Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রধানমন্ত্রীর সংলাপ পর্ব শেষ, সিইসি’র তফসিল ঘোষণা আজ


৮ নভেম্বর ২০১৮ ০৮:৪২

।। জান্নাতুল ফেরদৌসী, নিউজ এডিটর ।।

 ঢাকা: বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে সংলাপ শেষ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা।

গতকাল (বুধবার) সম্মিলিত জাতীয় জোটের সঙ্গে বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আপনারা জানেন, আমরা এর আগে সংসদ নির্বাচন নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট ও যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। আশা করি, বৃহস্পাতিবার তফসিল ঘোষণা করা হবে। সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন ৮ নভেম্বর তফসিল দিয়ে ২০ ডিসেম্বরের দিকে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা নিয়েছে।

আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলন করে সংলাপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও তার জোটের অবস্থান তুলে ধরার কথা ছিল। কিন্তু অনিবার্য কারণে তা স্থগিত করা হয়।

দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সংলাপ শেষ হয়েছে। তবে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আর সংলাপ নয়, আলোচনা হতে পারে।

গত ১ নভেম্বর ১৪ দল ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে এই সংলাপ শুরু হয়। বুধবার সকালে গণভবনে এই দুই জোটের মধ্যে দ্বিতীয় দফা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। ড. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে জাতীয় ফ্রন্টের সঙ্গে ২ নভেম্বর, ১৪ দলীয় নেতাদের সঙ্গে ৪ নভেম্বর এবং এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটের সংলাপ ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে ৬ নভেম্বর ১২টি উল্লেখযোগ্য ইসলামিক দল ও ৮টি বাম দলীয় মোর্চা বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে ১৪ দলীয় জোটের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

গত ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় ৭ দফা দাবি এবং ১১ দফা লক্ষ্য নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ৩০ অক্টোবর সকালে আবদুস সোবহান গোলাপ প্রধানমন্ত্রীর চিঠি নিয়ে হাজির হন ড. কামালের বাসায়। চিঠিতে ১ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় ঐক্যফ্রন্টকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণভবনে ১ নভেম্বর সাড়ে তিন ঘণ্টার সংলাপে উভয় পক্ষের মোট ৪৩ জন নেতা অংশ নেন। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ থেকে ছিলেন মোট ২৩ জন। তারা হলেন, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, আবদুল মতিন খসরু, কাজী জাফরুল্লাহ, ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

এছাড়াও আওয়ামী লীগের ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, রমেশ চন্দ্র সেন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, আব্দুর রহমান, ড. আবদুস সোবাহান গোলাপ, ড. হাছান মাহমুদ ও অ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও মঈনুদ্দিন খান বাদল, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া এবং ওয়াকার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন সংলাপে অংশ নেন।

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সংলাপে ২১ জনের অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যেতে পারেননি। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে অংশ নেওয়া বাকি ২০ নেতার মধ্যে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস ও ড. মঈন খান। তাদের সঙ্গে ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও এস এম আকরাম; গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান ও অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিদ এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিকুল্লাহ। আরও ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন ও সহ-সভাপতি তানিয়া রব; ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মনসুর ও আ ব ম মোস্তফা আমিন এবং স্বতন্ত্র হিসেবে ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

সাড়ে তিন ঘণ্টার সংলাপ শেষে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা তিন ঘণ্টা সেখানে (গণভবন) ছিলাম। আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরেছি, অভিযোগের কথা, সেগুলো তুলে ধরেছি। সবার কথা শোনার পর প্রধানমন্ত্রী লম্বা বক্তৃতা দিলেন। বিশেষ কোনো সমাধান আমরা পাইনি। কেবল সভা-সমাবেশের বিষয়েই তিনি একটি ভালো কথা বলেছেন।

তবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আবারও বসা হবে। খালেদা জিয়ার বিষয়টি আইন-আলাদতের বিষয়। এটা আদালত দেখবেন। নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ হবে, এ আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি নেতাদের মামলার বিষয়েও তালিকা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করা হবে।

এরপর রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য ৪ নভেম্বর ফের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। চিঠিতে ড. কামাল হোসেন বলেন, গত ১ নভেম্বর সংলাপ হয়েছিল। কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের আলোচনা অসমাপ্ত রয়ে গেছে। এ জন্য আবারও আলোচনায় বসা জরুরি।

গতকাল (বুধবার) দুপুরে গণভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় সংলাপ হয়। সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সংসদ ভেঙে দিয়ে ১০ সদস্যের নির্দলীয় উপদেষ্টা সরকার গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের প্রস্তাবও ছিল ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ঐক্যফ্রন্টের এমন প্রস্তাব সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে পড়ে না।

সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে গিয়ে কোনো অপশক্তিকে ফাঁক-ফোকর দিয়ে অনুপ্রবেশের সুযোগ করে না দিতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যেটা আপনাদের জন্য ক্ষতি ডেকে আনতে পারে, আমাদের সবার জন্য সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। কিছু কিছু প্রস্তাব আছে এগুলো মেনে নিতে আমাদের আপত্তি নেই। তিনি আরও বলেন, আমরা আশাবাদী, একটা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। এমনকি বৈঠকের পর পারসোনালি তাদের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে তিনি (শেখ হাসিনা) কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, আপনারা আসুন, আমি একটা অবাধ এবং সুষ্ঠ ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন দেখতে চাই, এ ব্যাপারে সহযোগিতা করুন।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার। তবে তফসিল ঘোষণার পর এ সরকারের কার্যপরিধি অনেক কমে যাবে। একইসঙ্গে তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রী-এমপিদের সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা না নেওয়ার নিদের্শ দেন তিনি।

