নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় সরকারের ব্যাপক কর্মসূচি রয়েছে: চুমকি
৩১ অক্টোবর ২০১৮ ২২:০২
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, শিশুদের অবহেলার সুযোগ নেই। তাদের সঠিকভাবে বিশেষ সুযোগ সুবিধা দেওয়ার লক্ষে কাজ করছে সরকার। শিশুরা রাস্তায় থাকবে না। নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় সরকারের ব্যাপক কর্মসূচি রয়েছে।
আজ বুধবার (৩১ অক্টোবর) মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির আয়োজনে সাগর-রুনী মিলনায়তনে ‘নারী ও শিশুর সুরক্ষায় সাংবাদিকদের ভূমিকা শীর্ষক’ এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক ড. আবুল হোসেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ডিআরইউর নারী বিষয়ক সম্পাদক ঝর্ণা মনি, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক মো. মহসিন হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডিআরইউ-এর সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ। কর্মশালায় রিসোর্স পার্সন হিসাবে বক্তব্য রাখেন, সারাবাংলা ও গাজী টেলিভিশনের এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ও নিউইয়র্ক টাইমস বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের স্ট্রিঙ্গার জুলফিকার আলি মাণিক।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম-এর প্রকল্প পরিচালক ড. আবুল হোসেন।
মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, আমরা একটি সুন্দর দেশ ও সুন্দর সমাজ চাচ্ছি। আমাদের চারপাশে যে জটিলতাগুলো রয়েছে সেগুলো মোকাবেলা করতে হবে। সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আর সে লক্ষে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সরকার চাচ্ছে, নারী ও শিশুদের প্রতি নির্যাতন বন্ধ হউক। তবে নারী ও শিশুর সুরক্ষা দেওয়া কারও একার পক্ষে সম্ভব না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা করি, তেমনি সমাজের সুশীলসহ সাংবাদিকদের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করতে চাই।
সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপণূর্ণ মন্তব্য করে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, সাংবাদিকদের একটা নিউজের মাধ্যমে সহজেই ঘটনাটি সবার কাছে চলে যায়।
শিশু রাজনকে নির্যাতনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এভাবেই ভালা উদ্যোগগুলো প্রচার করলে মানুষ সজাগ হবে এবং এতে করে সচেতনতা বাড়বে। মানুষের কাছে ভালো কাজ পৌঁছে দিলে ভালো হয়, তাতে করে তারা জানতে এসব সর্ম্পকে জানতে পারে।
তিনি বলেন, নারী সব সময় শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব দিক থেকে দুর্বল হয়ে আছে। তা ছাড়া নারীদের সবার আগে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বি হতে হবে আর তাই আমরা নারীদের স্বাবলম্বী ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করতে প্রায় ২ কোটি নারীকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। শতভাগ সমস্যা হয়তো সমাধান করা দূরুহ ব্যাপার, তবে আমরা ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। কিন্তু সবাইকে সচেতন হতে হবে। দেশে আইন আছে। আইনের প্রয়োগ করতে হবে এবং সামাজিক জটিলতাগুলোকে ওভারকাম করতে পারলেই একটি সুন্দর সমাজ পাবো আমরা।
একইসঙ্গে কর্মজীবী নারীদের সন্তানদের জন্য ডে-কেয়ার নীতিমালা করা হচ্ছে জানিয়ে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ৯৮টি ডে-কেয়ার সেন্টার করেছি এবং আরও অনেকগুলো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ডে-কেয়ার আইন করবো, নীতিমালা করতে যাচ্ছি এ সংক্রান্ত যেন কর্মজীবী মায়েরা তাদের কাজে মনোযোগ দিতে পারেন আরও, সন্তানদের জন্য যেন তাদের দুশ্চিন্তা না করতে হয়, বলেন প্রতিমন্ত্রী।
অন্যদিকে, নারীদের সুরক্ষায় গণপরিবহনগুলোতে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে জানিয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম এনডিসি বলেন, বাসে যদি কেউ অনৈতিক কাজ করতে চায়, তার ছবি উঠে থাকবে এবং তাতে করে অপরাধীর বিচার করা সহজ হবে, সে আর ওই কাজটা করার সাহস পাবে না। আমরা নারীদেরকে যেমন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে চাই তেমনি সামাজিক সুরক্ষাও দিতে চাই। আর এজন্য যে কোনো অপরাধে অপরাধীদের শাস্তির সংবাদ বেশি করে প্রচার করতে হবে। প্রচারটা বেশি হলে, ফলাও করে দিলে অপরাধীরা ভয় পাবে।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্য ৫০ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
সারাবাংলা/জেএ/এমআই