‘প্রিয়াংকার সারা গায়ে ক্ষত, ওষুধ দেব কত’
২৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৩:৫৬
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।
ফেনী: সারা শরীরে পুড়ে যাওয়ার তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে প্রিয়াংকা ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। তার স্বাজন না থাকায় তাকে এখন দেখভাল করছে ফেনীর সামাজিক সংগঠন ‘সহায়’। প্রিয়াংকার শারীরিক খোঁজ খবর নিতে গিয়ে সহায় সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মনজিলা মিমি জানান, ‘প্রিয়াংকার সারা গায়ে ক্ষত, ওষুধ দেব কত। তাকে উঠানামা করানোর জন্য ধরারও কোনো জায়গা নেই।’ ফেনী শহরতলীর শর্শদী ইউনিয়নের গজারিয়া কান্দি এলাকার শাহেনা বেগম নামের এক কথিত মায়ের কাছে পালিত হিসেবে থাকত প্রিয়াংকা।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ফেনী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বর্বর নির্যাতনে মারাত্মক আহত শিশু প্রিয়াংকার চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিয়েছেন ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির। এ বিষয়ে তিনি জানান, প্রিয়াংকার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হবে। সেখানে মেডিসিন, চক্ষু, চর্মরোগ ও সার্জারী বিভাগের চিকিৎসকরা থাকবেন। তাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রিয়াংকা এখনো পুরোপুরি শংকামুক্ত নয়। কারণ বার্নের রোগীদের প্রভাব পড়তে একটু সময় লাগে।
নির্যাতনের ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় সমাজকর্মী মামুনুর রশীদ বাদী হয়ে পালক মা শাহেনা আক্তারসহ ৪ জনকে বাদী করে মামলা করেছেন। বর্তমানে তারা ৪ জন আটক আছে।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, অভিযুক্ত পালক মা শাহেনা আক্তারসহ দুই কবিরাজ ও শাহেনা আক্তারের সহযোগীকে গেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড চাওয়া হবে।
গত ২৩ অক্টোবর জোহরা বেগম নামের এক প্রতিবেশী প্রিয়াংকাকে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। ফেনীর শহরতলীর শর্শদী এলাকার পাঠান বাড়ি থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে। শাহেনা শিশুটিকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন। আবার কয়েক মাস পরপর গ্রামের বাড়ি আসত। বাংলা চলচ্চিত্রের অশ্লীল যুগের পাশ্ব চরিত্রের অভিনেত্রী ছিলেন শাহেনা বেগম। সর্বমোট ৪৫টি ছবিতে অভিনয় করছেন বলে জানান। তবে বিগত চার বছর ধরে অভিনয় থেকে দূরে সরে এসেছেন শাহেনা। কোন সন্তানাদি না থাকায় পিতা-মাতাহীন প্রিয়াংকাকে পালক হিসেবে নেন।
সারাবাংলা/এমএইচ
আরও পড়ুন
ফেনীতে শিশু নির্যাতন, অভিনেত্রী শাহেনা আটক