তার ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। তিনি যেভাবে চুক্তি ভঙ্গ করলেন, তাতে আমারা আঘাত পেয়েছি। আমরা অসত্য, ভ্রান্তির সঙ্গে কোনো চুক্তি করি না।

আমরা ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে নাই উল্লেখ করে বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট বলেন, এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে নাই বলেই জোট ছেড়ে অনেকে বেরিয়ে এসেছে। আমরা জিয়াউর রহমানের রাজনীতির পক্ষে লড়াই করবো। তার রাজনীতির উত্তরাধিকার আমাদের হাতে। উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করবো। সেই উন্নয়নের পাশাপাশি গণতন্ত্রও থাকবে।

বি. চৌধুরী ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন এখনই বাতিল করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনি বঙ্গবন্ধুকন্যা, সাহসের সঙ্গে অবিলম্বে এই আইন বন্ধ করুন।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আলোচনার আহ্বান জানিয়ে বি চৌধুরী বলেন, ‘আলোচনা ছাড়া পৃথিবীর কোথাও সমাধান হয় না। আপনার কাছে দাবি করছে, আপনি বঙ্গবন্ধুকন্যা, এটাই সবচেয়ে বড়। আপনি উদারচিত্তে এগিয়ে আসেন। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে সব দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করুন।’ তিনি গণগ্রেফতার বন্ধ করার জন্যও আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির সঙ্গে ঐক্য না হওয়ার কারণ জানিয়ে বি চৌধুরী বলেন, ‘আমি বিএনপিকে বলেছিলাম আপনারা ১৭৫টি আসন নিন, বাকি সব দলের জন্য ১২৫টি আসন। আমি তো বলিনি বিকল্প ধারাকে ১২৫ আসন দিতে হবে। এই ভারসাম্য যারা অস্বীকার করে, তাদের সঙ্গে কীসের ঐক্য। আমরা ভারসাম্যের রাজনীতি চাই।

যোগদান অনুষ্ঠানটিকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘আজকে এই অনুষ্ঠানে আসায় স্বাভাবিক প্রশ্ন আসবে, ঠিক তিন বছর আগে রাজনীতি অবসর নেওয়ার পর কেনো আজকে আবার রাজনীতিতে ফিরলাম, কেনো একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করলাম।’ শমসের মবিন বলেন, ‘অত্যান্ত পরিচিত, সাহসী, জাতীয়তাবাদী ধারার রাজনীতি প্রসারিত করতে যার অবদান আছে, তিনি হলেন বি চৌধুরী।

অবসর থেকে ফেরার প্রসঙ্গ টেনে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘আমি যখন রাজনীতি থেকে অবসর নিই, একটা কথা তখন উল্লেখ করেছিলাম। শারিরীক সুস্থতার সাপেক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে সামনে রেখে যদি দেশ ও জাতির জন্য কোনো ধরনের অবদান রাখার সুযোগ আসে, ভূমিকা রাখার সুযোগ পাই, তাহলে নিজেকে আমি সেই কাজে সম্পৃক্ত করবো। সেই প্রতিশ্রুতির ধারাবাহিকতায় আজকে বিকল্প ধারায় যোগ দিলাম।’

এ প্রসঙ্গে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘আমি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে, সাহসী নেতৃত্বে দেশপ্রেমের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের আদর্শে রাজনীতিতে আস্থা রেখে, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আজ আমি নিজেকে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি। যেন আগামীতে বাংলাদেশকে একটি সুখী, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে নিজেদের অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখবো।’

অনুষ্ঠানে কথা বলেন সদ্য বিকল্প ধারায় যোগদানকারী সাবেক প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলন, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি, এনডিপি চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্ত্তুজা, বিএলডিপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, লেবার পার্টি একাংশের মহাসচিব হামদুল্লাহ মেহেদিসহ অনেকে।

শুক্রবার সকালের অধিবেশনে বিকল্প শ্রমজীবীধারার কাউন্সিলে সভাপতি আইনুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক সুমন নির্বাচিত হন। ৮১ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়েছে। বিকেলে যুবধারার কাউন্সিলে সভাপতি হিসেবে অধ্যাপক আসাদুজ্জামান বাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক পদে গোলাম মোস্তফা সারোয়ার নির্বাচিত হয়েছেন।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমআই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

২ দিনে আয় ২৮৯ কোটি টাকা
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৩২

মৌসুমী হামিদের সংসার যেমন চলছে
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:২৬

সম্পর্কিত খবর