‘চোর’ আতঙ্কে জাবির ছাত্রীরা, নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
২৭ অক্টোবর ২০১৮ ১০:৪৪
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘বহিরাগত চোর’আতঙ্কে ভুগছেন ফজিলাতুন্নেছা হলের আবাসিক ছাত্রীরা। গত এক মাসে হলটিতে অন্তত দুইবার ‘চোরের অনুপ্রবেশের’ঘটনা ঘটেছে। খোয়া গেছে ছাত্রীদের নগদ অর্থসহ মূল্যবান জিনিসপত্র।
হলটির ছাত্রীরা জানান, গত ১৩ অক্টোবর রাতে হলের গণরুমে ৪৭তম ব্যাচের ৬ জন ছাত্রী অবস্থান করছিলেন। এদের মধ্যে দুই জন ছাত্রী জানালার পাশে ঘুমাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে তিনটার দিকে মোবাইলের টর্চের আলোয় এক ছাত্রী জেগে যান। এ সময় তিনি জানালার পাশে অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে দেখেন। তৎক্ষণাৎ সেই ছাত্রী পাশে অবস্থানকারী ছাত্রীকে ডেকে তোলেন। তখন অজ্ঞাত ব্যক্তিটি ওই ছাত্রীকে ‘চুপ’ থাকতে বলেন। এই কথা রুমের অন্যান্য ছাত্রীরা শুনতে পেয়ে ভয়ে চিৎকার শুরু করেন। চিৎকার শুনে বেশ কিছুক্ষণ পরে ওই ব্যক্তি পালিয়ে যান।
এর আগে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে হলটিতে চুরির ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাতে এক ছাত্রী অজ্ঞাত কাউকে হলের করিডোরে দেখেন। তবে বিষয়টি তখন তিনি মতিভ্রম ভেবে উড়িয়ে দেন। পরে সেই দিন ভোরে আরেক ছাত্রী সেই ব্যক্তিকে দেখে চিৎকার শুরু করেন। তবে দুই ঘটনায় কাউকেই আটক করা সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৭ ব্যাচের এক ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ভর্তি পরীক্ষা শেষে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় হল অনেকটাই ফাঁকা ছিল। ১৩ তারিখ দিবাগত রাতে এক লোকের কথা শুনে ঘুম থেকে জেগে গিয়ে সবাই চিৎকার শুরু করেন। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি হলের গার্ডদের জানানো হয়। তবে তারা নানাভাবে সময়ক্ষেপণ করেছেন। তারা প্রথমে হলের ভেতরে না খুঁজে বাইরে দেখতে গেছেন। পরে ভেতরে এসে খুঁজেছেন। ঘটনার পর হলে বৈদ্যুতিক বাতি বাড়ানো হয়েছে। তবে এমন জায়গায় সেগুলো দেওয়া হয়েছে যে, তা কোন কাজে আসবে না।
এ দিকে ছাত্রী হলে চোর ঢোকায় হলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অচিরেই ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছাত্রীদের। নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৭ ব্যাচের ওই ছাত্রী আরও বলেন, ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই হলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাছাড়া পরপর দুইবার এমন ঘটনা ঘটায় সবার মাঝে আতঙ্ক কাজ করছে।
হলের দায়িত্বরত এক গার্ড বলেন, আমি চুরির ঘটনা ছাত্রীদের কাছ থেকে শুনেছি। তবে হলের চারপাশে দেয়ালের উপর কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া। মই দিয়ে যে ভেতরে ঢুকতে পারবে এমন সুযোগও নেই।
এ বিষয়ে হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক এ টি এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘এ রকম একটি অভিযোগ শুনেছি। এটা যেন দ্বিতীয়বার আর না ঘটে সেজন্য সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
সারাবাংলা/এমএস