Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বংশালে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া শহীদ বুদ্ধিজীবীর বাড়ি দখলের অভিযোগ


৩১ অক্টোবর ২০১৮ ১৬:৫২

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: রাজধানীর বংশাল থানা এরাকার নবাবপুরে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া এক শহীদ বুদ্ধিজীবীর বাড়ি দখলের অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের অভিযোগ, লালবাগ বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহীম খান ও বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুর রহমানের প্রত্যক্ষ মদদে স্থানীয় বিএনপি নেতা জাবেদ ও তার ভাই আবেদ রাতের বেলা সন্ত্রাসী নিয়ে বাড়িটি দখল করে।

বুধবার (৩১ অক্টোবর) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে (ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা এসব অভিযোগ করেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবীর ছোটভাই আজহারুল হক খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘১৯৭১ সালে তার বড় ভাই কুমিল্লার তৎকালীন জেলা প্রশাসক এ কে এম শামসুল হক খান পাক বাহিনীর হাতে নিহত হন। পরে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার মা মাসুদা বেগমকে নবাবপুরের ২২১ নম্বর হোল্ডিংয়ের অর্পিত সম্পত্তি লিজ হিসেবে প্রদান করেন। মায়ের মৃত্যুর পর ওই সম্পত্তি তার পরিবারের অপর সদস্যদের নামে সরকার লিজ প্রদান করে। কিন্তু গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় স্থানীয় বিএনপি নেতা জাবেদ উদ্দিন শেখ ৩০ থেকে ৩৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে ওই বাড়ির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়।’

ওই রাতে ভোর ৪টা পর্যন্ত তাণ্ডব চালিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের জিনিসপত্র ট্রাকে করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আজহারুল হক খান বলেন, ‘পরদিন স্থানীয় বংশাল থানার ওসিকে বিষয়টি জানালে তিনি তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। ডাকাতি মামলা দিতে গেলে ওসি সেটিও নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে বিষয়টি ঢাকা জেলা প্রশাসককে জানালে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে বংশাল থানার ওসিকে তিনি একটি চিঠি দেন। কিন্তু ওসি জেলা প্রশাসকের সেই চিঠিকেও তাচ্ছিল্য করে কথা বলতে থাকেন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘পুলিশের নিস্ক্রিয়তার বিষয়টি পরে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, লালবাগ বিভাগের ডিসি ইব্রাহীম খান ও বংশাল থানার ওসি শহীদুর রহমান বিএনপি নেতা জাবেদ উদ্দিনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা খেয়েছেন। এও জানতে পারি যে, শহীদ বুদ্ধিজীবীর জায়গা দখল করে সেখানে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে জাবিন টাওয়ার। সেই টাওয়ারেরে ফ্লোরের ভাগও দেওয়া হবে ওই ডিসি ও ওসিকে।’

সংবাদ সম্মেলনে শহীদ বুদ্ধিজীবীর ছোটভাই আজহারুল হক খান বলেন, ‘প্রস্তাবিত জেবিন টাওয়ারের নির্মাণকাজ বন্ধ করে শহীদের নামে বরাদ্দ পাওয়া বাড়িটি উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের হামলায় বেহাত হওয়া প্রায় ৫ কোটি টাকার মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ায় বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সবার সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- নবাবপুর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার মঈনুর রহমান জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক মো. নূরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী সুলতান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপনসহ আরো অনেকে।

জানতে চাইলে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুর রহমান বলেন, ‘এরকম ঘটনা একটি ঘটেছে। ঘটনার পর থানায় মামলা করতে এলে মামলা গ্রহণ করা হয়। সেই মামলার তদন্তকাজ চলছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ টাকা খেয়ে বিএনপি নেতার হয়ে কাজ করার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে লালবাগ বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহীম খান বলেন, ‘এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’

তবে, সন্ত্রাসী কায়দায় বাড়ি দখলের বিষয়ে জানতে চেয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা জাবেদ উদ্দিনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইউজে/এমও

দখল বিএনপি বুদ্ধিজীবী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর