যুক্তফ্রন্টের দাবিগুলো মেনে নেওয়া হয়েছে: কাদের
২ নভেম্বর ২০১৮ ২৩:১৯
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: সংলাপে যুক্তফ্রন্ট যে দাবিগুলো করেছে তার সবগুলোই সরকারের পক্ষ থেকে মেনে নেওয়া হয়েছে। যুক্তফ্রন্ট যে দাবিগুলো করেছে তার একটাও সংবিধান বহির্ভুত নয়, বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গণভবনে সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক জোট যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।
আরও পড়ুন- ‘সংলাপ আশাবাদের দিকে যাচ্ছে’
ওবায়দুল কাদের আরও জানান, তাদের সঙ্গে সংলাপ শেষে আমরা মনে করছি বর্তমান সরকারের অধিনে নির্বাচনে যেতে তারা আগ্রহী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার বক্তব্য শুনেছেন। প্রধানমন্ত্রী সবার সাথে কথা বলেছেন। তাদের একজন ছাড়া বাকি ১৯ জন কথা বলেছেন। সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। আমাদের মধ্যে কথা বলেছেন মাত্র দুজন তোফায়েল আহমেদ এবং মঈনুদ্দিন খান বাদল। আমাদের উভয়পক্ষের একই অভিন্ন সুর ছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী গুণ ও আদর্শ। তারা যা বলতে চেয়েছেন সবকিছুই আমাদের নেত্রী মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন এবং শেষে তাদের দাবি তাদের দাবির এগুলোই মেনে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন- সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে রাজি, সংলাপ শেষে যুক্তফ্রন্ট
নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ সুবিধা। সংসদের বিষয় তারা বলেছেন হয় ভেঙে দিতে হবে নয় নিষ্ক্রিয় করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিষ্কারভাবে বলেছেন, শেষ হয়ে গেছে। এখন নিষ্ক্রিয় আছে। তিনি বলেন, নির্বাচনে কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। মন্ত্রীরা ফ্লাগ ব্যবহার করতে পারবে না। এমপিরা কোনো উন্নয়ন বরাদ্দের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন বা উদ্বোধন করবেন না। এমপি মন্ত্রীরা নিজ নিজ এলাকায় উন্নয়ন বরাদ্দের কাজ শেষ করে ফেলেছেন। আজকেও ১৯৬টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটা লেভেল প্লেইং।
ওবায়দুল কাদের জানান, তারা বলেছে নির্বাচন কমিশনের আচরণ বিধিতে, সেখানে মন্ত্রীরা পতাকা ব্যবহার করতে পারবে না। এমপিদের এমপি হিসেবে কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। উদ্বোধন করা যেমন- এখন কেন একনেকে এতেগুলো প্রজেক্ট পাস হচ্ছে। পাস হচ্ছে এ কারণে শিডিউল ঘোষার পরে একনেক নতুন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করতে পারবে না।
আরও পড়ুন- সংলাপ নিয়ে আশাবাদ যুক্তফ্রন্টের
দুই নম্বরে তারা যেটা বলেছেন আমরা মেনে নিয়েছি। ‘নির্বাচনের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত কর্মচারীদের নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত করতে হবে। নির্বাচন কমিশন শতভাগ মহামান্য রাষ্ট্রপতির অধীনস্থ করতে হবে। তফসিল ঘোষণার পর এমপিগণ সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনো প্রকল্প উদ্বোধন বা প্রতিশ্রুতি যাতে না দিতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনীয় আইন করে মন্ত্রী ও এমপিদের সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রত্যাহার করতে হবে।’ অলরেডি (ইতিমধ্যে) এসব বিষয়গুলো ডান (করা হয়েছে)। এগুলো গতবারও ছিল। এবারো থাকবে। সরকারি দলের প্রর্থীদের বিল বোর্ড, ব্যানার, পোস্টার অপসারণ বিধি অনুসারেই অপসারণ করতে হবে।
আরও পড়ুন- সংলাপে যুক্তফ্রন্টেরও ৭ দফা দাবি
তিনি নম্বরে দাবিটা আংশিক মেনে নেওয়া হয়েছে। সেটা হচ্ছে- ‘নির্বাচনে সকল প্রকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার অথবা বর্তমান সরকারের নির্বাচন বিষয়ে সম্পূর্ণ ক্ষমতা সীমিত করা।’ এটাতে আমরা একমত হয়েছি। অলরেডি (ইতিমধ্যে) সীমিত হয়ে গেছে। এ দেশে সেনাবাহিনীকে নিয়ে অনেক খেলা হয়েছে, বিতর্ক হয়েছে। অথচ এই সেনাবাহিনীর জন্য দেশে বিদেশে আমরা প্রশংসিত। তাই নির্বাচনের বিতর্কের মধ্যে সেনাবাহিনীকে আনা যাবে না। নির্বাচন নিয়ে যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে অত্যন্ত গঠনমূলক ও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আমরা মনে করছি, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। তারা যে দাবিগুলো এনেছে, তার মধ্যে অধিকাংশ দাবি আমরা মেনে নিয়েছি। তাদের আলোচনা থেকে বোঝা গেছে, সরকার পরিবর্তন বা নির্বাচনকালীন সরকারের কোনো দাবি তাদের নেই।
আরও পড়ুন-
সংলাপে যুক্তফ্রন্টের যারা থাকছেন
বিকল্পধারাও সরকারের সঙ্গে সংলাপ চায়
৩ ঘণ্টায় শেষ হলো ১৪ দল-যুক্তফ্রন্ট সংলাপ
গণভবনে ঢুকতে শুরু করেছেন যুক্তফ্রন্ট নেতারা
সংলাপে বসতে প্রধানমন্ত্রীকে এবার বিকল্পধারার চিঠি
গণভবনে নৈশভোজে লাল আটার রুটি চান বি. চৌধুরী
দাওয়াত পেলেন বি. চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ ২ নভেম্বর
অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চাই, সংলাপের সূচনায় প্রধানমন্ত্রী
সারাবাংলা/এমএমএইচ/এমআই