স্যুটকেসে খাশোগির লাশ সরিয়েছিল যুবরাজের সহযোগীরা
৪ নভেম্বর ২০১৮ ১৭:৪৪
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী সৌদি সাংবাদিক ও কলামিস্ট জামাল খাশোগির মৃতদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে পাঁচটি স্যুটকেসে ভরে দেশের বাইরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ কাজে জড়িত ছিলেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অন্তত তিন সহযোগী। তুরস্কের সরকারপন্থী পত্রিকা দ্য ডেইলি সাবাহ’কে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে ডেইলি সাবাহ রোববার (৪ অক্টোবর) জানিয়েছে, খাশোগিকে হত্যার পর ওই দিনই তার মৃতদেহ স্যুটকেসে ভরে সৌদি দূতাবাসের কাছে অবস্থিত সৌদি দূতের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগেই জানা গেছে, খাশোগিকে হত্যার জন্য ১৫ সদস্যের একটি দল সৌদি থেকে ওইদিন ইস্তাম্বুলে আসে। কর্মকর্তারা জানান, ওই দলের প্রধান তিন সদস্য হলেন— মাহের মুতরেব, সালাহ তুবেইগি ও থার আল-হারবি। তারা সবাই যুবরাজ সালমানের সহযোগী। তারাই হত্যার পর মৃতদেহটি খণ্ড-বিখণ্ড করে দূতাবাসের প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে নিয়েছে।
কর্মকর্তারা আরও জানান, মুতরেব সরাসরি যুবরাজের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তুবেগি ছিলেন সৌদি সায়েন্টিফিক কাউন্সিল অব ফরেন্সিকসের প্রধান ও সৌদি সেনাবাহিনীর একজন কর্নেল। আর আল-হারাবি ছিলেন সৌদি রয়াল গার্ডের একজন লেফটেনান্ট। গত বছর জেদ্দায় যুবরাজের প্রাসাদ রক্ষায় সাহসিকতা প্রদর্শনের জন্য তাকে এই পদে উন্নীত করা হয়।
এর আগে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের এক সহকারী বলেছিলেন, হত্যার পর খাশোগির মৃতদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে এসিডে গলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরদোয়ানের উপদেষ্টা ইয়াসিন আকতে বলেন, আমি বিশ্বাস করি তাকে হত্যার পর এসিড দিয়ে এমনভাবে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে যাতে হত্যার কোন চিহ্ন খুঁজে না পাওয়া যায়। তবে নিজের দাবির ক্ষেত্রে কোন প্রমাণ সরবরাহ করতে পারেননি তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাসে বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে যান। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। ওই সময় থেকেই তুরস্কের পক্ষ থেকে বলা হয়ে আসছিল, খাশোগিকে দূতাবাসের ভেতরে হত্যা করা হয়েছে। প্রায় এক সপ্তাহ পর জানা যায়, খাশোগিকে দূতাবাসের ভেতরেই হত্যা করা হয়। এরপরও সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার কোনো ধরনের সম্ভাবনা অস্বীকার করা হয়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সম্প্রতি জানিয়েছেন, খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ আসে সরাসরি সৌদি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। পরে বিভিন্ন ধরনের তথ্যপ্রমাণ বের হতে থাকলে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পরবর্তী সময়ে সৌদি আরবও স্বীকার করতে বাধ্য হয়, খাশোগি হত্যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। এসময় অভিযোগ ওঠে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানই ওই হত্যা অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন-
খাশোগি হত্যায় সৌদি সরকারকে দায়ী করলেন এরদোয়ান
১১ মাস পর মুক্তি পেলেন সৌদি প্রিন্স খালেদ
জামাল খাশোগিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে: তুরস্ক
এবার ‘সন্ধান মিলল’ খাশোগির মৃতদেহের
খাসোগি ইস্যুতে তুরস্কের সঙ্গে সৌদির আলোচনা
সারাবাংলা/আরএ/টিআর