Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাড়ছে গ্যাসের দাম


৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০৮:৩৩

হাসান আজাদ
স্পেশাল করসপন্ডেন্ট

ঢাকা: চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে সরকারকে গ্যাসের দাম আবারও বাড়াতে হবে। এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) জাতীয় সঞ্চালন লাইনে যোগ হওয়ার যে পরিকল্পনা চলছে, সে কারণেই বাড়বে গ্যাসের দাম।

জ্বালানি বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ বছরের এপ্রিল নাগাদ সঞ্চালন লাইনে ঢুকবে এলএনজি। যার পরিকল্পনা এরই মধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। আমদানি করে আনা এই গ্যাসের দর বেশি হওয়ায় তা গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছাতে বেশি খরচ পড়বে। আর সে খরচের সঙ্গে দেশে উৎপাদিত গ্যাসের দাম সমন্বয় করতেই সরকার সার্বিকভাবে দাম বাড়াবে বলে জানান তারা।

এলএনজি আমদানির পর গ্যাসের দাম কোন কোন খাতে সমন্বয় করা হবে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে এই গ্যাস জাতীয় গ্রিডে দেওয়া হলে দেশের শিল্প খাত সুফল ভোগ করবে বলেই মনে করছেন তারা।

সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম অঞ্চলের শিল্পে এ গ্যাস সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছে সূত্র।

বিদ্যুৎ, জ্বালানিও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি সারাবাংলা’কে বলেন, এলএনজি আমদানির পর গ্যাসের দাম সমন্বয় করা প্রয়োজন হবে। কারণ আমদানি করা ওই গ্যাসের দাম অনেক বেশি। জাতীয় গ্রিডে এক সঙ্গে তা সরবরাহ করতে সমন্বয়ের কোন বিকল্প নেই।

জ্বালানি খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছরের শেষ দিকে কিংবা ২০১৯ সালের শুরুর দিকে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানিখাতের সেবা-ব্যবসা নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সম্প্রতি জ্বালানি খাতে জনগণের যে ব্যয়বৃদ্ধি ঘটেছে তা স্থির রেখে জনমনে স্বস্তি তৈরি করতে চাচ্ছেন নীতিনির্ধারকরা। একইসাথে লোডশেডিং দূর করে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি উন্নতির প্রতি মনোযোগ দেয়া হয়েছে। তাই নিত্যপ্রয়োজনীয় তেল এবং বিদ্যুতের দামবৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা নেই। এলএনজি আমদানির কারণে গ্যাসের দাম এক বার বাড়ানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে। তবে আমদানিকৃত এলএনজির কারণে গ্যাসের দাম আবাসিকসহ সব গ্রাহকদের জন্য নাকি শুধু শিল্প এবং বাণিজ্য শ্রেণীতে বাড়ানো হবে তার সুবিধা-অসুবিধা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, গত বছর সরকার পৃথক দুই দফায় গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। ১ মার্চ থেকে গ্যাসের এবং ১ ডিসেম্বর থেকে বিদ্যুতের বর্ধিত দাম কার্যকর হয়েছে। ব্যয়বহুল এলএনজি আমদানির ফলে গ্যাসের যে গড়পড়তা দাম বাড়বে তা মাথায় রেখেই গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিল। এ বছর আরো কিছুটা বাড়ানো হবে।

বর্তমানে আবাসিকের মিটারভিত্তিক প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৯ টাকা ১০ পয়সা এবং এক চুলার গ্যাসের দাম ৭৫০ টাকা ও দুই চুলার গ্যাসবিল ৮০০ টাকা। শিল্প এবং বাণিজ্যে প্রতি মিটার গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৭ টাকা ২৪ পয়সা এবং ১৪ টাকা ২০ পয়সা। সিএনজি এবং ক্যাপটিভ পাওয়ারে প্রতি মিটার গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৩৮ টাকা এবং ৮ টাকা ৯৮ পয়সা।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে পেট্রোবাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এলএনজি আমদানির পর গ্রাহকভেদে প্রতি মিটার গ্যাসের দাম ১ টাকা ৮৩ পয়সা থেকে ১৯ টাকা ৭০ পয়সা পর্যন্ত বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে আবাসিক গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে ২ টাকা ১০ পয়সা বেড়ে ১১ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়াবে। বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম ১৪ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হবে ৩৫ টাকা হবে। শিল্পকারখানায় প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৭ টাকা ২৪ পয়সা থেকে বেড়ে হবে ১৪ টাকা ৯৮ পয়সা। এক্ষেত্রে প্রতি মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজির দাম ধরা রয়েছে ৭ মার্কিন ডলার (প্রায় ৫৬০ টাকা)।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা বলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে এ বছর ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট অতিরিক্ত গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। দেশে উৎপাদিত গ্যাসের সাথে এলএনজি মিশিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে বিক্রি করা হবে। তাতে দাম সহনীয় রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এইচএ/এমএম

গ্যাস জ্বালানি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর