‘টিকে থাকার কৃষি আজ বাণিজ্যের দিকে ধাবমান’
২৯ অক্টোবর ২০১৮ ১৬:৫৪
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সরকারের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন কৃষিবান্ধব নীতি এবং বাস্তবায়নের নানামূখী কর্মসূচির কারণে শুধু টিকে থাকার খোরপোষ কৃষি আজ বাণিজ্যিক কৃষির দিকে ধাবমান। সেই সঙ্গে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যও অর্জিত হচ্ছে। আর এ অপ্রতিরোধ্য লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএ)।
গতকাল রোববার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএফএ চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের অভিষেক ও ডিলারর্স ফ্যামিলি গেট টুগেদার অনুষ্ঠানে এসব বক্তব্য উঠে এসেছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব বক্তব্যের বিষয় জানানো হয়েছে।
বিএফএর চট্টগ্রাম ইউনিটের সভাপতি সাইফুদ্দিন মাহমুদ বাহাদুরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হাবিবুর রহমান। উদ্বোধন করেন প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. আমিনুল হক চৌধুরী, টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. মফিজুর রহমান, চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস, বিএডিসি চট্টগ্রামের যুগ্ম পরিচালক (সার) মো. আব্দুল হালিম এবং বিএফএর প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান রোটারিয়ান মো. মোমেন সরকার। বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম ইউনিটের সিনিয়র সহসভাপতি লায়ন মো. হাকিম আলী, সহসভাপতি নজরুল ইসলাম সিকদার, সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুবুল আলম খাঁনসহ অনেকে।
প্রধান অতিথি হাবিবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কৃষিতে প্রযুক্তি ও আধুনিকতার সর্বোচ্চ ছোঁয়া দিয়েছে। সারের মূল্য হ্রাস, বিদ্যুৎ ও ডিজেলে ভর্তূকি প্রদান, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত অভিযোজনে এবং কৃষি পূর্ণবাসনে প্রনোদনা প্রদানসহ নানা কর্মসূচি খাদ্য ঘাটতির এই দেশকে করেছে স্বয়ংসম্পন্ন।
কৃষিবিদ আমিনুল হক চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার সময় আমাদের খাদ্য উৎপাদন ছিল মাত্র ১ কোটি মেট্রিক টন। বর্তমানে তা সাড়ে তিনগুণেরও বেশি উৎপাদন হচ্ছে। বাংলাদেশ খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে দশম স্থানে রয়েছে। যার পুরো কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তার যোগ্য নেতৃত্বে দেশে আজ কৃষি বিপ্লব ঘটেছে।
প্রকৌশলী মো. মফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিপিতে কৃষিখাতের অবদান ১৪ দশমিক ২৩ শতাংশ। বর্তমান সরকারের সময়পযোগী পদক্ষেপের ফলে কৃষি বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত হওয়ার পাশাপাশি দেশে কর্মসংস্থান সম্প্রসারিত হচ্ছে।
প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানায় উৎপাদিত সারের পাশাপাশি, প্রয়োজনীয় পরিমাণ সার বিদেশ থেকে আমদানীর মাধ্যমে কৃষকদের চাহিদামত সারের যোগান দিয়ে কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা বর্তমান সরকারের অন্যতম সাফল্য।
কফিল উদ্দিন বলেন, ১৯৯৪ সন থেকে একটি অলাভজনক সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএ)-এর যাত্রা, যার বর্তমান সদস্য সংখ্যা প্রায় ৫৫০০। সারাদেশে ডিলারদের মাধ্যমে সুষ্ঠভাবে সার বিতরণের মাধ্যমে দেশের খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আসছে বিএফএ।
রোটারিয়ান মো. মোমেন সরকার, কৃষি উৎপাদনে সারাদেশের যে পরিমাণ সরের প্রয়োজন হয় তার এক চতুর্থাংশ সার ফার্টিলাইজার থেকে সরবরাহ করা হয়। যা কৃষকদের কাছে পৌঁছাতে ব্যবস্থা করেছে বিএফএ।
সাইফুদ্দিন মাহমুদ বাহাদুর বলেন, দেশের সকল সার ডিলারদের একইবৃত্তে এনে দেশে সুষমভাবে সার বণ্টন করে তা কৃষকের প্রান্তে পৌছানো, খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিএফএর ভূমিকা এবং অবদান অনস্বীকার্য।
লায়ন হাকিম আলী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন আজ পূর্ণ হওয়ার পথে। তার যোগ্য উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে কৃষি ক্ষেত্রে সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
মো. মাহাবুবুল আলম খাঁন বলেন, কৃষির অন্যতম প্রধান উপকরণ সার উৎপাদন ও আমদানির ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। এ জেলাতে রয়েছে বিএফএর একটি দক্ষ ও কার্যকর ইউনিট। ভবিষ্যতে এ ইউনিট আরও অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই