২ নভেম্বর ঢাকায় সমাবেশ করতে চায় ঐক্যফ্রন্ট
২৯ অক্টোবর ২০১৮ ১১:৫৪
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা : সিলেট এবং চট্টগ্রামের পর এবার রাজধানীতে সমাবেশ করতে চায় নবগঠিত রাজনৈতিক মোর্চা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এজন্য আগামী ২ নভেম্বর সম্ভাব্য তারিখ ঠিক করা হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এই ঘোষণা দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম সদস্য বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির এই নেতা জানান, আগামী ২ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে জনসভা করতে চান তারা। তবে এটা নির্ভর করছে অনুমতি সাপেক্ষে। অর্থাৎ এই দুটি স্থানের যেখানে অনুমতি মিলবে সেখানেই সমাবেশ করা হবে।
রিজভী বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি আর ১১ দফা লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এই সমাবেশের আয়োজন করা হবে।
এর আগে গত ২৭ অক্টোবর চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকায় নাসিমন ভবনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে ঐক্যফ্রন্ট। এছাড়া আইনজ্ঞ ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর গত ২৪ অক্টোবর সিলেটে প্রথম সমাবেশ হয়।
কর্মসূচি ঘোষণার আগে লিখিত বক্তব্যে রিজভী বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ। আর গণতন্ত্রের অন্তর্নিহিত সারবস্তু হচ্ছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা। কিন্তু আওয়ামী লীগের সময় কাটে বিরোধীদের প্রতি বিদ্বেষ প্রদর্শন করে, অবিরাম কুৎসিত অসংযমী বাক্য বিলাসে। সন্ত্রাসের পরিচর্যা ও বিস্তার আওয়ামী লীগের চারিত্র্যধর্ম। মূলতঃ আওয়ামী লীগের ইতিহাস একটা ‘ক্রাইম স্টোরি’ ছাড়া আর কিছুই নয়।,
তিনি বলে, ‘শুধু বিরোধী দলই নয়, সরকারবিরোধী সমালোচনায় দলনিরপেক্ষ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বিপাকে ফেলার জন্য ওঁৎ পেতে থাকে আওয়ামী লীগ। দেশের জননন্দিত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে বন্দি করে রাখা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েই তারা ক্ষান্ত হয়নি। এখন চলছে প্রতিবাদী বিশিষ্টজনদের ওপর স্টিম রোলার।’
ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে গ্রেফতারের পরও হয়রানী ও নির্যাতনের তীব্রতা হ্রাস পায়নি মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘এখন চলছে প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ওপর হানাদারি আক্রমণ। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের লোকজনদের জান-মালের ওপর চলছে সরকারি ক্যাডারদের বেপরোয়া আগ্রাসন। তার গড়া প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জায়গা-জমি দখল করতে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে দলীয় মাস্তানদের।’
তিনি বলেন, ‘বিনা অপরাধে র্যাবের গুলিতে পা হারানো গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লিমনের ওপর আওয়ামী ক্যাডারদের কাপুরুষোচিত শারীরিক আক্রমণের দ্বারা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে তার হাত-পা। ঢাকার আশুলিয়ায় মির্জানগরে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ ভবনে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট, কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বাসভবন, ছাত্রী হোস্টেল ও গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসে হামলা একটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, এটি সরকারের প্রত্যক্ষ মদদেই হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘সর্বশেষ সংসদ অধিবেশনে তড়িঘড়ি করে আরপিও-তে ইভিএম এর বিধান সংযোজনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যে ইভিএম-এর বিরুদ্ধে জনসমাজের প্রতিনিধিত্বকারী অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং নানা শ্রেণী-পেশার সংগঠন ও মানুষ সোচ্চার, সেই ইভিএম এর ব্যাবহারের সিদ্ধান্তে নিশ্চয়ই কোনো দুরভিসন্ধি আছে।’
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা কখনোই সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করতে দেবেন না। তার কারণ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি ক্ষমতার মসনদ থেকে ছিটকে পড়বেন। এই ভয়ে দীর্ঘস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকতে জালিয়াতির নির্বাচনেই তিনি উৎসাহী। ইভিএম জালিয়াতির নির্বাচনের প্রমাণিত যন্ত্র। সেইজন্য এই জালিয়াতির যন্ত্রই শেখ হাসিনার একমাত্র ভরসা।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, মুনির হোসেন প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এসএমএন