‘স্বাধীনতায় বিশ্বাসীরা চাইবেন না যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় আসুক’
৬ নভেম্বর ২০১৮ ২১:০১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীরা আবার ক্ষমতায় আসুক— এটা বাংলাদেশের জনগণ চায় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধাপরাধীদের সাজা দিয়েছি এবং সাজা কার্যকর করেছি। তারা আবার ক্ষমতায় আসুক, সেটা বাংলাদেশের জনগণ চায় না এবং আমরাও চাই না। যারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে, তারাও চাইবেন না যে যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় আসুক। এখন সামনে নির্বাচন। আমরা চাই, দেশের যে উন্নয়ন আমরা করেছি, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখে সেই উন্নয়নটাও যেন অব্যাহত থাকে।
মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর আগে তিনি সংলাপে অংশ নিতে স্বাগত জানান বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাদের।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে আনাটাই ছিল আমাদের লক্ষ্য। বড় কথা ছিল, দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি করা।
তিনি বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে ঠিক একই কায়দায় ২০০১ সালে নির্বাচনের পর অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর। যে ক্ষমতায় আসে, সেই বসে যেতে চায়। খালেদা জিয়া ১২টা মামলা দিয়েছিল সরকারে এসে। আবার দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেও আরও ৫/৬ টি মামলা দেয় আমার বিরুদ্ধে। এক/এগারো সরকার আমাকে ইলেকশন না করার প্রস্তাব দিয়েছিল। বিনিময়ে একটি মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব দেয় তারা। কিন্তু আমি একটি কথা জোর দিয়ে বলেছি, নির্বাচন হবে। জনগণ যাকে চাইবে, সেই ক্ষমতায় আসবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে আমরা যেখানে বাংলাদেশ রেখে এসেছিলাম, সেখান থেকে বাংলাদেশ আবার পিছিয়ে যায়। ২০০৮ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন বিশ্বমন্দা চলছিল। এর মধ্য দিয়ে আমরা এগিয়ে যাই। ২০১৩ সাল থেকেই নির্বাচন ঠেকানোর নামে অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন নাশকতা শুরু হয়। কিন্তু ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আপনারা যদি বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্রটা দেখেন, তাহলে নিশ্চয়ই এটা স্বীকার করতে বাধ্য হবেন যে আমরা উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার মতো কঠিন কাজটা এই সময়ের মধ্যে আমরা করতে পেরেছি। কারণ জনগণের সমর্থন ছিল। যে কারণেই যুদ্ধাপরাধের বিচার করার পাশাপাশি রায়ও কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছে সরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, এই জনসমর্থনের কারণেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। সে কারণেই আজ বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হার ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। আমরা আজ বিশ্ব উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। বিশাল জনগোষ্ঠী নিয়েও আমরা কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছি। এখন সামনে নির্বাচন। আমরা চাই দেশের উন্নয়নটা, গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত রাখতে। তাহলে দেশের উন্নয়নও অব্যাহত থাকবে।
এর আগে, সংলাপে অংশ নিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল গণভবনে পৌঁছায়। সংলাপে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত আছেন।
এর আগে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সংলাপের ধারাবাহিকতায় সংলাপে বসতে আগ্রহ জানায় বাম গণতান্ত্রিক জোটও। জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করতে তারা সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসতে আগ্রহী। পরে ৪ নভেম্বর আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানান, মঙ্গলবার এই জোটের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে গণভবনে।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাম গণতান্ত্রিক জোট শেখ হাসিনা সংলাপ