মহাজোট থাকছে, সংলাপে আসন চায়নি জাপা
৫ নভেম্বর ২০১৮ ২১:৪১
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সঙ্গে সংলাপে আসন ভাগাভাগি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে আগামীতে মহাজোট হিসেবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং সরকার গঠন করা হবে।
সোমবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত এই সংলাপের পর আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতারা এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন- সংলাপে অংশ নিতে গণভবনে জাতীয় পার্টি
সংলাপ শেষে গণভবনের সামনে সাংবাদিকদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ব পরিবেশে সংলাপ হয়েছে। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যতগুলো সংলাপ হয়েছে, সবগুলোই ইতিবাচক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আইনসম্মতভাবে ও সংবিধানসম্মতভাবে নির্বাচন হবে। সংলাপে আসন বণ্টনের বিষয় নিয়ে এখনও আলোচনা হয়নি। এটা নিয়ে কোনো সমস্যাও হবে না। আমরা মহাজোট ও ১৪ দলসহ একসঙ্গে সরকার গঠন করব।
সংলাপও চলবে, আন্দোলনও চলবে— বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির দৌড় আমাদের জানা আছে। গত ১০ বছরে তারা কী আন্দোলন করেছে, তা আমাদের দেখা আছে। এই তিন দিনের মধ্যে তারা কী করবে, সেটাও আমরা জানি।
তিনি আরও বলেন, হুমকি-ধমকি দিয়ে আন্দোলনের নামে চাপ তৈরির চেষ্টা করে লাভ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংলাপের বসতে কোনো অনীহা নেই। বিএনপি চাইলে আবার সংলাপে আসতে পারে। শেখ হাসিনার দরজা বরাবরই খোলা। জঙ্গি ও সন্ত্রাসী ছাড়া যে কেউ আবেদন করলে তার জন্য নেত্রীর (শেখ হাসিনা) দরজা খোলা।
সংলাপ শেষে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, সংলাপে দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে। ভালো আলোচনা হয়েছে।
নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না— জানতে চাইলে জি এম কাদের বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনোসংখ্যক আসন আমরা চাইনি। সরকার যা দেয়, তাতেই আমরা খুশি। তবে আগের মতো এবারও জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে। আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলেও জাতীয় পার্টি আশাবাদী বলে জানান তিনি।
আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি জাতীয় পার্টির আছে কি না— জানতে চাইলে দলটির কো-চেয়ারম্যান বলেন, ঠিক এখনই আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে প্রস্তুত না। তবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে হলে আমরা পারব। সেটা অসম্ভব কিছু নয়।
তিনি আরও জানান, জাতীয় পার্টি সরকারের সঙ্গে ছিল, ভবিষ্যতেও সরকারের সঙ্গেই থাকবে।
এর আগে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হয় সংলাপ। সংলাপে সূচনা বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের অগ্রযাত্রায় সরকারের পাশে থাকায় জাতীয় পার্টিকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, যেহেতু সামনে নির্বাচন এবং নির্বাচনকে সামনে রেখে সব দলের সঙ্গে মতবিনিময় করছি; আমরা চাই একটি অর্থবহ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। কারণ বাংলাদেশে আজকে এগিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন মানুষের ভোটের অধিকার, সে অধিকার তারা প্রয়োগ করবে। আমরা নির্বাচিত প্রতিনিধি, আমাদের কাজ দেশের মানুষের সেবা করা এবং দেশকে উন্নত করা। আমরা সেভাবেই দেশকে উন্নত করেছি। এই উন্নয়নের ধারা যেন অব্যাহত থাকে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য এবং এই ধারাবাহিকতা আমাদের রাখতেই হবে।
সংলাপে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে ছিলেন দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। জানা গেছে, আজকের এই সংলাপে জাতীয় পার্টির ৩৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সবাই বক্তব্য রাখেন। এইচ এম এরশাদ, দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদেরসহ শীর্ষ কয়েকজন নেতা বক্তব্য রাখেন।
এর আগে, রোববার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ১৪ দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এরও আগে ২ নভেম্বর সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট এবং ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
সারাবাংলা/এসও/টিআর