দশ লাখ মানুষের জন্য ফিজিয়াট্রিস্ট ১ জন!
২৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:৪০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: দেশের প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে প্রতি ৪ জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ১ জন অর্থাৎ ২৫ শতাংশ মানুষ মাংসপেশী, হাড়জনিত ও বিভিন্ন স্নায়ুরোগে ভুগছে। আবার এই ২৫ শতাংশের মধ্যে ১০ শতাংশ ভুগছে হাঁটুর ব্যথায়। অথচ প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য মাত্র একজন ফিজিয়াট্রিস্ট রয়েছেন।
শনিবার (২৭ অক্টোবর) বিশ্ব ফিজিয়াট্রি ডে উপলক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. মুহিবুর রহমান রাফি। সঞ্চালনা করেন ফিজিক্যাল মেডিসেন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মশিউর রহমান খসরু।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন’র সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, বর্তমানে দেশের ১৪টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফিজিয়াট্রিস্ট চিকিৎসক রয়েছে। এর মধ্যে ৫টি প্রতিষ্ঠানে পূর্ণাঙ্গ বিভাগ রয়েছে। তাই প্রতিটি জেলায় ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ তৈরি করা প্রয়োজন। শুধুমাত্র একজন ফিজিয়াট্রিস্টই পারেন অক্ষম ব্যক্তিদের সার্বিক উন্নতির মাধ্যমে কর্মক্ষম করে তুলতে এবং রোগীর সামগ্রিক চিকিৎসার নির্দেশনা দিতে।
বিএসএমএমইউ’র ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. তছলিম উদ্দিন বলেন, ফিজিয়াট্রিস্টরা সার্বিক রোগ নির্ণয় করেন এবং ওষুধের পাশাপাশি অন্যান্য মডালিটি ব্যবহার করে সহযোগী দক্ষ জনবল নিয়ে গঠিত রিহ্যাব টিমের মাধ্যমে পরিপূর্ণ চিকিৎসা ও রিহ্যাবিলিটেশন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। এমনকি রিহ্যাব টিম গঠনের মাধ্যমে ফিজিয়াট্রিস্টরা বাতব্যথা রোগ, পক্ষাঘাতগ্রস্ত এবং অন্যান্য ধরনের আঘাত প্রাপ্ত অক্ষম রোগীদের শারীরিক মানসিক এবং সামাজিক পুনর্বাসন করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে ফিজিয়াট্রিস্টরা টিম লিডারের ভূমিকা পালন করে। এই টিমে কারা অন্তর্ভুক্ত হবেন তা ফিজিয়াট্রিরা নির্ধারণ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. মো. এ কে এম সালেক, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, অধ্যাপক শাসুন্নাহার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেলী রহমান, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট তৌফিক মারুফসহ অন্যরা।
বক্তারা আরও বলেন, চিকিৎসা একটি বিজ্ঞানসম্মত বিষয়। এখানে কবিরাজি বা অপচিকিৎসার কোনও সুযোগ নেই। ফিজিয়াস্ট্রিস্টরা রোগীর রোগ নির্ণয়, পরিপূর্ণ চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করে। বর্তমানে ফিজিয়াট্রিরা আরও আধুনিক এবং উন্নত চিকিৎসা যেমন স্টেম সেল থেরাপি, ওজন থেরাপি, পিআরপি থেরাপি এবং রোবটিক্স করছেন। এর ফলে বিভিন্ন জটিল রোগ অপারেশন ছাড়াই ভালো করা সম্ভব হচ্ছে।
সারাবাংলা/জেএ/এটি