Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ক্যান্সার ও হৃদরোগে প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিতে হবে’


৬ নভেম্বর ২০১৮ ১৭:৫৮

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।। 

ঢাকা: বাংলাদেশে বর্তমানে মোট মৃত্যুবরণ করা মানুষের মধ্যে ৬৭ শতাংশ মানুষ মারা যান অসংক্রামক রোগে। বিদ্যমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চিকিৎসাকে গুরুত্ব দেয়া হলেও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। এক্ষেত্রে যথাযথ দায়িত্ব পালন করছেনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষও। ফলে মানুষ ক্যান্সার, হৃদরোগসহ নানা অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করছে। এতে সামগ্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেশের অর্থনীতি।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীতে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর আয়োজনে সংস্থার কার্যালয়ে আয়োজিত “অপ্রতিরোধ্য ক্যান্সার ও হৃদরোগ : পরিবেশ বিপর্যয় ও করণীয়” বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা।

পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে গোলটেবিলে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান, জাতীয় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক ডা. রশিদ-ই মাহবুব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী, পবা’র সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমান, দৈনিক প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি শিশির মোড়ল।

বক্তারা বলেন, দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া নগরায়ণ এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস, শরীরচর্চা, ব্যায়াম বা পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, অতিরিক্ত মোটা হওয়া, অনিয়ন্ত্রিত মাদক সেবন এবং ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার, পরিবেশ দূষণ, অনিরাপদ খাদ্য অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। তামাক ব্যবহার হৃদরোগ ও ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। আর বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষ তামাক ব্যবহার করেন।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি প্রকাশিত ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ ম্যাট্রিক্স অ্যান্ড ইভাল্যুয়েশনের জরিপ তুলে ধরে অনুষ্ঠানে বলা হয় ২৫০টি রোগ ও বিভিন্ন ধরনের জখমে ২০১৬ সালে বাংলাদেশে ৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯০ জনের মৃত্যু হয়। এ সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ২০৪০ সালে এই সংখ্যা ৩২ শতাংশ বেড়ে ১১ লাখ ২৩ হাজার ৪৫০ হবে।

একই প্রতিষ্ঠানের আরেকটি জরিপ থেকে জানা যায়, ১৯৯০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন রোগের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মানুষের মৃত্যুর প্রধান দুটি কারণের একটি হৃদরোগ।

অপরদিকে স্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক জার্নাল ল্যানসেটে বলা হয়- ২০১৩ সালে ১ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ ষ্ট্রোক, ১ লাখ ৬ হাজার মানুষ হার্ট অ্যাটাক ও ২৮ হাজার মানুষ উচ্চ রক্তচাপ জনিত হৃদরোগে মারা যায়। জাপানিজ জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল অনকোলজি (জেজেসিও)-র তথ্য অনুসারে বাংলাদেশে ১ কোটি ২৭ লাখ মানুষের দেহে অস্বাভাবিক কোষের বৃদ্ধি ঘটে চলেছে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যা নিওপ্লাসিয়া নামে পরিচিত। এ অবস্থা চলতে থাকলে ২০৩০ সাল নাগাদ ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকবে ২ কোটি ১৪ লাখ মানুষ।

আর এসব কারনে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু কমাতে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ অর্থাৎ- রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতি গুরুত্বারোপ করা জরুরি। এ জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক আইন ও নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত কতৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত এবং সকল অবকাঠামো জনবান্ধব করতে হবে। একইসঙ্গে পরিবেশের সব ধরনের দূষণ কমাতে অতিস্বত্ত্বর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলেও জানান বক্তারা।

তারা বলেন, জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্য (অস্বাস্থ্যকর খাবার, তামাক) উৎপাদন বন্ধ এবং এগুলোর উপর স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ আরোপ করতে হবে। পাশাপাশি তামাক কোম্পানিগুলো ও অন্যান্য বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর অস্বাস্থ্যকর খাবারের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সকল পণ্য সেবনে মানুষকে যেন আকৃষ্ট করতে না পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখাও জরুরি।

সারাবাংলা/জেএ/এমএস

বিজ্ঞাপন

সিইসি ও ৪ কমিশনারের শপথ আজ
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ০১:৩৩

আরো

সম্পর্কিত খবর