সমগ্র বাংলাদেশে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে: প্রধানমন্ত্রী
২৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৩:৪৫
।। নৃপেন রায়, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
পটুয়াখালী থেকে: সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সমগ্র বাংলাদেশে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। এর ফলে বাংলাদেশের মানুষ সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারবে। দেশের মানুষ আর কষ্ট করবে না। তাদের জীবনমানের উন্নয়ন হবে।
পটুয়াখালীতে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আবাসন প্রকল্প ‘স্বপ্নের ঠিকানা’র দলিল ও চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই এলাকায় এলএনজি টার্মিনাল করে দেব। যাতে এলএনজি শিল্পখাতসহ অন্যান্য খাতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগও আমরা নেব।’
আরও পড়ুন: স্বপ্নের ঠিকানাসহ ১৬ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। উন্নয়নের কারণে কোনো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত যেন না হয়, গৃহহীন না হয়ে পড়ে সেদিকে আমরা লক্ষ্য রেখেছি।’
‘স্বপ্নের ঠিকানা’র উদ্বোধন উপলক্ষে তিনি বলেন, ‘এই এলাকায় ১৩০টি পরিবারের জন্য আমরা ঘর তৈরি করে দিয়েছি। এই পরিবারগুলোতে ক্ষতিপূরণ দিয়েছি তো বটেই, ঘরও তৈরি করেছি। যাতে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতে পারে।’
আরও পড়ুন: পটুয়াখালী-বরগুনা সফরে প্রধানমন্ত্রী
‘উন্নয়ন করতে গিয়ে কোনো মানুষ যেন কষ্ট না পায়। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এ ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি বাড়িগুলোতে গিয়েছিলাম। বাড়িগুলো চমৎকার। ১৩০ টা সেমি পাকা বাড়ি। এছাড়া এখানে খেলার মাঠ, দুইটা পুকুর, স্কুল, দোকানঘর, কাঁচাবাজার, ৪৮টি ঘর নলকূপেরও ব্যবস্থা করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নির্দেশ দিয়েছি এখানে মাল্টিপারপাস সাইক্লোন সেন্টার তৈরি করতে। কাজেই স্বপ্নের ঠিকানা নাম দিয়ে যে বাড়িঘর তৈরি করেছি তারা সেখানে সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারবেন।’
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে এখানকার ছেলে- মেয়েরা চাকরির সুযোগ পাবে। সেই ব্যবস্থা আমরা করতে পারব বলেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ অঞ্চলে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনীর ঘাঁটি ও সেনানিবাস তৈরি করে দিচ্ছি। এ এলাকা একসময় অবহেলিত ছিল, সেটার দিকে আমরা নজর দিচ্ছি। এই অঞ্চল ঘিরে আমরা আমাদের মহাপরিকল্পনা করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই এলাকায় আমরা একটা দ্বীপ খুঁজছি। এটির সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই চলছে। আমরা এখানে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে দেব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী ২০২০ সালের ১৭ মার্চ। ২০২০-২১ কে আমরা মুজিববর্ষ ঘোষণা দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকটি এলাকায় আমরা ইন্টারনেট সার্ভিস এনে দিয়েছি। আমরা ব্ঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি সবক্ষেত্রে আমরা এ স্যাটেলাইট ব্যবহার করতে পারব।’
‘আমি চাই এ প্রকল্পগুলোর যেন ভালোভাবে ব্যবহার করা হয়। আমরা গুচ্ছগ্রাম, আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণ করছি, গৃহায়ন তহবিল থেকে অর্থবরাদ্দ দিচ্ছি। পটুয়াখালী এলাকায় আসতে আগে কোনো ব্রিজ ছিল না। এখন এলাকার সবগুলো ব্রিজই বলতে গেলে আমাদের করা। অভ্যন্তরীণ নৌপথগুলো যেন সচল হয়, ড্রেজিং করে আমরা সে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী অারও বলেন, ‘৮১ সালে প্রতিকূল পরিস্থিতে দেশর ফেরার পর অামি টুঙ্গীপাড়া থেকে স্পিডবোটে করে বরগুনা পর্যন্ত ভিজিট করেছি। এ অঞ্চলে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে তাদের দুঃখ-দুর্দশা দেখেছি। অথচ সে সময়কার শাসকরা এ অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নের সম্ভাবনা চোখে দেখেনি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাষণের পর ১৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরগুনায় ২১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনসহ বিকেল ৩টায় তালতলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অাওয়ামী লীগ অায়োজিত জনসভায় অংশ নেবেন।
সারাবাংলা/এনআর/একে
আশ্রয়ন প্রকল্প তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্নের ঠিকানা