সংলাপে ইতিবাচক যুক্তফ্রন্ট

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ শেষে সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি. চৌধুরী) জানান, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হলে যুক্তফ্রন্ট অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নেবে। তিনি বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে জনগণের সাংববিধানিক অধিকার আমরা কায়েম করবই। সংলাপে প্রধানমন্ত্রী আমাদের বেশিরভাগ দাবি-দাওয়ার বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন।

প্রার্থীদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, অর্থাৎ সবার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে আমাদের দাবির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী একমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের অধীনে থাকবে না, তফসিল ঘোষণার পর রাষ্ট্রপতির অধীনেই থাকবে। এসব ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কোনো দ্বিমত নেই। নির্বাচনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত কর্মচারীরা নির্বাচন কমিশনের অধীনেই ন্যাস্ত থাকবে। তফসিল ঘোষণার পর এমপিরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনো প্রকল্প উদ্বোধন বা প্রতিশ্রুতি যেন না দিতে পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী রাজি হয়েছেন। তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রী ও এমপিদের সরকারি সুযোগ-সুবিধাও প্রত্যাহার করা হবে। সংলাপের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সেনাবাহিনী উপজেলা পর্যায়ে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে, বলেন বি. চৌধুরী।

সংলাপ সন্তোষজনক, আসতে পারে সারপ্রাইজ

৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় সংলাপ শেষে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী অফিসে এক ব্রিফিংয়ে দলের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, সম্মিলিত জাতীয় জোটের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংলাপ সফল হয়েছে। আলোচনা অত্যন্ত সন্তোষজনক। সংলাপে আমরা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কথা বলেছি। তবে নির্বাচন অবশ্যই সংবিধানের আলোকে হতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের কথা বলেছি। দেশের সচেতন মানুষ মাত্রই এই প্রস্তাব সমর্থন করেন। আমরা এই প্রতিশ্রুতির প্রত্যাশা করি— আগামী সংসদে আমরা এই প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের আইন পাশ করব। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের নিশ্চয়তা দেওয়ার পর কে নির্বাচনে আসবে বা কে আসবে না— তা দেখার কোনো অবকাশ নেই। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে  সারপ্রাইজ আসতে পারে।

সংলাপ প্রক্রিয়া শেষে তফসিল চায় বাম গণতান্ত্রিক জোট-ঐক্যফ্রন্ট

আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের চলমান সংলাপ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর যেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়, সে দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। বুধবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে এই আবেদন জানিয়েছেন জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠির কপি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আসেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতা আবদুল্লাহ আল ক্বাফী ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নির্বাহী সদস্য খালেকুজ্জামান লিপন। চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন। অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য চলমান সংলাপ ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। সংলাপ শেষ হওয়ার আগে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে তা পুরো প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। সে কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করার জন্য বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হচ্ছে।

একই দাবিতে সোমবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা।

বৈঠক শেষে তিনি জানান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি (জেএসডি) আ স ম আবদুর রব বলেছেন, তফসিল পেছানোর বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আমাদের আশ্বস্ত করেনি। তবে আমাদের মনে হয়েছে, তারা এই সিদ্ধান্তে অটল না। আশা করছি, তারা তফসিল ঘোষণা পেছাবে। আগামী ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত যেহেতু সময় আছে এবং তফসিল ঘোষণার তারিখ পরিবর্তনের নজিরও রয়েছে অতীতে।

বৃহস্পতিবার তফসিল চায় আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি-যুক্তফ্রন্ট

বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। বুধবার (৭ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপের পর এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ৮ নভেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। আমরা মনে করি, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। তারা যেভাবে নির্বাচন করতে চায়, যেদিন নির্বাচন করতে চায়, তারা যেদিন তফসিল ঘোষণা করতে চায়; সরকারের দায়িত্ব তাদের সেভাবে সহায়তা করা। সরকার তাদের সহায়তা করবে।

পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী আগামী ৮ নভেম্বরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল চায় সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন জোট যুক্তফ্রন্ট। জোট থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না— কমিশনের বক্তব্যে তা মনে করছে না জোটটি। কমিশনের দৃঢতা দেখে যুক্তফ্রন্ট মনে করছে, এই কমিশনের প্রতি আস্থা রাখা যায়।

বুধবার (৭ নভেম্বর) সকালে নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠকে জাতীয় পার্টি দাবি করে- পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল যেন ৮ তারিখেই ঘোষণা করা হয়। আজকের পরে যেহেতু কোনো সংলাপ আর হচ্ছে না তাই, তফসিল পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।

সারাবাংলা/এটি

আওয়ামী লীগ একাদশ জাতীয় নির্বাচন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচনের তফসিল বিএনপি যুক্তফ্রন্ট রাজনৈতিক সংলাপ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর