আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটের পরিধি বাড়ছে
২৭ অক্টোবর ২০১৮ ০৮:৪৭
।। স্পেশাল করেসপেন্ডন্ট ।।
ঢাকা : আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটের পরিধি বাড়ছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই জোট গঠনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছে দলটি। আগামী জাতীয় নির্বাচনে নৌকায় শরিক হয়ে সরকারে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা করছে দেশের ছোট-বড় বিশটিরও বেশি রাজনৈতিক দল। তবে আপাতত মহাজোটে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে তিনটি ধমীয় রাজনৈতিক মোর্চা ও দল।
শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) রাতে গণভবনে অনুষ্ঠিত দলটির কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ ও সংসদীয় দলের যৌথসভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেনএকাধিক সিনিয়র নেতা।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, প্রায় আড়াই ঘণ্টার রুদ্ধদার এই সভায় আগামী নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট সম্প্রসারণ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। আপাতত বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী ও তরীকত ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব এম এ আউয়াল এমপির নেতৃত্বাধীন ১৫ দলীয় জোট ‘ইসলামিক ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স’, সৈয়দ বাহাদুর শাহ মুজাদ্দেদীর নেতৃত্বাধীন ইসলামিক ফ্রন্ট এবং মোস্তফা আমীর ফয়সলের নেতৃত্বাধীন জাকের পার্টিকে নির্বাচনী জোট তথা মহাজোটে যুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২৬ জুলাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠক করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। একই দিনে আলাদাভাবে বৈঠক করেন বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ও নতুন রাজনৈতিক জোট ‘বাংলাদেশ জাতীয় জোট (বিএনএ)’ এর আহ্বায়ক ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা।
আরো পড়ুন : বিদ্রোহী প্রার্থী হলে আ.লীগ থেকে আজীবন বহিষ্কার
তারও আগে গত ২৪ জুলাই বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কার্যালয়ে গিয়ে দলের সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক শাহ আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সিপিবি’র নেতৃত্বে বামপন্থি ৮টি দল ‘বাম গণতান্ত্রিক জোট’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক জোট গঠন করে। জোটের অপর দলগুলো হলো- বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন।
১৮ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে ১৪ দলীয় জোটের শরিক হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন বিএনএ’র আহ্বায়ক ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। এ সময় নাজমুল হুদার নেতৃত্বাধীন বিএনএ জোটের শরিক- তৃণমূল বিএনপি, গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স, সম্মিলিত ইসলামিক জোট, কৃষক শ্রমিক পার্টি, একমত আন্দোলন, জাগো দল, ইসলামিক ফ্রন্ট ও গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া জোটে অংশ নিতে ‘প্রগতিশীল জোট’ এর শরীক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই জোটে রয়েছে ‘গণফ্রন্ট’সহ নিবন্ধিত চারটি রাজনৈতিক দল। জোটের শরিক অপর তিনটি দল হলো- প্রফেসর তাসমিনা মতিনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশীর নেতৃত্বাধীন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) এবং মুসলিম লীগ। গত মার্চে গঠিত ‘প্রগতিশীল জোট’ এর চেয়ারম্যান ও চিফ কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বে রয়েছেন গণফ্রন্টের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন।
গত বছর ১৪ দলে ইসলামী ঐক্যফ্রন্ট বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হলেও বাম শরিকদের আপত্তিতে শেস পর্যন্ত তা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিসহ আরও বেশ কয়েকটি দল নিয়ে মহাজোট হয়। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি না অংশ নেয়ায় মহাজোট থেকে জাতীয় পার্টি বেরিয়ে আলাদা নির্বাচনে অংশ নেয়।
সারাবাংলা/এইচএ/এসএমএন