মামা নাইমা হাঁইটা যান
৬ জানুয়ারি ২০১৮ ১৭:০৮
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: বেলা সাড়ে ১১টা। ধানমন্ডি, ল্যাবএইড মোড় থেকে গন্তব্য পল্টন। ছুটির দিন কতক্ষণ আর লাগবে? তবু তাড়া থাকায় সিএনজি-অটোরিকশায় চড়ে ছিলেন এক কবি। কিছুদূর যেতে-না যেতেই সিএনজি-অটোরিকশা গেলো জ্যামে আটকে। কেউ জানে না সামনে কী হয়েছে, কতক্ষণ একই জায়গায় বসে থাকার পরে তখন ওয়েটিং চার্জই একশ’ টাকা এসে গেছে। চালকই বুদ্ধি দিলেন, মামা নাইমা যান, কতক্ষণ আর বইসা থাকবেন!
বলছিলেন ধানমন্ডি থেকে আসা একজন উদ্যোগতা। সিএনজি ছেড়ে কিছুদূর হেঁটে, আবার রিকশায় চেপে আবার হেঁটে যখন গন্তব্য এসে পৌঁছালেন তখন বাজে বেলা আড়াইটা। যার সঙ্গে কাজ ছিল ততক্ষণে তিনিও ধরেছেন বাড়ির পথ।
একই গল্প মগবাজার থেকে জাহাঙ্গীর গেটের পথে যাওয়া এক বাসযাত্রীর। ঘণ্টাখানেক এক জায়গায় বসে থেকে অবশেষে রণে ভঙ্গ দেন তিনি। বাংলা মোটরে বাস থেকে নেমে উল্টো হেঁটে আবার বাসায় ফিরে যান বাড়ি।
আজ ছাত্রলীগের ৭০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা জুড়ে চলছে আনন্দ মিছিল। নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বের হওয়া আনন্দ মিছিল বের হয়ে জমায়েত হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এরপর সমাবেশ শেষে আবার শোভাযাত্রাসহ মিছিল প্রদক্ষিণ করছে নগরী জুড়ে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এই ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে জানা যায়, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল গত ৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার। জন দুর্ভোগ এড়াতে তারা আজ শনিবার আনন্দ র্যালি বের করেন।
কয়েকজন পথচারী অভিযোগ করেন, ‘যে ছাত্রলীগের হাত ধরে বাংলাদেশের জন্ম- সেই ছাত্রলীগ তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে হিন্দি গান বাজাচ্ছে।’ ছাত্রলীগ তাদের আদর্শিক জায়গা থেকে সরে যাচ্ছে কি না এমন প্রশ্নও তোলেন কেউ কেউ।
দুইদিন পরে বের হওয়া আনন্দ র্যালি কমাতে পারেনি নগরীর মানুষের দুর্ভোগ। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত অধিকাংশ মানুষের আজ অফিস খোলা। সরকারি স্কুলগুলোতে যথারীতি ক্লাস চলছে। পথে বের হওয়া মানুষেরা ভোগ করেছেন অবর্ণনীয় দুর্ভোগ।
বনশ্রী থেকে মৌচাকের পথে আসা একজন যাত্রী জানান, যানজট এড়ানোর জন্য তিনি নিয়মিত মোটরবাইক রাইড সার্ভিস ব্যবহার করেন। আজ পথে এতই জট যে মোটরবাইক দিয়েও আসা যাচ্ছে না। অনেক অলিগলি পেরিয়ে যখন গন্তব্য পৌঁছাতে পেরেছেন তখন সময় তো দ্বিগুণ নষ্ট হয়েছেই, খরচ হয়েছে দ্বিগুণ টাকা।
শিশুদের নিয়ে যারা বের হয়েছিলেন তাদের ভুগতে হয়েছে আরও কয়েকগুণ।
সারাবাংলা/এমএ/এটি