আইসিটিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে চাই বৃত্তি
৮ নভেম্বর ২০১৮ ২৩:১৪
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে (আইসিটি) শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে এই বিষয়ে পড়তে আসা নারীদের শিক্ষাবৃত্তিসহ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। তাদের সামনে এই পেশার সুযোগ সুবিধা তুলে ধরতে হবে। তাদের গণিত, বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার ভীতি কাটাতে হবে।
বৃহস্পতিবার ( ৮ নভেম্বর) আইসিটি মন্ত্রণালয়ে ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ অ্যাক্সেলারেশন’র আয়োজনে বাংলাদেশ ওমেন ইন টেকনোলজি ফোরাম (বিডাব্লিউআইটি) নারীদের আইসিটিতে অংশগ্রহণে বাধা এবং এই সমস্যা সমাধানে সম্ভাব্য করণীয় বিষয়ক সেমিনারে বক্তারে এসব কথা বলে।
‘ব্রেকিং দ্য ব্যারিয়ার’ শিরোনামে এই সেমিনারের মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বিডাব্লিউআইটি’ প্রধান ড. লাফিফা জামাল। তিনি বলেন, আইসিটি সেক্টরে নারীদের কম অংশগ্রহণ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। আমাদের দেশও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে আমাদের দেশে এই সমস্যার উপরে দেখা যায় যে, আইসিটি সেক্টরে পড়াশোনা করার পরেও প্রায় অর্ধেক মেয়ে কর্মক্ষেত্রে ঢোকে না। এ ছাড়াও তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়ও নারীদের অংশগ্রহণ খুবই কম। গবেষণার কাজেও নারীদের পাওয়া যায় না। ফলে আমরা আমাদের দায়িত্ববোধ থেকেই তাদের সমস্যাগুলো অনুসন্ধান ও সমাধানের চেষ্টা করেছি।
আইসিটি এমন একটি সেক্টর যেখানে প্রতিদিন বদল আসে
ড লাফিফা বলেন, আইসিটি এমন একটি সেক্টর যেখানে প্রতিদিন বদল আসে। ফলে এখানে গবেষণার সুযোগ সবচেয়ে বেশি অথচ পুরো দক্ষিণ এশিয়াতেই এই খাতে মাত্র ১৫ শতাংশ নারী কাজ করছেন যার মধ্যে বাংলাদেশী নারীদের সংখ্যা অনেক কম।
বিডাব্লিউআইটির এক গবেষণায় উঠে এসেছে, এই খাতে নারীরা অন্য সকল কাজের মতো পরিবার ও পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে তাল মিলাতে হিমসিম খান। তাদের কাজের পরে নিজের দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ বা যোগাযোগ রক্ষার সুযোগ কম থাকে যা টিকে থাকার জন্য জরুরি।
এ ছাড়াও লম্বা সময় ধরে কাজ করার অসুবিধা, বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে যাওয়ার সমস্যা, বেতন বৈষম্য ও কর্মক্ষেত্রে নারী বান্ধব পরিবেশের অভাবে এই সেক্টরে নারীদের অংশগ্রহণ কম হয়।
চাকুরিদাতা একজন পুরুষ কর্মীই প্রত্যাশা করেন
ড. লাফিফা বলেন, এই সেক্টরটি এত বেশি পুরুষতান্ত্রিক যে এখানে নারীদের প্রবেশ করতেই অনেক সমস্যা হয়। তাছাড়া যদিও জব সার্কুলারে সমান সুযোগের কথা লেখা থাকে তারপরেও চাকুরিদাতা একজন পুরুষ কর্মীই প্রত্যাশা করেন।
নারীদের একজনকে অপরজনের পাশে থাকতে হবে
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন স্টার্ট আপ বাংলাদেশ অ্যাক্সিলারেটরের ডেপুটি প্রোজেক্ট ডিরেক্টর টিনা জাবীন, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সচিব জুয়েনা আজিজসহ অনেকে।
টিনা জাবীন নারীদের আইসিটিতে অংশগ্রহণ বাড়াতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যেহেতু এই খাতটি পুরুষতান্ত্রিক তাই নারীদের একজনকে অপরজনের পাশে থাকতে হবে। তাদের চেষ্টা করতে হবে খুব সামান্য কোনও কাজই খুব যত্ন নিয়ে করার এবং সবার থেকে ভালো কাজ করার।
তিনি আরও বলেন, স্টার্টআপ বাংলাদেশ অ্যাক্সেলারেশন থেকে আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষাক্ষেত্রে নারীদের করা গবেষণাগুলোকে যাচাই করার। এর মধ্যে যেগুলো ভালো হবে সেগুলোতে আমরা অর্থায়ন করার পরিকল্পনা করছি যেন সুযোগের অভাবে আইসিটি থেকে নারীরা হারিয়ে না যায়।
সারাবাংলা/এমএ/ আরএ