প্রতি সংসদীয় আসনে নির্বাচনী বাজেট ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা
৩১ অক্টোবর ২০১৮ ০৯:০৩
।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি সংসদীয় আসনের জন্য ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ধরে ৩০০টি সংসদীয় আসনের জন্য মোট ৭০২ কোটি টাকা নির্বাচনী বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের কমিশন সভায় এই বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জাতীয় বাজেট থেকে নির্বাচন কমিশনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা থেকে এই অর্থ ব্যয় করা হবে বলে সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছে নির্বাচন কমিশন সূত্র।
এ ব্যাপারে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সারাবাংলাকে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যয় নির্বাহের জন্য ৭০২ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই বাজেট থেকে নির্বাচন পরিচালনা বাবদ অর্থ ব্যয় করা হবে।
ইসি সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ৮৭টি খাতে ৭০২ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বাজেট রাখা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর জন্য। এই অর্থ মোট বাজেটের ৫৭ শতাংশ, বাকি ৩০২ কোটি টাকা বা ৪৩ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা হবে নির্বাচন পরিচালনা বাবদ। এর মধ্যে কাগজ-কালি খাতে বাজেট ৩০ কোটি টাকা, পুলিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের জন্য বাজেট ধরা হয়েছে ১৭০ কোটি টাকা, বিভিন্ন মালামাল ক্রয় বাবদ আরও ২৫ কোটি টাকা, অবশিষ্ট ৭৭ কোটি টাকা বিভিন্ন খাতে ব্যয় করা হবে।
ইসি সূত্র জানায়, সংসদ নির্বাচনে ব্যয়ের অন্যা্য খাতগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ভোটকেন্দ্রের বেষ্টনি নির্মাণ, ভোটকক্ষ প্রস্তুত করা, কেন্দ্রের সংস্কার, ভোট কক্ষে ব্যালট পেপার মার্কিং প্লেস-গোপন কক্ষ নির্মাণ, অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র নির্মাণ, অস্থায়ী ভোটকক্ষ-অতিরিক্ত ভোটকক্ষ নির্মাণ খরচ, ভোটকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য মনোহর সামগ্রী যেমন সাদা কাগজ, কার্বন কাগজ, বল পয়েন্ট, কলম, মোমবাতি, সুপার গ্লু, গামপট, ছুরি, আলপিন, সুঁই-সুতা ও দিয়াশলাই ইত্যাদি।
দশম সংসদ নির্বাচনে প্রত্যেক প্রিজাইডিং অফিসারের ভাতা ছিল তিন হাজার টাকা করে। একাদশ সংসদে তা চার হাজার টাকা করা হয়েছে। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের ভাতা গত সংসদে দুই হাজার টাকা করা হলেও এবার তিন হাজার টাকা। পোলিং অফিসারদের ভাতা দেড় হাজার হাজার টাকা থেকে বেড়ে দুই হাজার টাকা করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে মালামাল পরিবহনের ব্যয় দুই হাজার টাকা করে বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা করা হয়েছে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ১৮৩ কোটি টাকা। তখন ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। ফলে ১৪৭টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই ১৪৭ আসনের জন্য নির্বাচনী বাজেট ছিল ১৮৩ কোটি টাকা। প্রতিটি আসনে গড়ে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি আসনে গড় খরচ প্রায় দ্বিগুণ ধরা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, গত ৫ বছরে জীবন যাত্রার মান বাড়ার সাথে সাথে খরচও বেড়েছে। অন্যদিকে দশম সংসদে বিএনপিসহ অনেক দল নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় খরচও কমেছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করার সম্ভাবনা থাকায় বাজেট বেশি ধরা হয়েছে।
উল্লেখ্য পঞ্চম জাতীয় সংসদে আইন-শৃঙ্খলাখাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছিল ১৭ কোটি টাকা। ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদে ২৯ কোটি টাকা, সপ্তম সংসদে ১৮ কোটি টাকা, অষ্টম সংসদে ৪২ কোটি টাকা, নবম জাতীয় সংসদে ৯৮ কোটি এবং দশম জাতীয় সংসদে ১৮৩ কোটি টাকা। আর আগামী একাদশ সংসদের জন্য ৭০২ কোটি টাকা।
সারাবাংলা/জিএস/এমআই