Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জুরাইনে হত্যা: গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে পুলিশ


৬ নভেম্বর ২০১৮ ১০:১৭

।। উজ্জল জিসান,সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: রাজধানীর জুরাইনে বোনকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় একমাত্র বড়ভাই শেখ ইসলাম পাভেল নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে বখাটেরা। এ ঘটনায় পুলিশ পাঁচজনকে শনাক্ত করেছে। এরই মধ্যে হত্যার সাথে জড়িতদের ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশ।

সোমবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে শ্যামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী মিজানুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, শনিবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টার দিকে জুরাইন মাজারগেট এলাকায় ছুরিঘাতে মারা যায় পাভেল নামে এক যুবক। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা গেছে, বেড়াতে গিয়ে ছোটবোনকে উত্ত্যক্ত করায় পাভেল চর থাপ্পর মেরেছিল। তারই জের ধরে পাভেলকে ছুরিকাঘাত করে কয়েকজন বখাটে যুবক।

ওসি বলেন, রোববার (৪ নভেম্বর) রাতে এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে পাভেলের বাবা। এ ঘটনায় মোট পাঁচজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এরা হলেন, তুহিন, শাহীন, মাসুম, এরফান ও রাব্বি। তারা এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। তাদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

জুরাইন রেলগেট এলাকায় ভাড়া বাসায় (৪৪২/২) পরিবারের সাথে বাস করত পাভেল। তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর গ্রামে। তার বাবা মনির হোসেন একজন ট্রাকচালক।

বাবা মনির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ছেলেমেয়ের ভবিষ্যতের জন্যই ঢাকায় পরিবার নিয়ে থাকি। মেয়ে তামান্না নারায়ণগঞ্জ সরকারী তোলারাম কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ে। ছেলেও সরকারী কবি নজরুল ইসলাম কলেজে পড়ত। রাজনীতি করতে গিয়ে লেখাপড়া করতে পারেন নি। ৫৪ নং ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বড় হয়ে রাজনীতিবীদ হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। এমন ঘটনায় তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে মা নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান বাবা মনির হোসেন। তিনি ছেলে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

বিজ্ঞাপন

নিহত পাভেলের মামা রহমান মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, পাভেল সরকারী কবি নজরুল ইসলাম কলেজে পড়ত। কিছু একটা করবে বলে ভাবছিল। একই এলাকার মারিয়া নামের এক মেয়ের সাথে সম্পর্কেও জড়ায়। পরিবারের অমতেই দুজনে কাবিনও করেছিলেন। কিছু দিনের মধ্যে পরিবারের সম্মতি নিয়েই ঘরে তুলে নেওয়া হতো মারিয়াকে। ঢামেকের মর্গের সামনে মারিয়া আহাজারি করে বলছিলেন, “কাবিন হলো কিন্তু ঘর করা হলো না শ্বশুরবাড়িতে। এখন আমি কি নিয়ে থাকব।”

সোমবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মারিয়া সারাবাংলাকে বলেন, শনিবার (৩ নভেম্বর) আমার জন্মদিন ছিল। একটু আনন্দ করতে পাভেল, ননদ তামান্নাসহ আমি বিকেল বেলা ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। মাজারগেট এলাকায় তুহিন তামান্নাকে উত্ত্যক্ত করে। পাভেল এগিয়ে যায় তুহিনের কাছে। তখন তুহিন বলে, ভাই সরি আর হবে না। পাভেল তাকে বলে, তুমি এর আগেও অনেকবার কথা দিয়েছো কিন্তু কথা তো রাখো না। এই বলেই তুহিনকে চর থাপ্পড় মারে পাভেল।

এরপর রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আমি ও পাভেল মাজারগেট এলাকায় ছিলাম। তুহিনের সাথে শাহীনসহ আরও বেশ কয়েকজন তেড়ে এসে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে পাভেলকে ঢামেকে নেওয়া হলে পরদিন বেলা ১১ টার দিকে মারা যায়।

পাভেলের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, পাভেলের পেটে চারটি ছুরিকাঘাত ছিল। তার মধ্যে একটির আঘাতে নাড়ি বের হয়ে এসেছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/জেএএম

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

২৪ বলে ০ রানে জাকিরের লজ্জার রেকর্ড
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:১৮

সম্পর্কিত খবর