মন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণের ১৬ দিন পর আরও ১০ জলদস্যু আটক
৫ নভেম্বর ২০১৮ ২০:৫৩
।। ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
কক্সবাজার : কক্সবাজারের দ্বীপ এলাকা মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার ১২ জলদস্যুসহ ৪৩ সন্ত্রাসী স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে গত ২০ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্রসহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তারা মন্ত্রীর কাছে তুলে দেন ৯৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ও সাত হাজার ৬৩৭ রাউন্ড গুলি।
র্যাবের প্রচেষ্টায় এতবড় সন্ত্রাসী দল অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করায় স্বস্তি ফিরে এসেছিল জলদস্যুর নির্যাতনে অতিষ্ট জেলে পরিবারসহ উপকূলবাসীর। কিন্তু এই আত্মসমর্পনের ১৬ দিনের ব্যবধানে অস্ত্রসহ আরও ১০ জলদস্যুকে আটক করায় হতাশ জেলার সচেতন মহল। সাগরকে জলদস্যু মুক্ত করতে প্রশাসনকে আরো কঠোর হতে বলছেন তারা।
কক্সবাজার র্যাব-৭ জানিয়েছে, সোমবার (৫ নভেম্বর) সকালে বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়ার দুরবর্তী পয়েন্টে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে অস্ত্র সহ ১০ জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছে ৬টি অস্ত্র ও ৩৭ রাউন্ড গুলি পাওয়া যায়। জলদস্যুদের কবল থেকে উদ্ধার করা হয় অপহৃত তিন মাঝিমাল্লাকে।
র্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া এলাকার আাব্দুল গফুর (২২), সাইফুল ইসলাম (২৮), মোহাম্মদ তারেক (৩০), আবুল হোসেন (২৫), ছৈয়দুল ইসলাম (৩৫), কুতুবদিয়া উপজেলার মো. করিম (২৫), তাহের মিয়া (২৫), মহেশখালী কালারমারছড়া এলাকার মো. জুয়েল (২৬), নুরুল হক (৩২) ও বান্দরবান জেলার সিরাজুল ইসলাম (৪৫)।
জলদস্যুর কারণে এখনও আতংকিত উপকূলবাসী। মহেশখালীর বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, বর্তমান সরকারের আমলে মহেশখালী দিন দিন উন্নত হচ্ছে। আর এমন একটি দ্বীপের আশপাশে জলদস্যু কোনভাবে কাম্য নয়। তাই প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে এই জলদস্যুদের বিরুদ্ধে।
জাফর আলম নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘জলদস্যুদের কারণে মাঝিমাল্লা থেকে শুরু করে বোটের মালিকসহ সবাই আতংকিত। এই ক্ষেত্রে সোনাদিয়া পয়েন্টে যদি একটি পুলিশ ক্যাম্প করা হয়। তখন জলদস্যু মুক্ত হবে ওই পয়েন্ট থেকে।’
কক্সবাজার র্যাব-৭ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাজান জানান, জলদস্যুদের ঘোষণা দেওয়া আছে যে আত্মসমর্পন করলে তাদের স্বাভাবিক জীবনের সুযোগ করে দেওয়া হবে। কিন্তু কিছু জলদস্যু ভুল করে এখনও তা করছে না। আজকের অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া জলদস্যুরা তিনটি বাহিনীর সদস্য। তারা গত রাতে গভীর সাগরে দুটি মাছ ধরার ট্রলার ডাকাতি করে। ডাকাতি শেষে জলদস্যুরা ওই দুই ট্রলারের তিনজন মাঝিমাল্লাকে অপহরণ করে। পরে অন্য জেলেদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে র্যাব সাগরে অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে অপহৃত তিন মাঝিমাল্লাকে উদ্ধার করে র্যাব। এসময় ১০ জলদস্যুকে আটক করা হয়। পরে জলদস্যুদের কাছ থেকে ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৩৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এসময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে আরও একটি ট্রলারে করে বেশ কয়েকজন জলদস্যু পালিয়ে যায়।
সারাবাংলা/এসএমএন