ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ব্যারিস্টার মইনুলের জামিন নাকচ
৫ নভেম্বর ২০১৮ ১৬:৩৬
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সদস্য সুমনা আক্তার লিলির দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন নাকচ করেছেন আদালত।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের অনুপস্থিতিতে সোমবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ জামিন না মঞ্জুরের এই আদেশ দেন। আসামির পক্ষে জামিন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া ও জয়নুল আবেদীন মেজবাহ।
শুনানিতে সানাউল্লাহ বলেন, আসামি যা কিছু বলেছেন মাসুদা ভাট্টিকে, ইতোমধ্যে সে বিষয়ে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু মামলার বাদী সুমনা আক্তার লিলিকে তো কিছু বলেননি। তাহলে তিনি কিভাবে এই মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় জামিনযোগ্য অপরাধ হয়েছে। জামিন পাওয়া আসামির অধিকার, তাই আসামি জামিন চেয়ে আবেদন করেছে।
অন্যদিকে জামিনের বিরোধিতা করেন মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু ও সালমা হাই। বাদীর পক্ষের সালমা হাই বলেন, উনি একজন শিক্ষিত মানুষ হয়ে এমন কথা বলতে পারেন না। আসামির কথার মধ্য দিয়ে গোটা জাতি অপমানিত হয়েছে। সেদিক থেকে প্রতিটা ঘর থেকে মামলা হওয়া দরকার।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেন আদালত। এর আগে গত ১ নভেম্বর মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়াউল ইসলাম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। এই মামলার আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আদালত দিন ঠিক করে দিয়েছেন।
মইনুল হোসেন সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলায় সুমনা আক্তার লিলি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। ওই দিন বিচারক মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য গুলশান থানাকে নির্দেশ দেন।
মামলায় বাদীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন গত ১৬ অক্টোবর ৭১ টেলিভিশনের লাইভ টেলিকনফারেন্সে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির প্রশ্নের জবাবে তাকে ‘চরিত্রহীন’ বলেন। সেখানেই তিনি থেমে থাকেননি। এরপর তিনি গত ১৮ অক্টোবর ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বলেছেন, শুধু তিনি চরিত্রহীন বলছেন না, আরও অনেক মানুষ তাকে চরিত্রহীন বলছেন। তার ওই সমস্ত বক্তব্য দেশের সমস্ত ইলেকট্রনিক মিডিয়া, পত্রিকা, অনলাইন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তার ওই মানহানিকর বক্তব্যে শুধু সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির মানহানি ঘটেনি। একজন নারী হিসেবে বাদীরও মানহানি হয়েছে। যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ (২) ও ২৯(২) ধারার অপরাধ পড়ে।
এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০টির বেশি মামলা হয়েছে। মাসুদা ভাট্টি নিজেও ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলা করেছেন। রংপুরে হওয়া একটি মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গত ২২ অক্টোবর গ্রেফতারের পর গত ২৩ অক্টোবর ঢাকা সিএমএম আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।
সারাবাংলা/এআই/এটি